Search This Blog

FCO Travel Advice

Bangladesh Travel Advice

AFRICA Travel Widget

Asia Travel Widget

Friday, December 31, 2010

জলপ্রপাতের নাম নাফাখুম

জলপ্রপাতের নাম নাফাখুম

পল্লব মোহাইমেন | তারিখ: ২১-০৯-২০১০


গত ৬ আগস্ট, বিকেল। বান্দরবান শহরে আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমিতে দেখা হলো প্রথম আলোর বান্দারবান প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যোতি চাকমার সঙ্গে। কিছুক্ষণ আগেই আমরা ফিরেছি এক অভিযান শেষ করে। বুদ্ধজ্যোতি বললেন, ‘যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে দেখা হলে আপনাদের যেতে দিতাম না। বর্ষার এ সময়টা ওইখানে মাঝেমধ্যেই তিন-চারজন “খরচা” হয়ে যায়।’ তাঁর সঙ্গে আসা প্রথম আলো বন্ধুসভার কয়েকজন বন্ধুও সায় দিলেন।
অভিযান শেষ, তার পরও ‘খরচা’ শব্দটার অর্থ বুঝে আমাদের বিশেষ করে আমার মধ্যে ভয় শুরু হলো। তবে নিজেকে অভয় দিলাম এই বলে যে ভালোয় ভালোয় ফিরে এসেছি লাইফটাইম একটা এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে।
দারুণ এই অভিজ্ঞতা যে গন্তব্যে, সেটি নাফাখুম জলপ্রপাত। রেমাক্রি জলপ্রপাত নামেও এটা অনেকের কাছে পরিচিত। জলপ্রপাতটা দেখে সবারই মনে হয়েছে, বাংলাদেশেও এমন জায়গা আছে!
নাফাখুম কিছুটা দুর্গম। বিশেষ করে, বৃষ্টিবাদলার দিনগুলোয়। তাই তো একেবারে জলপ্রপাত ঘুরে আসা সমতল ভূমির মানুষের সংখ্যাও কম। আমাদের ছোটখাটো দলের সবারই ইচ্ছে ছিল, বান্দরবানে কোনো ঝরনা বা জলপ্রপাত দেখে আসা। যেখানে যেতে আবার ট্রেকিংও যেন করতে হয়। দলটি এক অর্থে বেশ বিস্ময়কর, আবার আরেকভাবে চিন্তা করলে, দলটিতে দারুণ ভারসাম্য রয়েছে। দলে একদিকে আছেন বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীম, যিনি আমাদের গন্তব্য নাফাখুম জলপ্রপাত ঠিক করেছেন। অপরদিকে আমার মতো ৮৬ কেজি ওজনের মানুষ। মাঝখানে প্রথম আলোর সিমু নাসের, জাবেদ সুলতান পিয়াস আর সিমু নাসেরের স্ত্রী চারুকলার ছাত্রী সিফাত আজিম। একদিকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠা মুসা, অন্যদিকে পাহাড়ে অনভিজ্ঞ বা কিঞ্চিৎ অভিজ্ঞ লোকজন—এমন ভারসাম্য কি আর সহজে মেলে?

