Search This Blog

FCO Travel Advice

Bangladesh Travel Advice

AFRICA Travel Widget

Asia Travel Widget

Wednesday, December 8, 2010

বনভোজনে দূরে কোথাও

বনভোজনে দূরে কোথাও

০০আলোকচিত্র ও লেখা মুস্তাফিজ মামুন ০০

ঢাকা থেকে দূরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে আকর্ষণীয় কিছু বনভোজন কেন্দ্র। এই সময়ে তাই বনভোজনে যেতে পারেন দূরের কোনো এক জায়গায়। দূরের এসব বনভোজন কেন্দ্র নিয়ে কড়চার এবারের আয়োজন।

সাতছড়ি উদ্যান

সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান বনভোজনের জন্য একটি আদর্শ জায়গা। রাজধানী থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত জাতীয় এ উদ্যানটিতে রয়েছে কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র। সঙ্গে সঙ্গে উপভোগ করা যাবে এখানকার নানান জীব বৈচিত্র্য। সাতছড়িতে রয়েছে প্রায় ১৪৯ প্রজাতির পাখি, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী। মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান, উলস্নুক, লজ্জাবতী বানর, কুলু বানরের মতো বিরল প্রাণীর দেখা মেলে এ উদ্যানে। এ ছাড়া মায়া হরিণ, খিদির শুকর, বন্য শুকর, বেজি, গন্ধ গোকুল, বনবিড়াল, মেছো বাঘ, কটকটি ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, গিরগিটি, বিভিন্ন রকম শাপ, গুই সাপ প্রভৃতি রয়েছে এ বনে। ফিঙ্গে, কাঠঠোকরা, মথুরা, বন মোরগ, ধনেশ, লাল ট্রগন, পেঁচা, সুই চোরা এ বনের উলেস্নখযোগ্য পাখি। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বনভোজন কেন্দ্র ব্যবহার করতে চাইলে জনপ্রতি ১০ টাকা হিসেবে দিতে হবে। এ ছাড়া কার, জিপ ও মাইক্রোবাস পার্কিং ২৫ টাকা।

লাউচাপড়া

জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জের লাউচাপড়ায় অবস্থিত পাহাড়িকা অবকাশ কেন্দ্র। এখানে চারদিকে গারো পাহাড়ের সবুজ বন। পাহাড়ের গা বেয়ে আঁকাবাঁকা একটি সিঁড়ি উঠে গেছে একেবারে চূড়ায়। সেখানে আবার রয়েছে মস্তবড় এক ওয়াচটাওয়ার। দশ-বারোটি সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠলে চারদিকে সবুজ ছাড়া কিছুই আর চোখে পড়ে না। দূরে দেখা যায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আকাশছোঁয়া সব পাহাড়। চারদিকটা যেন ছবির মতো। এই পাহাড়ি জঙ্গলে আছে নানা জাতের পশু-পাখি। পুরো জায়গাটি অবসর বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে জামালপুর জেলা পরিষদ। এ অবসর কেন্দ্রে প্রবেশে কোনো টাকা লাগে না। তবে কোনো বাহন নিয়ে গেলে তার জন্য পার্কিং ফি দিতে হবে। পার্কিং ফি প্রতিটি বাস কিংবা কোস্টারের জন্য ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, জিপ, টেম্পো, কার ৫০ টাকা, বেবি টেক্সি, ঘোড়ার গাড়ি ২০ টাকা, মোটর সাইকেল, ভ্যান গাড়ি ১০ টাকা, রিকশা ৫ টাকা, বাইসাইকেল ২ টাকা। এ ছাড়া লেকে নৌবিহার করতে জনপ্রতি লাগবে ১০ টাকা, ওয়াচ টাওয়ারে উঠতে ৩ টাকা এবং পিকনিক পার্টির রান্নাঘর ও প্রতি চুলা ব্যবহারের জন্য দিতে হবে ৫০ টাকা।

যমুনা রিসোর্ট

ঢাকা থেকে ৯৫ কিলোমিটার এবং টাঙ্গাইল থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে বঙ্গবন্ধু সেতুর কাছেই আধুনিক একটি অবকাশ কেন্দ্র যমুনা রিসোর্ট। রিসোর্টের পশ্চিম পাশে যমুনার তীর ঘেঁষে এখানে আছে সাজানো গোছানো বনভোজন কেন্দ্র। যমুনা রিসোর্টে বনভোজনে যেতে হলে আগে থেকে যোগাযোগ করতে হবে এই নম্বরে_৮১৪২৯৭১-৩, ০১৭১১৮১৬৮০৭।

চিত্রা রিসোর্ট

নড়াইল শহরের চিত্রা নদীর তীরে অবস্থিত চিত্রা রিসোর্ট। প্রায় সাত বিঘা জায়গাজুড়ে এ রিসোর্টে আছে কটেজ, শিশুপার্ক এবং চিত্রা নদীতে নৌ-ভ্রমণের ব্যবস্থা। বনভোজন, অবকাশ যাপন কিংবা পারিবারিক ভ্রমণের জন্য চিত্রা রিসোর্ট একটি উপযুক্ত জায়গা। যোগাযোগ :০১৭১৩০৬৩৬১০।

