আজ বান্দরবানে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী রাজপুণ্যাহ
০০ মিলন চক্রবর্তী, বান্দরবান সংবাদদাতা, জানুয়ারি ২০, ২০১১,
আজ ২০ জানুয়ারি থেকে ৭দিনব্যাপী বান্দরবান বোমাং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ উৎসব শুরু হচ্ছে। বৃটিশ শাসনামল থেকেই প্রজাদের কাছ থেকে বছরে একবার খাজনা আদায় এবং প্রজাদের সঙ্গে রাজার সম্মিলনের আন্তরিক ইচ্ছে নিয়েই বোমাং রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ন রাখার প্রয়াসে রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন। রাজকর প্রদান, রাজদর্শন লাভের বর্ণাঢ্য অনন্য মহাআনন্দ উৎসব বোমাং রাজপুণ্যাহ। বোমাং সার্কেলে বসবাসরত ১১ ভাষাভাষী আদিবাসীসহ বাঙালীদের কাছেও কিংবদন্তীর এই রাজপুণ্যাহ সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
রাজপুণ্যাহকে কেন্দ্র করে বান্দরবানে যে সাড়া পড়ে তা এক কথায় অবর্ণনীয়। এই সাড়া প্রাণ উৎসারিত। এর আবেদন কোন বিনোদনের ইঙ্গিতবহ নয়। এটি শাশ্বত সুন্দর এবং চিরন্তন সংস্কৃতির অঙ্গ। এটুকু গর্ব করার আছে যে, আমাদের গর্বের সম্পদ উপজাতীয় সংস্কৃতি রয়ে গেছে নির্ভেজাল এবং নির্মল। রাজপুণ্যাহকে কেন্দ্র করে তা উৎসারিত হয়। নিবেদিত হয়। এটি এক অপার পাওয়া। রাজপুণ্যাহ পার্বত্য মানুষের প্রাণের অনুষ্ঠান। এটি বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়সহ সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এবারের রাজপুণ্যাহ ১৩৫ তম। বোমাং সার্কেলের ৯৬ বছর বয়স্ক ১৫তম রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী রাজপুণ্যাহ উৎসবের মধ্যমণি। ১৩৪ বছরের পুরনো রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানকে ঘিরে বান্দরবান শহর হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্য ও উৎসবের নগরী হিসেবে।
রাজা আছেন, রানী আছে। আছে রাজ সিংহাসন। তবে নেই রাজ্য, নেই রাজদণ্ড। তবুও তিনি রাজা। রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী। বয়স ৯৬। নাই থাকল রাজ্যপট, নাই থাকল রাজদণ্ড। আগের সেই ক্ষমতা নেই, জৌলুসও নেই। বান্দরবানের আদিবাসীদের কাছে তিনিই রাজা। তারা পরম শ্রদ্ধায়, ভালবাসায় মান্য করেন তাকে। প্রতিবছর বোমাং রাজপুণ্যাহে তারা রাজার হাতে তুলে দেন রাজস্ব আর উপঢৌকন। খাজনা আদায় এবং প্রজাদের সঙ্গে মিলনের আন্তরিক ইচ্ছে নিয়েই রাজারা বংশ পরম্পরায় সুদীর্ঘকাল ধরে রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন। ১৮৯৭ সালে নবম বোমাং রাজা সাকনাইঞোর আমল থেকে রাজপুণ্যাহ চলে আসছে। রাজসিক হাঁক-ডাক এখন আর না থাকলেও রয়েছে ঐতিহ্য আর নিজস্ব সংস্কৃতি। বোমাং রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, বয়সে বৃদ্ধ হলেও আমি মানসিকভাবে এখনো তরুণ। ১৭২৭ সালে আমাদের পূর্বপুরুষ রাজা কংহ্লাপ্রু প্রথম বান্দরবানে আসেন। বোমাং রাজার সার্কেল হচ্ছে দুই হাজার বর্গমাইল। রাজার মাধ্যমে ১০৯ জন হেডম্যান ও হাজারখানেক পাড়া কারবারী রয়েছেন। রাজার ৫ ছেলে, ২ মেয়ে আর নাতী-নাতনী আছে ২৪ জন। রাজা বলেন, বাংলাদেশের অপরাপর জেলার তুলনায় বান্দরবান সর্বাধিক শান্তিপূর্ণ এলাকা। এখানে সকল সম্প্রদায়ের জনগণ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহাবস্থান করছেন। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের জনগণের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে পার্বত্য জেলা বান্দরবান শহর। রাজপুণ্যাহ উৎসবে বোমাং সার্কেলের ১১ ভাষাভাষী আদিবাসী সম্প্রদায়ের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। সার্কাস, যাত্রা, পুতুল নাচ, নাগরদোলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উপজাতীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে এ মহামিলন মেলায় । মারমা ভাষায় রাজপুণ্যাহকে বলে'পইংজ্রা'।