থানচি হয়ে তিন্দু

গত ৪ আগস্ট সকালেই বাসে বান্দরবান শহর। বাস থেকে আমাদের নামিয়ে নিলেন গাইড মংখাই। ৯-১০ বছর আগে যখন মুসার পর্বতারোহণ শুরু বান্দরবানের পাহাড়-পর্বত দিয়ে, তখন থেকেই মুসার বিভিন্ন অভিযানের সঙ্গী তিনি। গত মাসের নাফাখুম অভিযানে মংখাই আমাদের সঙ্গী। মংখাইয়ের সঙ্গে কথা বলে মুসা আগেই রুট ঠিক করেছেন। তাঁর পরামর্শে আর প্রবল উৎসাহে আমাদের প্রস্তুতিও ব্যাপক। মশা যাতে না কামড়ায় সে জন্য মলম অডোমাস, বর্ষাতি, ছাতা, পর্যাপ্ত টয়লেট টিস্যু, হাফ বা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট, পিচ্ছিল পথে হাঁটার উপযোগী স্যান্ডেল, টুকটাক ওষুধ, বারান্দাওয়ালা টুপি, টি-শার্ট, তিনদিকে সেলাই করা বিছানার চাদর (ঘুমানোর জন্য), টর্চলাইট, হেডল্যাম্প, এমনকি ক্যামেরার জন্য বর্ষাতি—লটবহর কম নয়। সব নিয়ে চড়া হয় ভাড়া করা নিশান পেট্রলগাড়িতে। চালক আনন্দ নিয়ে যাবেন থানচি পর্যন্ত। বান্দরবান থেকে ৭৯ কিলোমিটার। শুরু হলো গাড়ির চড়াই-উতরাই পেরোনো। পাহাড়ি পথের ধারে মিশ্র ফল বাগান, আদিবাসীদের চলাচল সবই মুগ্ধ করে। একে একে আমরা পার হই মিলনছড়া, নীলগিরি, চিম্বুক, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাস্তা ‘পিক ৬৯’, বাঘাইছড়া। মাঝেমধ্যে আমরা থামি, ছবিটবি তুলি; আবার চলতে থাকি আনন্দের জিম্মায়। পাহাড়ের একটা জায়গায় অনেক দূরে বঙ্গোপসাগরও দেখা যায়। ক্যামেরার টেলিলেন্সে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওটা সমুদ্রই। ঘণ্টাতিনেক পরে গাড়ি পৌঁছায় থানচির এপারে শঙ্খ নদীর পাড়ে। পাহাড়িদের কাছে এ নদীর নাম সাঙ্গু। এই সাঙ্গু বেয়েই আমাদের উঠতে হবে রেমাক্রি বাজার অবধি। উঠতে হবে এ কারণে, শঙ্খ নদী নেমেছে পাহাড় বেয়ে। আমাদের গন্তব্য যেহেতু ঊর্ধ্বমুখী, তাই নদী বেয়ে ওঠা ছাড়া উপায় কী!
ইঞ্জিনচালিত চিকনচাকন একটা নৌকা ভাড়া করে ফেললেন মংখাই। শঙ্খ নদীর ওপারে থানচি বাজারে যেতে হবে আগে। দুপুরের খাবার ছাড়াও বিডিআর ক্যাম্প থেকে অনুমতি নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা আছে। বাজারে আদিবাসী একটা পান্থশালায় মুরগি আর সবজি দিয়ে খাওয়া হলো। পাহাড়ি রান্নায় অনভ্যস্ত হওয়ায় মুরগিটা জমল না, জমল সবজি। মুসা ইব্রাহীম এভারেস্ট বিজয়ী, তিনি এখন তারকা। বিডিআরের কয়েকজন সদস্য তাঁর সঙ্গে এভারেস্ট নিয়ে কথাবার্তা শুরু করলেন। আমাদের বলা হলো, এ সময়টা দুর্ঘটনা ঘটে। তবে গত কয়েক দিন জোরালো বৃষ্টি হয়নি। তাই পাহাড়ি ঢল নামেনি। ঢল নামলে এ পথে যাওয়ার জন্য বিডিআরের অনুমতি মেলে না। জানা গেল ঘণ্টাখানেক আগে বিডিআরের অতিথি হয়ে আসা একটি দলও রওনা হয়ে গেছে। তবে অনুমতির আগে সবার ঢাকার ঠিকানা ও আত্মীয়ের ফোন নম্বর লিখে দিতে হলো। নৌকায় ওঠার আগে দূর পাহাড়ে দেখা গেল বৃষ্টি। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই বারিধারা থানচিতেও। থেমে গেল অল্পক্ষণেই। নৌকায় শুরু হলো আমাদের যাত্রা।