নিরিবিলি বনভোজন কেন্দ্র

জেলার লোহগড়া থানার রামপুরে অবস্থিত বনভোজন কেন্দ্র নিরিবিলি। প্রায় ১৪ একর জায়গা নিয়ে এ কেন্দ্রটিতে আছে চিড়িয়াখানা, জাদুঘর, এস এম সুলতানের শিল্পকর্ম নিয়ে একটি প্রদর্শনী গ্যালারি, রোপ ওয়ে, রেস্ট হাউস, ফুল ও ফলের বাগানসহ বনভোজন ও অবকাশ যাপনের সব ব্যবস্থা। যোগাযোগ :০১৭১১৬৯৩৭৮৮।

গজনী অবকাশ কেন্দ্র

শেরপুর জেলা শহর থেকে চবি্বশ কিলোমিটার দূরে গারো পাহাড়ের পাদদেশে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত গজনীতে গড়ে তোলা হয়েছে অবকাশ কেন্দ্র। এটি ঝিনাইগাতি উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গজনীতে অবস্থিত। যাবার পথে রাংটিয়া ছেড়ে কিছু দূর এগোলে দুপাশে গজারি গাছের ছাউনিতে ঢাকা কালো পিচঢালা পথটি সবার মন কাড়বে। এ পথ গিয়ে শেষ হয়েছে একটি হ্রদের সামনে। পাহাড়ি ঝরনার জল আটকিয়ে এখানে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম হ্রদ। এর মাঝখানে আছে ছোট্ট একটি দ্বীপ। দ্বীপে যেতে হবে দোদুল্যমান ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে। লেকে নৌ-ভ্রমণের জন্য আছে পা চালিত নৌকাসহ ময়ূরপঙ্খী নাও। এখানে দূর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পাহাড় চূড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে যেদিকেই দৃষ্টি যাবে সবুজ আর সবুজ। দূরে পাহাড় চূড়ার সঙ্গে মেঘের মিতালী। এখানকার কৃত্রিম পাতালপথটির নাম পাতালপুরী।

অরুনিমা কান্ট্রিসাইড

জেলার কালিয়া উপজেলার মধুমতির তীরে পানি পাড়া গ্রামে প্রায় ৫০ একর জায়গা নিয়ে অরুনিমা কান্ট্রিসাইড রিসোর্ট। আধুনিক বাংলো, চিড়িয়াখানা, পুকুর, লেক, গোলাপ বাগান, বাটার ফ্লাই পার্ক, ছেড়াদ্বীপ, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি, গলফ খেলার মাঠসহ আরো অনেক আয়োজন আছে অরুনিমায়। নানান গাছপালার মাঝে এখানে বনভোজন করতে ভালো লাগবে সবার। যোগাযোগ :০১৭১১৪২২২০৩।

স্বপ্নপুরী

উত্তরবঙ্গের অতি পরিচিত একটি পিকনিক স্পট হলো দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী। ১০০ একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে এখানে রয়েছে বনভোজন করার মতো বেশ কয়েকটি স্পট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন শত শত লোকজন আসেন এখানে বনভোজন করতে। স্বপ্নপুরীর প্রবেশ পথেই রয়েছে স্বপ্নময় তোরণ। বিশাল তোরণের দুপাশে রয়েছে ডানাওয়ালা পরীমূর্তি। ভেতরে সর্বত্রই রয়েছে সবুজের রাজ্য। স্বপ্নপুরীর পুরোটাই একেবারে সাজানো গোছানো। বেশক'টি পিকনিক স্পট ছাড়াও এখানে আছে কয়েকটি কটেজ। ঢাকা থেকে দিনাজপুর যাওয়া যায় হানিফ, শ্যামলী, কেয়া, এস আর প্রভৃতি বাসে। বাসগুলো ছাড়ে কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে। ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকা। দিনাজপুর থেকে বাসে ফুলবাড়ির ভাড়া ২৫-৩০ টাকা। সেখান থেকে রিকশায় কিংবা টেম্পোতে আসতে হবে স্বপ্নপুরী। যোগাযোগ :০১৭১২-৫৮৬০৬৬।

ফানসিটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক

জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ফানসিটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। প্রায় দশ একর জায়গা নিয়ে এ পার্কের মূল আকর্ষণ হলো মেরি গো রাউন্ড, সুপার চেয়ার, ওয়েস্টার্ন ট্রেন, কিডি রাইডস, প্যাডেল বোটস, ব্যাটারি কার, থ্রিডি জু ভিডিও গেমস ইত্যাদি। এ ছাড়া পার্কে স্থান পেয়েছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের ছবি। আর সব সুবিধাসহ একটি পিকনিক স্পটও আছে এখানে। ফানসিটি অ্যামিউজমেন্ট পার্কে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা এবং প্রতিটি রাইডের মূল্য ১০ টাকা। যোগাযোগ :০৫৬২৪-৫৬৫৮২।
Dource: Daily Ittefaq, 8th January-2011

No comments:

Post a Comment