বেড়ানো : অপরূপ পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি
রাজীব পাল রনী
প্রকৃতির রং আর মাধুর্যের পরিপূর্ণ স্বাদ নেয়ার জন্য বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটি ঘুরে দেখার। রাত সাড়ে ৮টায় ফকিরাপুল পৌঁছে দেখি, ভ্রমণসঙ্গী সবাই আমার আগে এসে হাজির। আমি পৌঁছামাত্রই নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের বাস রাঙামাটির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়। আমাদের বহু প্রতীক্ষিত ট্যুর। তাই বন্ধুদের সবার মাঝেই প্রাণের উচ্ছ্বাস ছিল প্রচুর। বাসে বসে বন্ধুরা গল্প জুড়ে দিল একে অপরের সঙ্গে। আমাদের বাসটি এগিয়ে চলছে ‘গ্রামছাড়া ঐ রাঙ্গা মাটির পথ আমার মন হারায়রে...’ এ গানটি শুনতে শুনতে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাত্ আমাদের বাস থামল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের জানিয়ে দিল রাঙামাটি যাওয়ার পথে যাত্রাবিরতি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের টাইমস্ স্কয়ার হোটেলে। এ হোটেলে কুমিল্লার বিখ্যাত রসমালাই খেতে ভুল করিনি আমরা। যাত্রাবিরতি বিশ মিনিট শেষে আমাদের বাস আবার ছুটল। খুব ভোরে আমাদের বাস চট্টগ্রাম হয়ে রাঙামাটি শহরে পৌঁছলো। শহরে নেমে হোটেলে জিনিসপত্র রেখে নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়ি সৌন্দর্যের টানে। প্রথমে আমরা ঠিক করলাম, প্রথম দিন শহর ও এর আশপাশের দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখব। যেই কথা সেই কাজ। আমরা প্রথমে বেবিট্যাক্সিতে করে রাঙামাটির উপজাতীয় জাদুঘরে গেলাম। জাদুঘরের দোতলায় দেখতে পেলাম সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জাতির কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর ইতিহাসের অজস্র নিদর্শন। পার্বত্যাঞ্চলের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসের বিরাট স্থান জুড়ে রয়েছে চাকমা, সং এবং বোমাং রাজা-বাদশাহদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। এসব রাজা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত সব রাজকীয় পোশাক, রাজাদের তলোয়ার, কামান, তাদের ব্যবহৃত তৈজসপত্র, রাজকীয় দলিল এবং সে সময়কার স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা সাজিয়ে রাখা হয়েছে জাদুঘরে। দোতলায় দেখতে দেখতে আমরা তিনতলায় যাই। তিনতলায় গিয়ে দেখতে পেলাম জাদুঘর ইনস্টিটিউটের নিজস্ব লাইব্রেরি আর এই লাইব্রেরিতে রয়েছে সহস্রাধিক বই। এ জাদুঘরটি খোলা থাকে সকাল ৯ টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। জাদুঘরে প্রবেশ ফি বড়দের পাঁচ টাকা ও ছোটদের দুই টাকা। তারপর আমরা চলে এলাম রাজবাড়ীতে। আছে চাকমা রাজবিহার, সেটিও দেখলাম। তারপর তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজারসহ রাঙামাটির ব্যস্ততম জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে লাগলাম। তখন খাড়া দুপুর, ক্ষুধা লেগেছে। কী আর করা। রাঙামাটির মূল শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের হলিডে কমপ্লেক্স। তাই আমরা অটোতে করে পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে এসে আমাদের দুপুরের খাবার খেয়ে নিই। দুপুরের খাবার খেয়ে আবার বেরিয়ে পরলাম ঝুলন্ত সেতু দেখার উদ্দেশে। হলিডে কমপ্লেক্সের পাশেই সেতুটির অবস্থান। আমরা বাড়তি ১০ টাকার টিকিট কেটে ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশ করলাম। প্রথমে ঝুলন্ত সেতুতে দাঁড়াতেই চোখ পড়ল আমাদের লেকের অবারিত জলরাশি আর দূরের উঁচু-নিচু পাহাড়ের