টুকটুক ইকো ভিলেজ
রফিকুল আমীন খান
পাহাড় আর লেকে ঘেরা রাঙামাটির প্রতিটি খাঁজে খাঁজে লুকিয়ে আছে বিস্ময় আর আনন্দ। সৌন্দর্যপিপাসুরা এ বিস্ময় আর আনন্দের টানে বারবার ছুটে চলেন রূপের রানী খ্যাত রাঙামাটি জেলায়। ভ্রমণপ্রিয়দের আনন্দ দিতে কী নেই এখানে। জেলাজুড়ে রয়েছে ভ্রমণের অসংখ্য স্পট। সব রূপলাবণ্যে ভরপুর। রূপের রাণী সেজে বসে আছে ভ্রমণপ্রিয়দের মনে আনন্দ দিতে। কিন্তু দু-এক দিনের ছুটিতে সবার সৌন্দর্য দর্শন দুরূহ ব্যাপার। তাই এক একবারের ছুটিতে রাঙামাটির এক একটি স্পট বা এলাকা দর্শনের চিন্তা করাই শ্রেয়।
রাঙামাটিতে এবার নিয়ে সপ্তমবারের মতো ভ্রমণ। তা সত্ত্বেও আমিসহ সহযাত্রীদের আনন্দ ও উত্সাহের শেষ নেই। নতুনদের মাঝে তা আরও উত্সাহ। সবার চোখে শুধু রাজ্যের বিস্ময়। হাজার হাজার টাকা খরচ করে অনেকেই নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশ গেছেন পাহাড়-টিলা-হ্রদের সৌন্দর্যের খোঁজে। কিন্তু নিজ দেশে এত কাছে সেই আকাশসম পাহাড়, সবুজে মোড়া টিলা-উপটিলা, দিগন্ত বিস্মৃত কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানিধারা আছে, তা ক’জনের জানা ছিল? ভাবতে অবাক লাগে, মনের অজান্তে কণ্ঠে ভেসে ওঠে ‘ধন-ধন্যে পুষ্পে ভরা ... ... এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।’ এরকম হাজারো মন ভোলানো গান শিল্পীর কণ্ঠে এমনিতে যে ভেসে ওঠেনি, তা সহজেই বোঝা যায় কেবল রাঙামাটিতে গেলে।
রাঙামাটিতে আমাদের এবারের ভ্রমণ আয়োজন ছিল বেসরকারি ভ্রমণ আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান নোঙর ট্যুরিজমের উদ্যোগে। বিচিত্র আর বৈচিত্র্যে ভরা এখানকার নানা উপজাতির সমাজ-সংস্কৃতি কাছ থেকে দেখা ছাড়াও কাপ্তাই লেকে নৌভ্রমণ ছিল ভ্রমণ পরিকল্পনায়। পরিকল্পনা অনুসারে কোনোটিই বাদ রইল না। সব স্মৃতিই মনের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। সে সবের মাঝে টুক টুক ইকো ভিলেজ দর্শনের স্মৃতিই মনের জানালায় ভেসে ওঠে বারবার। সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা এ পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণপ্রিয়দের কাছে দারুণ উপভোগ্য। রাঙামাটি এলে এটি না দেখে চলে যেতে মন চাইবে না।
জেলা সদরের বালুখালী ইউনিয়নের কিল্ল্যামুড়া এলাকায় অবস্থিত এই পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রটি। চারদিকে কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানি রাশির মাঝে হঠাত্ই জেগে ওঠা সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে তোলা এই ভ্রমণ স্পটে খানিক বসতেই নিমিশেই হিমেল হাওয়ার ঝাপটা নিয়ে যাবে কোনো এক স্বর্গীয় অনুভূতির সন্ধানে। কাপ্তাই লেকে দীর্ঘ নৌভ্রমণে যখন ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থা, তখন টুক টুক ইকো ভিলেজের রেস্তোরাঁর রকমারি খাবারের স্বাদ গ্রহণ জিবে এনে দেয় নতুন তৃপ্তি। কাঠ এবং বাঁশের কারুকাজে তৈরি এ রেস্তোরাঁয় মিলে দেশীয় ও পাহাড়ি আদিবাসীদের মজাদার সব খাবারের আইটেম। লেকের পথে সারা দিনের জন্য যারা নৌভ্রমণে বের হন দুপুরের খাবারটা তারা এখানেই সেরে নিতে বেশি পছন্দ করেন। চারদিকে কাপ্তাই হ্রদের সারি সারি পানিরাশি আর পাহাড়ি বন-বনানীর এমন নির্জন পরিবেশে আয়েশি মেজাজে পেটপুরে খেতে গিয়ে টাকার অংকটা একটু বেশি গুনতে হলেও এর মাঝেও আছে অন্য রকম আনন্দ।
