বিদেশ : ইউরোপ-এশিয়ার মিলনস্থল তুরস্ক
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেজিব তায়িপ এরদোগানের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে ঢাকা ও আংকারার মধ্যে সম্পর্ক বিশেষত বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা আবারও উজ্জ্বল হল। তুরস্কের সঙ্গে আমাদের দেশের মানুষের সাংস্কৃতিক ও ধমর্ীয় যোগাযোগ ঐতিহাসিক। তবে দুই দেশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। বললেই কী খুব সহজে কম খরচে তুরস্ক ভ্রমণে যাওয়া যায়! সে সুযোগটিবা আজ কোথায়? বুলগেরিয়া, জর্জিয়া, আজারবাইজান, সিরিয়া, গ্রিস, আর্মেনিয়া, ইরান আর ইরাক এই আটটি দেশ চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে তুরস্ককে।
এখানের ইস্তাম্বুল শহরের কাছেই ইজিন্সিয় মঙ্গলাবাজার। ইউরোপ আর এশিয়াকে সংযোগ করার জন্য এই তুরস্কে রয়েছে বসফরাস সেতু। ১৯৫৭ সালে নির্মিত এই সেতুটি সাড়ে তিন হাজার ফুট লম্বা। বসফরাস নদীতে নৌবিহারও করা যায়।
ইস্তাম্বুল দেখার পর আনজাক কোভে গেলে দেখা মেলে ২ হাজার ফুট লম্বা একটি উপসাগরীয় খাঁড়ি। ১৯১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের সৈন্যদের মধ্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল এই আনজাক কোভেই। পাশেই ৪ হাজার বছরের প্রাচীন শহর ট্রয়। ১৯ শতকে ট্রয় আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত ট্রয় শহরকে শুধু রূপকথা আর উপকথার কাল্পনিক শহর বলেই মনে করা হতো। তুরস্কে রয়েছে ঐতিহাসিক শহর 'এফেসুস'। এখানে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ দালানকোঠা। তাই তুরস্ক ভ্রমণের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এফেসুস। একদা এ শহর ছিল বিশ্ব বাণিজ্যের মধ্যমণি। এর কাছেই রয়েছে আরেক বন্দরনগরী কুসাদাসি। এখানের পামুক্কাল শহর দেখার পর প্রাচীন শহর হিয়েরাপোলিস, ট্র্যাভারটেনস আর ক্লিউপেট্রা সেতু দেখায় প্রবল আনন্দ।
কাপাডোফিয়া শহরের আকর্ষণও কিন্তু কম নয়। এখানেই মাটির তলায় ঐতিহাসিক নগর দুর্গ কেমাকলি। এই দুর্গের চারটি তলা টু্যরিস্টদের দেখার জন্য খোলা থাকে। এই নগরীতে রয়েছে মানুষের ঘর-বাড়ি, সুরাখানা, গুদাম ঘর, রান্নাবান্নার ঘর ইত্যাদি। নগর দুর্গের অদ্ভুত স্থাপত্য কৌশলও দেখার মতো। আশেপাশে রয়েছে মৃৎশিল্পালয়, কার্পেটের কারখানা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে দর্শনীয় হলো আটোমান সুলতানদের প্রাসাদ, সেন্ট সোফিয়া সংগ্রহশালা, নীল মসজিদ প্রভৃতি। নীল মসজিদের নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, এই মসজিদের দেওয়াল নীল, টাইলস নীল, অন্দরসজ্জা নীল বলেই নাম হয়েছে 'নীল মসজিদ'। এটি অটোমান সুলতান প্রথম আহমেদের আমলে তৈরি হয়েছিল। সেন্ট সোফিয়া সংগ্রহশালা একসময়ে ছিল ফাজিয়া সোফিয়া গির্জা। বার বার পুড়ে গিয়ে পুনর্নির্মিত হয়ে পরবতর্ীতে এটি জাদুঘরে পরিণত করা হয়।
তুরস্কের আয়তন ৭, ৭৯, ৪৫২ বর্গ কিমি। রাজধানী-আংকারা। ধর্ম-ইসলাম। মুদ্রা-লিরা। ভূমধ্য সাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল তুরস্ক। তাই এখানে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টি হয়। স্থলভাগ থেকে আগত শুষ্ক অয়ন বায়ুর প্রভাবে এখানে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি হয় না। সাগর থেকে কোন অংশেই দূরে অবস্থিত না হওয়ায় এই অঞ্চলের জলবায়ু চরম ভাবাপন্ন নয়।
তুরস্কের প্রধান খাদ্যশস্য গম। গমের চাষ বেশি হয়। তবে এখানে স্থান ভেদে যব, ভুট্টা, ধান, জোয়ার, বীট, তুলা, তামাক, খেজুর ও বিভিন্ন প্রকার ফল উৎপন্ন হয়। বেশ পশু পালনও করা হয় এই তুরস্কে। ভূভাগের শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ অংশে কৃষিকাজ করা হয়। এখানের মালভূমি অংশে প্রধান উৎপন্ন দ্রব্য 'মোহেধর' নামক ছাগলের পশম ও চামড়া। তুরস্কে-চিনি, কাপর্াস বয়ন, পশম বয়ন, কাচ, ডুমুর সংরক্ষণ, দুগ্ধজাত দ্রব্য ও গোলাপ নির্যাস শিল্পও রয়েছে।
তুরস্কের জাতির জনক হলেন-কামাল আতাতুর্ক। তিনি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সমর নায়ক এবং রাষ্ট্র নায়কদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি গ্রিক ও ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম তুরস্কের প্রতিষ্ঠা করেন। কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৮ সালে মারা যান।
- লিয়াকত হোসেন খোকন
এখানের ইস্তাম্বুল শহরের কাছেই ইজিন্সিয় মঙ্গলাবাজার। ইউরোপ আর এশিয়াকে সংযোগ করার জন্য এই তুরস্কে রয়েছে বসফরাস সেতু। ১৯৫৭ সালে নির্মিত এই সেতুটি সাড়ে তিন হাজার ফুট লম্বা। বসফরাস নদীতে নৌবিহারও করা যায়।
ইস্তাম্বুল দেখার পর আনজাক কোভে গেলে দেখা মেলে ২ হাজার ফুট লম্বা একটি উপসাগরীয় খাঁড়ি। ১৯১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের সৈন্যদের মধ্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল এই আনজাক কোভেই। পাশেই ৪ হাজার বছরের প্রাচীন শহর ট্রয়। ১৯ শতকে ট্রয় আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত ট্রয় শহরকে শুধু রূপকথা আর উপকথার কাল্পনিক শহর বলেই মনে করা হতো। তুরস্কে রয়েছে ঐতিহাসিক শহর 'এফেসুস'। এখানে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ দালানকোঠা। তাই তুরস্ক ভ্রমণের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এফেসুস। একদা এ শহর ছিল বিশ্ব বাণিজ্যের মধ্যমণি। এর কাছেই রয়েছে আরেক বন্দরনগরী কুসাদাসি। এখানের পামুক্কাল শহর দেখার পর প্রাচীন শহর হিয়েরাপোলিস, ট্র্যাভারটেনস আর ক্লিউপেট্রা সেতু দেখায় প্রবল আনন্দ।
কাপাডোফিয়া শহরের আকর্ষণও কিন্তু কম নয়। এখানেই মাটির তলায় ঐতিহাসিক নগর দুর্গ কেমাকলি। এই দুর্গের চারটি তলা টু্যরিস্টদের দেখার জন্য খোলা থাকে। এই নগরীতে রয়েছে মানুষের ঘর-বাড়ি, সুরাখানা, গুদাম ঘর, রান্নাবান্নার ঘর ইত্যাদি। নগর দুর্গের অদ্ভুত স্থাপত্য কৌশলও দেখার মতো। আশেপাশে রয়েছে মৃৎশিল্পালয়, কার্পেটের কারখানা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে দর্শনীয় হলো আটোমান সুলতানদের প্রাসাদ, সেন্ট সোফিয়া সংগ্রহশালা, নীল মসজিদ প্রভৃতি। নীল মসজিদের নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, এই মসজিদের দেওয়াল নীল, টাইলস নীল, অন্দরসজ্জা নীল বলেই নাম হয়েছে 'নীল মসজিদ'। এটি অটোমান সুলতান প্রথম আহমেদের আমলে তৈরি হয়েছিল। সেন্ট সোফিয়া সংগ্রহশালা একসময়ে ছিল ফাজিয়া সোফিয়া গির্জা। বার বার পুড়ে গিয়ে পুনর্নির্মিত হয়ে পরবতর্ীতে এটি জাদুঘরে পরিণত করা হয়।
তুরস্কের আয়তন ৭, ৭৯, ৪৫২ বর্গ কিমি। রাজধানী-আংকারা। ধর্ম-ইসলাম। মুদ্রা-লিরা। ভূমধ্য সাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল তুরস্ক। তাই এখানে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টি হয়। স্থলভাগ থেকে আগত শুষ্ক অয়ন বায়ুর প্রভাবে এখানে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি হয় না। সাগর থেকে কোন অংশেই দূরে অবস্থিত না হওয়ায় এই অঞ্চলের জলবায়ু চরম ভাবাপন্ন নয়।
তুরস্কের প্রধান খাদ্যশস্য গম। গমের চাষ বেশি হয়। তবে এখানে স্থান ভেদে যব, ভুট্টা, ধান, জোয়ার, বীট, তুলা, তামাক, খেজুর ও বিভিন্ন প্রকার ফল উৎপন্ন হয়। বেশ পশু পালনও করা হয় এই তুরস্কে। ভূভাগের শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ অংশে কৃষিকাজ করা হয়। এখানের মালভূমি অংশে প্রধান উৎপন্ন দ্রব্য 'মোহেধর' নামক ছাগলের পশম ও চামড়া। তুরস্কে-চিনি, কাপর্াস বয়ন, পশম বয়ন, কাচ, ডুমুর সংরক্ষণ, দুগ্ধজাত দ্রব্য ও গোলাপ নির্যাস শিল্পও রয়েছে।
তুরস্কের জাতির জনক হলেন-কামাল আতাতুর্ক। তিনি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সমর নায়ক এবং রাষ্ট্র নায়কদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি গ্রিক ও ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম তুরস্কের প্রতিষ্ঠা করেন। কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৮ সালে মারা যান।
- লিয়াকত হোসেন খোকন
No comments:
Post a Comment