আকাশ ছোঁয়া বৃক্ষরাজি। ঝুলন্ত সেতুটি ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ, ৮ ফুট প্রশস্ত এবং উভয় পাশে টানা দ্বারা বেষ্টিত। সেতুটির কারণে পর্যটকদের কাছে রাঙামাটির গুরুত্ব ও আর্কষণ অনেকগুণ বেড়ে গেছে। সকাল আর বিকালে অপরূপ দৃশ্য ধারণ করে এই জায়গা। সন্ধ্যা পর্যন্ত উপভোগ করলাম এই সৌন্দর্য। পরের দিন সকালে আমরা রওনা দেব কাপ্তাই লেকে। তাই আমরা সন্ধ্যা হওয়ার আগেই হলিডে কমপ্লেক্সে চলে আসি। হলিডেতে পছন্দের কাউন চালের পায়েস খেয়ে রাতের খাবার সম্পন্ন করি। শরীর ক্লান্ত, কিন্তু ঘুমানোর কোনো সুযোগ নেই! কারণ আড্ডা আর গানে গভীর রাত হয়ে গেল। সকালে জানালা দিয়ে দেখি পূর্বাকাশ ফর্সা করে রাঙ্গা সূর্য উঠেছে। আর সকালে ফুরফুরে বাতাসে পাখি গান করছে খুব সুন্দরভাবে। তাই সবাই প্রশান্ত মেজাজে জানালা দিয়ে চোখ রাখি বাইরে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি নেয়ার কারণ হচ্ছে, দীর্ঘদিন মনের মধ্যে লালন করা সেই কাপ্তাই লেক ঘুরে দেখব আজ। যে যার মতো ফ্রেশ হয়ে নাশতা করে ঠিক ৯টার মধ্য আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আমরা বন্ধুরা মিলে সারা দিনের জন্য ঝুলন্ত সেতুর পাশ থেকে একটি ট্রলার ভাড়া করে কাপ্তাই লেক দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের ট্রলার আঁকাবাঁকা লেকের পথ ধরে যেতে লাগল। লেকের চারদিকেই স্বচ্ছ জলধারা। কাপ্তাই লেক মিশেছে প্রকৃতির সঙ্গে অপরূপ সাজে। সামনে থেকে না দেখলে বোঝা যায় না। দেখলে মনে হয় যেন কোনো এক শিল্পী তার তুলিতে একেঁছেন চোখজুড়ানো এক ছবি। সবুজ পাহাড়ের ভাঁজে কিছুক্ষণ আমাদের ট্রলার যাওয়ার পরই চোখে পড়ল একটি বাজার। বাজারের নাম জানা গেল সুভলং বাজার। সুভলং বাজারে একটি মিনি চিড়িয়াখানা আছে। আমরা সেটিও দেখলাম। এটিতে ছয় থেকে সাত রকমের প্রাণী আছে। সামনের পাহাড়েও আমরা উঠলাম, এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় উচ্চতম পুলিশ ক্যাম্প যা ১৭৬০ ফুট। পাহাড় থেকে পুরো রাঙামাটি দেখা যায়। কিছুক্ষণ দেখে আমরা চলে এলাম। আবার ট্রলার যাত্রা। ট্রলার চলছে, সামনে-পেছনে কেবল পাহাড় আর পাহাড়। আর তার অল্প কিছুক্ষণ পরই একটি ঝরনার পাশে এলাম।
এটি সুভলং ঝরনা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সুভলং ঝরনা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ফুট উঁচুতে। পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বিস্তৃত পাহাড় রাশিতে অসংখ্য ঝরনার মধ্যে অন্যতম সুভলং ঝরনা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝরনার আয়ুকাল তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত থাকে। পুরো শীত মৌসুমে পানি থাকে না বললেই চলে। আমরা শীতের শুরুতে যাওয়ায় আমাদের ভাগ্যের ঝরনা দেবী দেখা দিয়েছে। ঝরনার ঝিরঝির শব্দে পাহাড় বেয়ে চলছে অবিরাম জলধারা। চারদিক সুনসান নীরবতা। এরই মাঝে আমরা পাঁচ বন্ধু ঝরনার ধারে বসে রইলাম কিছুটা সময়। হালকা কুয়াশার কারণে ভালো ফটোগ্রাফ পেলাম না। তাতে কোনো দুঃখ নেই। মনের ফিল্মে ভালো করে তুলে রাখলাম এসব ছবি। সুভলং ঝরনা দেখে আমাদের ট্রলার ছেড়ে দিল। ট্রলার যতই সামনে এগোচ্ছে, পাহাড় ও লেকের সৌন্দর্য যেন ততই বেড়ে চলছে। বন্ধুরা সবাই মিলে গান গাইতে আরম্ভ করলাম ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা ... এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’। এমন অনেক গান আমরা গাইতে গাইতে টুকটুক ইকো ভিলেজে কখন পৌঁছে গেছি খেয়াল করিনি। সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা এ পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণপ্রিয়দের কাছে দারুণ উপভোগ্য। চারদিকে কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানি রাশির মধ্যে হঠাত্ই জেগে ওঠা সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে ওঠা এই ভ্রমণ স্পট। এই ভ্রমণ স্পটে খানিক বসলে নিমিষেই হিমেল হাওয়ার ঝাঁপটা নিয়ে যাবে স্বর্গীয় অনুভূতির সন্ধানে। কাঠ এবং বাঁশের কারুকাজে তৈরি এই রেস্তোরাঁয় মেলে দেশীয় ও পাহাড়ি আদিবাসীদের মজাদার সব খাবারের আইটেম। লেকের পাড়ে যারা সারাদিনের জন্য বের হন তারা ইকো ভিলেজে খাবারটা সারেন এখানেই। তাই আমরাও খাবার সেরে নিলাম এখানেই। তারপর ইকো ভিলেজ আর পেদা টিংটিং ঘুরে পড়ন্ত বিকালে দুই পাশে অবাক করা বিচিত্র লেক আর পাহাড় দেখতে দেখতে আমরা চলে আসি। এক সময় সন্ধ্যা নামল। হোটেলে এসে গুছিয়ে নিই। হালকা ফ্রেশ হয়ে বন্ধুরা মিলে বেরিয়ে পড়লাম কিছু কেনাকাটা করার জন্য। দেশীয় ও উপজাতীয় কিছু পোশাক কেনাকাটা করে আবার হোটেলে ফিরলাম খুব তাড়াতাড়ি। আমাদের বাস রাত ৮টায়। তাই রাতের খাবার খেয়ে আমরা বাসে উঠলাম। নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের বাস ছাড়ল। বাসে বসে ভাবছি, সত্যিই রাঙামাটিকে সৌন্দর্যের লীলাভূমি বললে ভুল হবে না। রাঙামাটির অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। জীবনের সুখস্মৃতিগুলোর মাঝে চির ভাস্বর হয়ে থাকবে জীবনভর রাঙামাটি। তাই আর দেরি কেন, পাঠক আপনিও ঘুরে আসতে পারেন রাঙামাটিতে।
কীভাবে যাবেন : ঢাকার কমলাপুর, ফকিরাপুল, কলাবাগান, সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সরাসরি রাঙামাটির উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ডলফিন পরিবহন, ইউনিক সার্ভিস, এস আলম সার্ভিস, সৌদিয়া ও শ্যামলী পরিবহন ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি নন-এসি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, এসি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়া অনান্য বাস, ট্রেন কিংবা বিমানে চট্টগ্রামে এসে এখান থেকেও রাঙামাটি আসতে পারেন। চট্টগ্রাম শহরে সিনেমা প্যালেস এবং বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতি বিশ মিনিট পরপর রাঙামাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায় বিরতিহীন বাস।
কোথায় থাকবেন : রাঙামাটিতে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো হোটেল হলো কাঁঠালতলীতে হোটেল সুফিয়া, ফোন : ০৩৫১-৬২১৪৫, ০৩৫১-৬১১৭৪, ০৩৫১-৬১৪৬৯। রিজার্ভ বাজারে হোটেল গ্রীন ০৩৫১-৬২১৪৫। পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, ডিয়ার পার্ক, রাঙামাটি, ফোন : ০৩৫১-৬১০৪৬, ০১৫৫৬৬৩০৪৯৫, ০১৭২৭৩২৮৮১০। এছাড়াও রাঙামাটিতে আরও কিছু হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে হোটেল লেক ভিউ, শাপলা ইত্যাদি হোটেল ও মোটেলে আপনি রাতযাপন করতে পারেন।
এটি সুভলং ঝরনা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সুভলং ঝরনা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ফুট উঁচুতে। পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বিস্তৃত পাহাড় রাশিতে অসংখ্য ঝরনার মধ্যে অন্যতম সুভলং ঝরনা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝরনার আয়ুকাল তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত থাকে। পুরো শীত মৌসুমে পানি থাকে না বললেই চলে। আমরা শীতের শুরুতে যাওয়ায় আমাদের ভাগ্যের ঝরনা দেবী দেখা দিয়েছে। ঝরনার ঝিরঝির শব্দে পাহাড় বেয়ে চলছে অবিরাম জলধারা। চারদিক সুনসান নীরবতা। এরই মাঝে আমরা পাঁচ বন্ধু