পুরো ইকো ভিলেজটি ৫০ একর পাহাড়ি জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। বহু টিলা-উপটিলা বিভক্ত এ পর্যটন কেন্দ্রে থেকে থেকে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি কাঠের কটেজ। অ্যাটাশ বাথ, ব্যালকনি-সমেত এ কটেজগুলোয় থাকার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। এগুলোয় রাত যাপনের আনন্দস্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে জীবনভর। জানালার ফাঁকগলিয়ে দূরে পাহাড়ের ঢালে কাপ্তাইয়ের পানিতে পূর্ণিমার চাঁদের খেলা করার দৃশ্য অসাধারণ। রাতে পাহাড়ি বন-বনানীর মাঝ থেকে ভেসে আসা ঝিঁঝি পোকার একটানা ডাক সঙ্গে নাম জানা-অজানা নিশাচর পশু-পাখির বিচিত্র শব্দে কেবলই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেতে চায় মন। পর্যটকদের অবস্থান নির্বিঘ্ন করতে আছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রাকৃতিক পরিবেশে আড্ডা দেয়ার জন্য ইকো ভিলেজে তৈরি করা হয়েছে ১৫টি গোলঘর। শিশুদের আনন্দ দিতে প্রশস্ত খেলার মাঠ, কাঠের ব্রিজ সবই আছে এখানে। চারদিকে পাহাড়ি গাছ-গাছালি ছাড়াও ইকো ভিলেজের চড়াই-উত্রাইয়ে থেকে থেকে লাগানো হয়েছে নানান রকমের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ। লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, আফ্রিকান গাদায় ভরপুর পার্কটিতে পা ফেললেই বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা কোমল গন্ধে মন জুড়িয়ে যায়। এগুলোর নির্মল ছায়ায় মাঝেমধ্যেই পিকনিক পার্টির লোকদের ভিড় জমাতে দেখা যায়। ভ্রমণ এবং পিকনিক পার্টির আয়োজনের বাইরে অনেককে গবেষণার কাজেও যেতে দেখা যায় এখানে। বিশেষ করে যারা প্রকৃতিপ্রেমী, প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্য পছন্দ করেন, তাদের জন্য নির্ঝঞ্ঝাট ও ঝামেলামুক্ত পরিবেশে কয়েকটি মুহূর্ত কাটানোর এমন সুযোগ আর দু-একটি মেলানো দায়।
পর্যটন এবং বিনোদন কেন্দ্রের বাইরে ইকো ভিলেজ কেন্দ্রটি আজ প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায়ও দারুণ ভূমিকা রেখে চলেছে। যদিও পুরোপুরি প্রতিষ্ঠার কাজ এখনও খানিকটা বাকি আছে, তা সত্ত্বেও আশা করা যায় প্রতিষ্ঠার কাজ সম্পন্ন হলে এটি হবে দেশের ইকোপার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। কারণ, একমাত্র এই ইকোপার্কেই রচিত হয়েছে প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত পাহাড়, হ্রদ, ঝরনাধারা আর কোমল পরিবেশের মিলন বন্ধন। প্রকৃতির সৌন্দর্য যে কত বিচিত্র্য হতে পারে, তা এখানের দৃশ্য দেখে বোঝা যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে একটু নান্দনিকতার ছোঁয়ায় যে ইকো পার্ক গড়ে উঠেছে রাঙামাটির এই স্বচ্ছ পানির মাঝে, তা পর্যটক মনে রাঙামাটির প্রতি ভ্রমণের আকর্ষণ ক্রমেই বাড়াবে—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাঙামাটি শহর থেকে টুক টুক ইকো ভিলেজে যাওয়ার জন্য শহরের রিজার্ভ বাজারের শহীদ মিনার এলাকা থেকে রয়েছে নিজস্ব বোটের ব্যবস্থা। জনপ্রতি ভাড়া ২০ টাকা। তবে আমাদের ২০ জনের এই ক্ষুদ্র দলটি বহনের জন্য