শ র ত্ তা রু ণ্য
সোহরাব শান্ত
শুভ্রতার প্রতীক শরত্। বর্ষার বিদায়ের পর চারদিকে শুভ্রতার আবেশ ছড়িয়ে আসে। বর্ষার পানি যেই কমতে শুরু করে অমনি শুরু হয় সবুজের সমারোহ। নদীর পাড়, বিস্তীর্ণ বিল-ঝিল এবং চরের মাটিতে জন্ম নেয়া কাশের মাথায় লাগে সাদার দোলা। অপরূপ কাশফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করে চলে পালতোলা নৌকার মাঝিকে যাত্রী কিংবা পথচারীরাও কম যান না। শরতের এমন শুভ্র সৌন্দর্য এড়াতে পারে কে আছে এমন বাঙালি। ঝিরি ঝিরি বাতাসে যখন কাশবন দুলতে থাকে, তখন দুলতে থাকে মানুষের মনও। অপার মুগ্ধতা নিয়ে কাশফুলের সৌন্দর্য অবলোকন করা দর্শকের মনে খেলে যায় অসম্ভব এক ভালোলাগা। শিশু থেকে তরুণ, তরুণ থেকে বৃদ্ধ, মুগ্ধ হয় সবাই। বয়সভেদে মুগ্ধতার মাত্রাটাও হয় ভিন্ন। শিশু-কিশোরদের মাঝে কাশফুলের সৌন্দর্যকে নিজের করে নেয়ার এক ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তাই তো তারা দল বেঁধে কাশফুল ছেঁড়ায় মেতে ওঠে। বিশেষ করে গ্রামীণ শিশুদের আনন্দ যেন আর ধরেই না।
তরুণদের কাছে শরত্ আসে অন্যভাবে। শরতের স্বাভাবিক প্রকৃতি তরুণ মনকে ভাবুক করে তোলে। সঙ্গে যদি থাকে ভালোবাসার মানুষটি তাহলে তো কথাই নেই। শরতের প্রকৃতি তরুণ মনে ভালোবাসার রং পাল্টাতে বিরাট ভূমিকা রাখে। শহুরে জীবনাচারে শরতের প্রকাশটা একটু ভিন্নই বলতে হবে। প্রগতিশীল তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সাদা-শুভ্র পোশাক-আশাক পরার প্রবণতা বিগত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে। শরেক কেন্দ্র করে তারা বিভিন্ন নকশার পোশাক তৈরি করছে। এ সময় দেশি সুতি কাপড় বেশ আরামদায়কও বটে। তরুণদের সাদার ওপর কাজ করা পাঞ্জাবিতে মানায় ভালো। তরুণীদের বেলায় শাড়ির কথা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। শারদীয় পোশাক যাকে বলে আর কি! প্রকৃতির মাঝেই যেন হারিয়ে যাওয়া। শুধু পোশাকই নয়, ফ্যাশন হাউসগুলো বর্তমানে দেশীয় অলঙ্কারকেই বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই অলঙ্কারগুলোও শরতের সাজে আনে ভিন্নমাত্রা। শরতের আরেক আকর্ষণ শিউলি ফুল। শিউলির আকর্ষণ এড়ানো সত্যিই কঠিন! শিল্পীর কণ্ঠে যেভাবে ধ্বনিত হয়—‘ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও/আমার শিউলি নাও।’ শিউলি কুড়ানোর অভিজ্ঞতা যাদের হয়নি, তারা সেই মজাটি বোঝার কথা নয়। তারপরও এক কথায় বলা যায়, শরতের প্রকৃতিতে কাশফুল আর শিউলি স্বমহিমায় উজ্জ্বল।
উজ্জ্বল সাদা কাশফুলের মতোই শুভ্রতায় আচ্ছাদিত দেখা যায় শরতের আকাশ। স্থানে স্থানে দেখা মেলে সাদা মেঘের। ঝিরিঝিরি বাতাস বইতে শুরু করে কখনও কখনও। রোদে-বৃষ্টিতে লুকোচুরির পর্বটা শরতেই বেশি লক্ষ্য করা যায়। শরতের দিনে এই দেখা যায় কাঠফাটা রোদ হঠাত্ই কোত্থেকে যেন ঝমঝমিয়ে নেমে যাবে বৃষ্টি। পৃথিবীকে নিমিষেই ঠাণ্ডা করে দিয়ে অল্পক্ষণেই হারিয়ে যায় বৃষ্টি। এখানেই শরতের সৌন্দর্য। অপ্রস্তুত মুহূর্তে হয়তো এক ঝলক রোদের দেখা দিয়ে মুহূর্তেই বৃষ্টি বিষয়টা খুবই মজার। উদার মনের তরুণ-তরুণীদের জন্য তো ব্যাপারটা আরও বেশি উপভোগ্য। বৃষ্টিতে ভেজার মজাটাই আলাদা, তাই না! আর তা যদি হয় হঠাত্ বৃষ্টি জয়তু শরত্।
এই শরতে : শরতের প্রকৃতির পরিচয় তো পাওয়া গেল। শরত্ কীভাবে উপভোগ্য করা যায় আমাদের জীবনে? খুব সহজ! কারণ এই শরতেই যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উত্সব দুর্গাপূজা। যাকে সুন্দর করে বলা হয়—শারদীয় দুর্গাপূজা!