ঝরনার ধারে বসে রইলাম কিছুটা সময়। হালকা কুয়াশার কারণে ভালো ফটোগ্রাফ পেলাম না। তাতে কোনো দুঃখ নেই। মনের ফিল্মে ভালো করে তুলে রাখলাম এসব ছবি। সুভলং ঝরনা দেখে আমাদের ট্রলার ছেড়ে দিল। ট্রলার যতই সামনে এগোচ্ছে, পাহাড় ও লেকের সৌন্দর্য যেন ততই বেড়ে চলছে। বন্ধুরা সবাই মিলে গান গাইতে আরম্ভ করলাম ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা ... এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’। এমন অনেক গান আমরা গাইতে গাইতে টুকটুক ইকো ভিলেজে কখন পৌঁছে গেছি খেয়াল করিনি। সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা এ পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণপ্রিয়দের কাছে দারুণ উপভোগ্য। চারদিকে কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানি রাশির মধ্যে হঠাত্ই জেগে ওঠা সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে ওঠা এই ভ্রমণ স্পট। এই ভ্রমণ স্পটে খানিক বসলে নিমিষেই হিমেল হাওয়ার ঝাঁপটা নিয়ে যাবে স্বর্গীয় অনুভূতির সন্ধানে। কাঠ এবং বাঁশের কারুকাজে তৈরি এই রেস্তোরাঁয় মেলে দেশীয় ও পাহাড়ি আদিবাসীদের মজাদার সব খাবারের আইটেম। লেকের পাড়ে যারা সারাদিনের জন্য বের হন তারা ইকো ভিলেজে খাবারটা সারেন এখানেই। তাই আমরাও খাবার সেরে নিলাম এখানেই। তারপর ইকো ভিলেজ আর পেদা টিংটিং ঘুরে পড়ন্ত বিকালে দুই পাশে অবাক করা বিচিত্র লেক আর পাহাড় দেখতে দেখতে আমরা চলে আসি। এক সময় সন্ধ্যা নামল। হোটেলে এসে গুছিয়ে নিই। হালকা ফ্রেশ হয়ে বন্ধুরা মিলে বেরিয়ে পড়লাম কিছু কেনাকাটা করার জন্য। দেশীয় ও উপজাতীয় কিছু পোশাক কেনাকাটা করে আবার হোটেলে ফিরলাম খুব তাড়াতাড়ি। আমাদের বাস রাত ৮টায়। তাই রাতের খাবার খেয়ে আমরা বাসে উঠলাম। নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের বাস ছাড়ল। বাসে বসে ভাবছি, সত্যিই রাঙামাটিকে সৌন্দর্যের লীলাভূমি বললে ভুল হবে না। রাঙামাটির অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। জীবনের সুখস্মৃতিগুলোর মাঝে চির ভাস্বর হয়ে থাকবে জীবনভর রাঙামাটি। তাই আর দেরি কেন, পাঠক আপনিও ঘুরে আসতে পারেন রাঙামাটিতে।
কীভাবে যাবেন : ঢাকার কমলাপুর, ফকিরাপুল, কলাবাগান, সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সরাসরি রাঙামাটির উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ডলফিন পরিবহন, ইউনিক সার্ভিস, এস আলম সার্ভিস, সৌদিয়া ও শ্যামলী পরিবহন ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি নন-এসি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, এসি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়া অনান্য বাস, ট্রেন কিংবা বিমানে চট্টগ্রামে এসে এখান থেকেও রাঙামাটি আসতে পারেন। চট্টগ্রাম শহরে সিনেমা প্যালেস এবং বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতি বিশ মিনিট পরপর রাঙামাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায় বিরতিহীন বাস।
কোথায় থাকবেন : রাঙামাটিতে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো হোটেল হলো কাঁঠালতলীতে হোটেল সুফিয়া, ফোন : ০৩৫১-৬২১৪৫, ০৩৫১-৬১১৭৪, ০৩৫১-৬১৪৬৯। রিজার্ভ বাজারে হোটেল গ্রীন ০৩৫১-৬২১৪৫। পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, ডিয়ার পার্ক, রাঙামাটি, ফোন : ০৩৫১-৬১০৪৬, ০১৫৫৬৬৩০৪৯৫, ০১৭২৭৩২৮৮১০। এছাড়াও রাঙামাটিতে আরও কিছু হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে হোটেল লেক ভিউ, শাপলা ইত্যাদি হোটেল ও মোটেলে আপনি রাতযাপন করতে পারেন।
No comments:
Post a Comment