আলাদা রিজার্ভ ট্রলার ভাড়া করেছিল নোঙর ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষ। সারা দিন লেকের পথে টুক টুক ইকো ভিলেজসহ রাঙামাটির অনন্য দর্শনীয় পর্যটন স্পট দেখা শেষে সন্ধ্যায় যখন রিজার্ভ বাজারের ট্রলারঘাটে আমাদের নামিয়ে দিল ততক্ষণে স্মৃতিতে জমা পড়েছে রাঙামাটি ভ্রমণের আরও কিছু নতুন অভিজ্ঞতা। এ অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। জীবনের সুখ স্মৃতিগুলোর মাঝে যেগুলো চির ভাস্বর হয়ে থাকে জীবনভর।
শীত এলে টুক টুক ইকো ভিলেজসহ রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রেগুলোয় পর্যটকদের ঢল নামে । এ সময় রাঙামাটি ভ্রমণের মজাই আলাদা। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৯২২১১২৬৭৬ নম্বরে।
Source: Daily Amardesh, 31-01-2011
১)
টুকটুক ইকো ভিলেজ-এ যাওয়ার সময়
২)
টুকটুক ইকো ভিলেজ-এর প্রবেশ পথ
৩)
টুকটুক রেষ্টুরেন্ট
৪)
সাদা ভাত এবং চিকেন ইন বেম্বু। স্থানীয় ভাষায় এই খাবারের নাম “কুমোতকুড়া”
৫)
সবুজের মাঝে টুকটুক রিসোর্ট
৬)
একটি নির্মানাধীন রিসোর্টের উপড় আমরা
৭)
টুকটুক ইকো ভিলেজের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি ছোট খাল
৮)
কাশফুল
৯)
পাহাড়ের উপড় থেকে তোলা
১০)
গহীন নীলিমা
১১)
নাম না জানা কোন ফুল
১২)
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, যাবার সময় হলো…
লেখক : আদনান আল বিরুনী
Prothom-alo Blog
রাঙামাটিতে এবার নিয়ে সপ্তমবারের মতো ভ্রমণ। তা সত্ত্বেও আমিসহ সহযাত্রীদের আনন্দ ও উত্সাহের শেষ নেই। নতুনদের মাঝে তা আরও উত্সাহ। সবার চোখে শুধু রাজ্যের বিস্ময়। হাজার হাজার টাকা খরচ করে অনেকেই নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশ গেছেন পাহাড়-টিলা-হ্রদের সৌন্দর্যের খোঁজে। কিন্তু নিজ দেশে এত কাছে সেই আকাশসম পাহাড়, সবুজে মোড়া টিলা-উপটিলা, দিগন্ত বিস্মৃত কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানিধারা আছে, তা ক’জনের জানা ছিল? ভাবতে অবাক লাগে, মনের অজান্তে কণ্ঠে ভেসে ওঠে ‘ধন-ধন্যে পুষ্পে ভরা ... ... এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।’ এরকম হাজারো মন ভোলানো গান শিল্পীর কণ্ঠে এমনিতে যে ভেসে ওঠেনি, তা সহজেই বোঝা যায় কেবল রাঙামাটিতে গেলে।
রাঙামাটিতে আমাদের এবারের ভ্রমণ আয়োজন ছিল বেসরকারি ভ্রমণ আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান নোঙর ট্যুরিজমের উদ্যোগে। বিচিত্র আর বৈচিত্র্যে ভরা এখানকার নানা উপজাতির সমাজ-সংস্কৃতি কাছ থেকে দেখা ছাড়াও কাপ্তাই লেকে নৌভ্রমণ ছিল ভ্রমণ পরিকল্পনায়। পরিকল্পনা অনুসারে কোনোটিই বাদ রইল না। সব স্মৃতিই মনের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। সে সবের মাঝে টুক টুক ইকো ভিলেজ দর্শনের স্মৃতিই মনের জানালায় ভেসে ওঠে বারবার। সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা এ পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণপ্রিয়দের কাছে দারুণ উপভোগ্য। রাঙামাটি এলে এটি না দেখে চলে যেতে মন চাইবে না।