সাঙ্গু খরস্রোতা, পাথুরে। নৌকা কিছুক্ষণ চলতেই দুই পাশে অপূর্ব সৌন্দর্যের সব পাহাড়। নদীতে এসে পড়ছে ছোট ছোট ঝরনাধারা। জুম চাষের পাহাড়গুলো যেন হালকা সবুজের মোলায়েম মখমল। এখানে সেখানে আদিবাসী বাড়ি। নদীর বাঁকগুলোয় ছোট-বড় পাথরের স্তূপ আর প্রবল স্রোত। দুবার নামতেও হলো নৌকা থেকে। মাঝি আর তাঁর সঙ্গীরা ইঞ্জিন চালিয়ে, লগি ঠেলে ওসব বাঁকে নৌকা পার করলেন। এ নৌকায় সঙ্গী হয়েছে আদিবাসী পিতা-পুত্র। ছেলেটি শিশু, বয়স হবে আট-নয়। জানা গেল তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছে, ব্যান্ডেজও রয়েছে। কিন্তু ভয়াল বাঁকগুলোতেও শিশুটি নৌকার পাটাতনে আধশোয়া, নির্বিকার তার ভঙ্গি। বোঝাই গেল প্রকৃতির সঙ্গে এভাবে জুুঝতে জুঝতেই বড় হবে শিশুটি। যেমন হয়েছেন তার পূর্বপুরুষেরা।
সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে নৌকা পৌঁছাল তিন্দু বাজারের ঘাটে। নেমেই উঁচু পাহাড়ে সোনালি আকাশ চোখে পড়ল। নদীর ঘাট থেকে সিঁড়ি বেয়ে বেশ উঁচুতে তিন্দুবাজার। কাঠের একটা ছোট দোতলায় থাকার ব্যবস্থা করা হলো। মশার কামড় থেকে বাঁচতে শরীরের খোলা অংশে মাখা হলো অডোমাস।
তিন্দু থানচি উপজেলার একটা ইউনিয়ন। চেয়ারম্যান শাইয়ানের সঙ্গে কথা হয় তাঁর দোকানে। সৌরবিদ্যুৎ আছে বাজারে। তারই টিমটিমে আলো থাকে রাতে। মোবাইল ফোনের মধ্যে শুধু টেলিটকের নেটওয়ার্ক রয়েছে। কোনো টিভি চ্যানেল, বেতার বা সংবাদপত্র এখানে নেই। ফলে খবর জানা যায় শুধু মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলে। তবে বাজারে সাবান, শ্যাম্পু, প্যাকেটের গুঁড়া মসলা ইত্যাদি ভোগ্যপণ্যই পাওয়া যায়।
রাতের খাওয়াটা হলো বেশ। মুরগির ঝোল, ভাত আর বাঁশের ঝোল। কেউ তো এমনিতে কোনো দিন বাঁশ খেতে চায় না, কিন্তু খাওয়ার সময় দেখা গেল দলের সবাই শুধু বাঁশই খেতে চাইছে। রাত নয়টার মধ্যে পুরো বাজার নীরব। বন্ধ হয়ে গেছে চেয়ারম্যানের টেলিভিশনটাও। এটাতে কোনো চ্যানেল নয়, ডিভিডি চালিয়ে দেখা হয়। উঁচু পাহাড় থেকে আকাশটা মনে হলো কাছেই। দলের সবাই বাজারে মাঝখানে ফেলে রাখা বাঁশের ওপর শুয়ে-বসে দেখতে থাকি অজস্র তারাভরা আকাশ। রাত বাড়তে থাকে, আকাশের তারা আরও উজ্জ্বল হতে থাকে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে আমাদের মুগ্ধতা।

