Search This Blog

AFRICA Travel Widget

Error loading feed.

Asia Travel Widget

Error loading feed.

Friday, January 14, 2011

পাহাড়চূড়ার ছড়ায়...

পাহাড়চূড়ার ছড়ায়...

পলাশ বড়ুয়া | তারিখ: ১১-০১-২০১১


প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের ওপর পাথরের ছড়া। স্বচ্ছ পানিতে চোখে পড়ে মাছের আনাগোনা। তবে সেখানে যাওয়ার আগে পেরিয়ে যেতে হবে সবুজ পাহাড়, পাথরের গুহা, জলপ্রপাত আর ঝরনা। যাত্রাপথ দারুণ রোমাঞ্চকর। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার তৈদুছড়ার কথা বলছি।
ত্রিপুরা ভাষায় ‘তৈদু’ শব্দের অর্থ হচ্ছে পানির দরজা। আদিবাসীদের কাছে জানা গেল এখানকার কথা। প্রাকৃতিক শোভা আর রোমাঞ্চ—দুয়ের স্বাদ নিতে যাওয়াটাই ঠিক হলো। সফরসঙ্গী আরও কয়েকজন।
সকাল সকাল যাত্রা শুরু। গাড়িতে করে দীঘিনালা উপজেলার চাপ্পাপাড়া পর্যন্ত গিয়ে এবার পা দুটো কাজে লাগানোর পালা। কারণ, কাঁচা রাস্তায় গাড়ি আর যাবে না। প্রথমে গিয়ে পৌঁছালাম বোয়ালখালী ছড়ার পাশের গ্রাম বুদ্ধমা পাড়ায়। সেখানে একটু বিশ্রাম। এরপর বোয়ালখালী ছড়া পেরিয়ে তৈদুছড়ার মুখ দিয়ে প্রবেশ করলাম। অল্প পানির ছড়া দিয়েই হাঁটতে হবে। দূর থেকে দেখে চমকে গেলাম। মনে হলো বুনো হাতির পাল পানিতে গা ভাসিয়ে রয়েছে। আর এগোনো ঠিক হবে? ভুল ভাঙল ভালো করে দেখে। এগুলো হাতি নয়, সারিবদ্ধ বড় বড় পাথর। পুরো ছড়াটিতেই এ রকম বড় বড় পাথর, মাঝেমধ্যে সুড়ঙ্গের মতো। ঘণ্টাখানেক হাঁটার পর কান যেন বন্ধ হয়ে আসতে চাইল তীব্রবেগে পানি গড়িয়ে পড়ার শব্দে। ১০ মিনিট হাঁটাপথ এগিয়ে পেয়ে গেলাম তৈদুছড়ার জলাধার। সঙ্গী অজিত ত্রিপুরা জানালেন, ‘ওপরে গেলে পানির উৎসও দেখা যাবে। আমরা সবাই একবাক্যে রাজি। একটু বিশ্রাম নিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু হলো হাঁটা।’
প্রায় এক ঘণ্টা এগোনোর পর আবার সেই কানফাটানো পানির আওয়াজ। আরও একটু এগিয়ে চোখে পড়ল ঝরনা। ঠিক সিঁড়ির মতো প্রাকৃতিক ধাপ আছে। তাতে বসে বা শুয়ে পানিতে গা ভাসানো যায়। মাঝেমধ্যে আবার পানির স্রোত বেড়ে হঠাৎ ধাক্কা মারে। সেজন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এই ঝরনাটির ওপরে আছে আরও একটি ঝরনা। আর ঝর্নাটির নিচে পানি পড়ে তৈরি হয়েছে ছোট হ্রদ।
সেই ঝরনা থেকে আরও চড়াই পেরিয়ে আমরা পৌঁছলাম সবচেয়ে উঁচু ছড়াটিতে। এখানকার পানিতে আদিবাসীরা ছোট ছোট মাছ ধরছে। ছড়া ধরে একটু হাঁটতেই সামনে পড়ল আর একটি জলপ্রপাত। এরপর সামনে একটি গুহা। প্রবেশমুখের দুই পাশের দেয়ালে ধাপ কাটা। প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়েছে, যেন বিশ্রাম নেওয়ার বেঞ্চ। চাইলে এখানে বসে আড্ডা দেওয়া যাবে। গুহা পেরিয়ে এবার বড় ঝরনা। এখানেও রয়েছে কয়েক ধাপে পাথরের সিঁড়ি। একদম পিচ্ছিল নয়। শুধু পানির ধাক্কা থেকে একটু সাবধান। আদিবাসীরা জানালেন, সারা বছরই এখানে পানি থাকে। ঝরনার আশপাশের পাহাড়ে তাঁরা জুমচাষ করেন।
এবার ফেরার পালা। ওঠার সময় গল্পে গল্পে আর ঝরনা দেখার উত্তেজনায় সময়টা পার হয়ে যায়। নামার সময় মনটা বেশ খারাপই হলো। আবার আসার সাধ নিয়ে পানিপথে হাঁটা শুরু করলাম।
Source: Daily Prothom-Alo

No comments:

Post a Comment