জেলা সদরের বালুখালী ইউনিয়নের কিল্ল্যামুড়া এলাকায় অবস্থিত এই পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রটি। চারদিকে কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ পানি রাশির মাঝে হঠাত্ই জেগে ওঠা সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে তোলা এই ভ্রমণ স্পটে খানিক বসতেই নিমিশেই হিমেল হাওয়ার ঝাপটা নিয়ে যাবে কোনো এক স্বর্গীয় অনুভূতির সন্ধানে। কাপ্তাই লেকে দীর্ঘ নৌভ্রমণে যখন ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থা, তখন টুক টুক ইকো ভিলেজের রেস্তোরাঁর রকমারি খাবারের স্বাদ গ্রহণ জিবে এনে দেয় নতুন তৃপ্তি। কাঠ এবং বাঁশের কারুকাজে তৈরি এ রেস্তোরাঁয় মিলে দেশীয় ও পাহাড়ি আদিবাসীদের মজাদার সব খাবারের আইটেম। লেকের পথে সারা দিনের জন্য যারা নৌভ্রমণে বের হন দুপুরের খাবারটা তারা এখানেই সেরে নিতে বেশি পছন্দ করেন। চারদিকে কাপ্তাই হ্রদের সারি সারি পানিরাশি আর পাহাড়ি বন-বনানীর এমন নির্জন পরিবেশে আয়েশি মেজাজে পেটপুরে খেতে গিয়ে টাকার অংকটা একটু বেশি গুনতে হলেও এর মাঝেও আছে অন্য রকম আনন্দ।
পুরো ইকো ভিলেজটি ৫০ একর পাহাড়ি জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। বহু টিলা-উপটিলা বিভক্ত এ পর্যটন কেন্দ্রে থেকে থেকে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি কাঠের কটেজ। অ্যাটাশ বাথ, ব্যালকনি-সমেত এ কটেজগুলোয় থাকার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। এগুলোয় রাত যাপনের আনন্দস্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে জীবনভর। জানালার ফাঁকগলিয়ে দূরে পাহাড়ের ঢালে কাপ্তাইয়ের পানিতে পূর্ণিমার চাঁদের খেলা করার দৃশ্য অসাধারণ। রাতে পাহাড়ি বন-বনানীর মাঝ থেকে ভেসে আসা ঝিঁঝি পোকার একটানা ডাক সঙ্গে নাম জানা-অজানা নিশাচর পশু-পাখির বিচিত্র শব্দে কেবলই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেতে চায় মন। পর্যটকদের অবস্থান নির্বিঘ্ন করতে আছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রাকৃতিক পরিবেশে আড্ডা দেয়ার জন্য ইকো ভিলেজে তৈরি করা হয়েছে ১৫টি গোলঘর। শিশুদের আনন্দ দিতে প্রশস্ত খেলার মাঠ, কাঠের ব্রিজ সবই আছে এখানে। চারদিকে পাহাড়ি গাছ-গাছালি ছাড়াও ইকো ভিলেজের চড়াই-উত্রাইয়ে থেকে থেকে লাগানো হয়েছে নানান রকমের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ। লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, আফ্রিকান গাদায় ভরপুর পার্কটিতে পা ফেললেই বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা কোমল গন্ধে মন জুড়িয়ে যায়। এগুলোর নির্মল ছায়ায় মাঝেমধ্যেই পিকনিক পার্টির লোকদের ভিড় জমাতে দেখা যায়। ভ্রমণ এবং পিকনিক পার্টির আয়োজনের বাইরে অনেককে গবেষণার কাজেও যেতে দেখা যায় এখানে। বিশেষ করে যারা প্রকৃতিপ্রেমী, প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্য পছন্দ করেন, তাদের জন্য নির্ঝঞ্ঝাট ও ঝামেলামুক্ত পরিবেশে কয়েকটি মুহূর্ত কাটানোর এমন সুযোগ আর দু-একটি মেলানো দায়।