বেড়াতে চাইলে : বেড়ানোর জন্য মোটামুটি ভালো সময় শরত্। কারণ না গরম, না ঠাণ্ডা এমন একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে এখন। কিছুদিন পরই শুরু হয়ে যাবে শীত। যারা শীতের আগেই বেড়াতে চান, ব্যাগ-ল্যাগেজ গুছিয়ে ফেলতে পারেন। দিনের শুভ্রতা আর রাতের জ্যোত্স্না দেখার এই তো সুযোগ। যারা নৌকা কিংবা নদী ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। তবে নদী ভ্রমণে একটু সাবধানী হতে হবে। বর্ষার পানি অনেক ময়লা-আবর্জনা নিয়ে নেমে যাচ্ছে। তাই ভ্রমণের সময় পানি খাওয়া ও ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। ভ্রমণ বা সাধারণ ঘোরাফেরা যাই হোক না কেন, এ সময়ের সাজগোজ হালকা হলেই ভালো হবে। যেহেতু রোদ-বৃষ্টির খেলা চলে এই সময়, তাই সঙ্গে একটা ছাতা রাখতে ভুলবেন না যেন।
শরতের বিকেল, শরতের মেঘ, শরতের জ্যোত্স্না, কাশফুল— সবই ভালো করে দেবে আপনার মন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কি আর এমনি এমনিই লিখেছিলেন—
‘শরত্, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি
ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙুলি\
শরত্, তোমার শিশির-ধোয়া কুণ্ডলে
বনের পথে লুটিয়ে পড়া অঞ্চলে
আজ প্রভাতের হৃদয় ওঠে চঞ্চলি\’
এই শরতের সকাল, শরতের দুপুর, শরতের বিকেল রাত, শরতের রাত, ভালো লাগবে সবই। শরতের ভালোলাগা, মুগ্ধতা ছড়াক সবার চোখে।
তরুণদের কাছে শরত্ আসে অন্যভাবে। শরতের স্বাভাবিক প্রকৃতি তরুণ মনকে ভাবুক করে তোলে। সঙ্গে যদি থাকে ভালোবাসার মানুষটি তাহলে তো কথাই নেই। শরতের প্রকৃতি তরুণ মনে ভালোবাসার রং পাল্টাতে বিরাট ভূমিকা রাখে। শহুরে জীবনাচারে শরতের প্রকাশটা একটু ভিন্নই বলতে হবে। প্রগতিশীল তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সাদা-শুভ্র পোশাক-আশাক পরার প্রবণতা বিগত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে। শরেক কেন্দ্র করে তারা বিভিন্ন নকশার পোশাক তৈরি করছে। এ সময় দেশি সুতি কাপড় বেশ আরামদায়কও বটে। তরুণদের সাদার ওপর কাজ করা পাঞ্জাবিতে মানায় ভালো। তরুণীদের বেলায় শাড়ির কথা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। শারদীয় পোশাক যাকে বলে আর কি! প্রকৃতির মাঝেই যেন হারিয়ে যাওয়া। শুধু পোশাকই নয়, ফ্যাশন হাউসগুলো বর্তমানে দেশীয় অলঙ্কারকেই বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই অলঙ্কারগুলোও শরতের সাজে আনে ভিন্নমাত্রা। শরতের আরেক আকর্ষণ শিউলি ফুল। শিউলির আকর্ষণ এড়ানো সত্যিই কঠিন! শিল্পীর কণ্ঠে যেভাবে ধ্বনিত হয়—‘ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও/আমার শিউলি নাও।’ শিউলি কুড়ানোর অভিজ্ঞতা যাদের হয়নি, তারা সেই মজাটি বোঝার কথা নয়। তারপরও এক কথায় বলা যায়, শরতের প্রকৃতিতে কাশফুল আর শিউলি স্বমহিমায় উজ্জ্বল।