রাজবাড়ি মাঠে এ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মেলা বসে। বৃটিশ শাসনামল থেকেই বছরে একবার প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় এবং প্রজাদের সঙ্গে রাজার সম্মিলনের আন্তরিক ইচ্ছে নিয়েই সুদীর্ঘকালের রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন।
Source: Daily Ittefaq
রাজপুণ্যাহকে কেন্দ্র করে বান্দরবানে যে সাড়া পড়ে তা এক কথায় অবর্ণনীয়। এই সাড়া প্রাণ উৎসারিত। এর আবেদন কোন বিনোদনের ইঙ্গিতবহ নয়। এটি শাশ্বত সুন্দর এবং চিরন্তন সংস্কৃতির অঙ্গ। এটুকু গর্ব করার আছে যে, আমাদের গর্বের সম্পদ উপজাতীয় সংস্কৃতি রয়ে গেছে নির্ভেজাল এবং নির্মল। রাজপুণ্যাহকে কেন্দ্র করে তা উৎসারিত হয়। নিবেদিত হয়। এটি এক অপার পাওয়া। রাজপুণ্যাহ পার্বত্য মানুষের প্রাণের অনুষ্ঠান। এটি বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়সহ সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের পরিচায়ক। এবারের রাজপুণ্যাহ ১৩৫ তম। বোমাং সার্কেলের ৯৬ বছর বয়স্ক ১৫তম রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী রাজপুণ্যাহ উৎসবের মধ্যমণি। ১৩৪ বছরের পুরনো রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানকে ঘিরে বান্দরবান শহর হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্য ও উৎসবের নগরী হিসেবে।
রাজা আছেন, রানী আছে। আছে রাজ সিংহাসন। তবে নেই রাজ্য, নেই রাজদণ্ড। তবুও তিনি রাজা। রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী। বয়স ৯৬। নাই থাকল রাজ্যপট, নাই থাকল রাজদণ্ড। আগের সেই ক্ষমতা নেই, জৌলুসও নেই। বান্দরবানের আদিবাসীদের কাছে তিনিই রাজা। তারা পরম শ্রদ্ধায়, ভালবাসায় মান্য করেন তাকে। প্রতিবছর বোমাং রাজপুণ্যাহে তারা রাজার হাতে তুলে দেন রাজস্ব আর উপঢৌকন। খাজনা আদায় এবং প্রজাদের সঙ্গে মিলনের আন্তরিক ইচ্ছে নিয়েই রাজারা বংশ পরম্পরায় সুদীর্ঘকাল ধরে রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন। ১৮৯৭ সালে নবম বোমাং রাজা সাকনাইঞোর আমল থেকে রাজপুণ্যাহ চলে আসছে। রাজসিক হাঁক-ডাক এখন আর না থাকলেও রয়েছে ঐতিহ্য আর নিজস্ব সংস্কৃতি। বোমাং রাজা অংশৈপ্রু চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, বয়সে বৃদ্ধ হলেও আমি মানসিকভাবে এখনো তরুণ। ১৭২৭ সালে আমাদের পূর্বপুরুষ রাজা কংহ্লাপ্রু প্রথম বান্দরবানে আসেন। বোমাং রাজার সার্কেল হচ্ছে দুই হাজার বর্গমাইল। রাজার মাধ্যমে ১০৯ জন হেডম্যান ও হাজারখানেক পাড়া কারবারী রয়েছেন। রাজার ৫ ছেলে, ২ মেয়ে আর নাতী-নাতনী আছে ২৪ জন। রাজা বলেন, বাংলাদেশের অপরাপর জেলার তুলনায় বান্দরবান সর্বাধিক শান্তিপূর্ণ এলাকা। এখানে সকল সম্প্রদায়ের জনগণ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহাবস্থান করছেন। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের জনগণের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে পার্বত্য জেলা বান্দরবান শহর। রাজপুণ্যাহ উৎসবে বোমাং সার্কেলের ১১ ভাষাভাষী আদিবাসী সম্প্রদায়ের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। সার্কাস, যাত্রা, পুতুল নাচ, নাগরদোলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উপজাতীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে এ মহামিলন মেলায় । মারমা ভাষায় রাজপুণ্যাহকে বলে'পইংজ্রা'।
রাজবাড়ি মাঠে এ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মেলা বসে। বৃটিশ শাসনামল থেকেই বছরে একবার প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় এবং প্রজাদের সঙ্গে রাজার সম্মিলনের আন্তরিক ইচ্ছে নিয়েই সুদীর্ঘকালের রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছেন।
Source: Daily Ittefaq
No comments:
Post a Comment