পর্যটন এবং বিনোদন কেন্দ্রের বাইরে ইকো ভিলেজ কেন্দ্রটি আজ প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায়ও দারুণ ভূমিকা রেখে চলেছে। যদিও পুরোপুরি প্রতিষ্ঠার কাজ এখনও খানিকটা বাকি আছে, তা সত্ত্বেও আশা করা যায় প্রতিষ্ঠার কাজ সম্পন্ন হলে এটি হবে দেশের ইকোপার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। কারণ, একমাত্র এই ইকোপার্কেই রচিত হয়েছে প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত পাহাড়, হ্রদ, ঝরনাধারা আর কোমল পরিবেশের মিলন বন্ধন। প্রকৃতির সৌন্দর্য যে কত বিচিত্র্য হতে পারে, তা এখানের দৃশ্য দেখে বোঝা যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে একটু নান্দনিকতার ছোঁয়ায় যে ইকো পার্ক গড়ে উঠেছে রাঙামাটির এই স্বচ্ছ পানির মাঝে, তা পর্যটক মনে রাঙামাটির প্রতি ভ্রমণের আকর্ষণ ক্রমেই বাড়াবে—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাঙামাটি শহর থেকে টুক টুক ইকো ভিলেজে যাওয়ার জন্য শহরের রিজার্ভ বাজারের শহীদ মিনার এলাকা থেকে রয়েছে নিজস্ব বোটের ব্যবস্থা। জনপ্রতি ভাড়া ২০ টাকা। তবে আমাদের ২০ জনের এই ক্ষুদ্র দলটি বহনের জন্য আলাদা রিজার্ভ ট্রলার ভাড়া করেছিল নোঙর ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষ। সারা দিন লেকের পথে টুক টুক ইকো ভিলেজসহ রাঙামাটির অনন্য দর্শনীয় পর্যটন স্পট দেখা শেষে সন্ধ্যায় যখন রিজার্ভ বাজারের ট্রলারঘাটে আমাদের নামিয়ে দিল ততক্ষণে স্মৃতিতে জমা পড়েছে রাঙামাটি ভ্রমণের আরও কিছু নতুন অভিজ্ঞতা। এ অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। জীবনের সুখ স্মৃতিগুলোর মাঝে যেগুলো চির ভাস্বর হয়ে থাকে জীবনভর।
শীত এলে টুক টুক ইকো ভিলেজসহ রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রেগুলোয় পর্যটকদের ঢল নামে । এ সময় রাঙামাটি ভ্রমণের মজাই আলাদা। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৯২২১১২৬৭৬ নম্বরে।
Source: Daily Amardesh, 31-01-2011
রাঙামাটির ছবি ব্লগ [পর্ব-৫]
আজকের পর্বে থাকছে টুকটুক ইকো ভিলেজ-এ যাওয়ার সময় এবং অবস্থান করা কালীন কয়েকটি ছবি। রাঙামাটিতে গেলে কখনই ১ দিনে পুরোটা ঘুরে শেষ করতে পারবে না কেউ। ১ রাত থাকতেই হবে আপনাকে। রাত কাটানোর কাজটা আপনারা সেরে নিতে পারেন এই টুকটুক ইকো ভিলেজ এই। এখানে কয়েকটি রিসোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। সবগুলো রিসোর্টই পাহাড়ের কিনারায় কাঠের ভিত্তির উপড় তৈরী (ছবিতে দেখবেন)। ধারনা করছি সেগুলো খুবই সাধারন। প্রতি রুম ১ হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়। এক রুমে ৩ জন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। সুতরাং তুলনামুলক অনেক সস্তা। এই সব রিসোর্টে ইলেক্টট্রিসিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে সোলার এনার্জির মাধ্যমে। রাখা আছে জেনারেটর ও। আসুন কয়েকটি ছবি দেখি…১)
টুকটুক ইকো ভিলেজ-এ যাওয়ার সময়
২)
টুকটুক ইকো ভিলেজ-এর প্রবেশ পথ
৩)
টুকটুক রেষ্টুরেন্ট
৪)
সাদা ভাত এবং চিকেন ইন বেম্বু। স্থানীয় ভাষায় এই খাবারের নাম “কুমোতকুড়া”
৫)
সবুজের মাঝে টুকটুক রিসোর্ট
৬)
একটি নির্মানাধীন রিসোর্টের উপড় আমরা
৭)
টুকটুক ইকো ভিলেজের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি ছোট খাল
৮)
কাশফুল
৯)
পাহাড়ের উপড় থেকে তোলা
১০)
গহীন নীলিমা
১১)
নাম না জানা কোন ফুল
১২)
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, যাবার সময় হলো…
লেখক : আদনান আল বিরুনী
Prothom-alo Blog
No comments:
Post a Comment