উজ্জ্বল সাদা কাশফুলের মতোই শুভ্রতায় আচ্ছাদিত দেখা যায় শরতের আকাশ। স্থানে স্থানে দেখা মেলে সাদা মেঘের। ঝিরিঝিরি বাতাস বইতে শুরু করে কখনও কখনও। রোদে-বৃষ্টিতে লুকোচুরির পর্বটা শরতেই বেশি লক্ষ্য করা যায়। শরতের দিনে এই দেখা যায় কাঠফাটা রোদ হঠাত্ই কোত্থেকে যেন ঝমঝমিয়ে নেমে যাবে বৃষ্টি। পৃথিবীকে নিমিষেই ঠাণ্ডা করে দিয়ে অল্পক্ষণেই হারিয়ে যায় বৃষ্টি। এখানেই শরতের সৌন্দর্য। অপ্রস্তুত মুহূর্তে হয়তো এক ঝলক রোদের দেখা দিয়ে মুহূর্তেই বৃষ্টি বিষয়টা খুবই মজার। উদার মনের তরুণ-তরুণীদের জন্য তো ব্যাপারটা আরও বেশি উপভোগ্য। বৃষ্টিতে ভেজার মজাটাই আলাদা, তাই না! আর তা যদি হয় হঠাত্ বৃষ্টি জয়তু শরত্।
এই শরতে : শরতের প্রকৃতির পরিচয় তো পাওয়া গেল। শরত্ কীভাবে উপভোগ্য করা যায় আমাদের জীবনে? খুব সহজ! কারণ এই শরতেই যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উত্সব দুর্গাপূজা। যাকে সুন্দর করে বলা হয়—শারদীয় দুর্গাপূজা!
বেড়াতে চাইলে : বেড়ানোর জন্য মোটামুটি ভালো সময় শরত্। কারণ না গরম, না ঠাণ্ডা এমন একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে এখন। কিছুদিন পরই শুরু হয়ে যাবে শীত। যারা শীতের আগেই বেড়াতে চান, ব্যাগ-ল্যাগেজ গুছিয়ে ফেলতে পারেন। দিনের শুভ্রতা আর রাতের জ্যোত্স্না দেখার এই তো সুযোগ। যারা নৌকা কিংবা নদী ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। তবে নদী ভ্রমণে একটু সাবধানী হতে হবে। বর্ষার পানি অনেক ময়লা-আবর্জনা নিয়ে নেমে যাচ্ছে। তাই ভ্রমণের সময় পানি খাওয়া ও ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। ভ্রমণ বা সাধারণ ঘোরাফেরা যাই হোক না কেন, এ সময়ের সাজগোজ হালকা হলেই ভালো হবে। যেহেতু রোদ-বৃষ্টির খেলা চলে এই সময়, তাই সঙ্গে একটা ছাতা রাখতে ভুলবেন না যেন।
শরতের বিকেল, শরতের মেঘ, শরতের জ্যোত্স্না, কাশফুল— সবই ভালো করে দেবে আপনার মন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কি আর এমনি এমনিই লিখেছিলেন—
‘শরত্, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি
ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙুলি\
শরত্, তোমার শিশির-ধোয়া কুণ্ডলে
বনের পথে লুটিয়ে পড়া অঞ্চলে
আজ প্রভাতের হৃদয় ওঠে চঞ্চলি\’
এই শরতের সকাল, শরতের দুপুর, শরতের বিকেল রাত, শরতের রাত, ভালো লাগবে সবই। শরতের ভালোলাগা, মুগ্ধতা ছড়াক সবার চোখে।
No comments:
Post a Comment