রেমাক্রির পথে

ভোর ছয়টাতেই ঘুম ভেঙে যায় সবার। দ্রুত প্রস্তুত হয়ে আবারও নৌযাত্রা। এবারের নৌপথ নাকি আরও কঠিন। কিছুক্ষণ পর তা বোঝাও গেল। জায়গাটার নাম কেয়াপেজা। বড় বড় পাথর। বড় তিন-চারটা পাথর আছে নদীর মাঝখানে, সেসব পাথরে তাঁবু খাটিয়ে থাকাও যায়। থেকেছেনও বৈমানিক এনাম তালুকদার আর অভিযাত্রী, আলোকচিত্রী রোনাল্ড হালদার। ফেসবুকে সেই তাঁবুবাসের ছবিও আছে। বিডিআরের লোকজন এই পাথরের কথা বলেই সাবধান করে দিয়েছিলেন। কেয়াপেজা পার হওয়ার খানিকটা পর নদী আরও বিরূপ। আমরা নেমে গেলাম নৌকা থেকে। শুরু হলো মানুষ, যন্ত্র বনাম প্রকৃতির লড়াই। অবশেষে পার হলো নৌকা, জয় মানুষেরই।
দুই পাশে প্রকৃতি অসীম আর উদার। জুমের সবুজ মখমলে মাঝেমধ্যে কালো কালো দাগ চোখে পড়ে। মনে হয় যেন ঘা। আসলে তা-ই। পাহাড়ের গায়ে থাকা বড় বড় গাছ কাটার চিহ্ন ওইগুলো। মনটা খারাপ হয়ে যায়। যেমন খারাপ লেগেছিল বান্দরবান থেকে থানচি বাজার আসার পথে দূর পাহাড়ের মাঝে ইটভাটার চিমনি দেখে।
আড়াই ঘণ্টার নৌকাযাত্রা শেষে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পৌঁছে যাই রেমাক্রি বাজারে। এটাও থানচির একটা ইউনিয়ন। থাকার জায়গা বের করি। ঠিক হয় বাজারে থাকব। এ বাজারেও সৌরবিদ্যুৎ, তবে মোবাইল ফোন নেই। থাকার জন্য এবার একতলা ঘর। মেঝেটা কাঠের। আমাদের লটবহর রেখে সাড়ে ১০টায় শুরু হয় মূল অভিযান—নাফাখুম জলপ্রপাত। আমাদের দলে যুক্ত হয় আদিবাসী এক কিশোর, যে নাফাখুমের পথটা চেনে।

ঝিরি বেয়ে নাফাখুমের পথে

গাড়ি ও নৌকার পালা শেষ রেমাক্রি বাজারেই। এবার ট্রেকিং মানে হাঁটাপথ। রেমাক্রি বাজারে সাঙ্গু বাঁক নিয়েছে। এই বাঁকে এসে পড়েছে রেমাক্রি খাল। খালের শুরুটা নাফাখুম জলপ্রপাতে। মাঝেমধ্যে অনেক ঝরনার পানি যোগ হয়েছে খালে। এই খাল মানে ঝিরি ধরেই হাঁটা আমাদের। শুরুতেই তিনটা পাহাড় ডিঙাতে হবে। অন্যদের তেমন কিছু না, একটা পাহাড় ডিঙাতেই আমার অবস্থা খারাপ। বসেই পড়ি এক জায়গায়। এগিয়ে আসেন মুসা। নানা কথা বলেন, উজ্জীবিত করেন। দলের সঙ্গে তাল মেলাতে শুরু করি। তিন পাহাড় পেরোতে ৪৫ মিনিট। এবার ঝিরি ধরে এগোনো। পাথুরে খালের দুই পাড় হাঁটার জন্য বন্ধুর। তবে শীতল, প্রায় স্বচ্ছ পানি আর নির্ভেজাল প্রকৃতির কারণে শরীর ও মন সতেজ হয়ে ওঠে। ঝিরির দুই পাড় বেশির ভাগ পাথুরে ও সরু। কোথাও কোথাও পিচ্ছিল। মাঝেমধ্যে আবার হাঁটু বা কোমরসমান স্রোত ঠেলে এপার-ওপার করতে হয়। ঘণ্টাখানেক হাঁটার পর আদিবাসীদের শেষ পাড়াটাও আমরা পেরিয়ে এলাম। মাঝেমধ্যে জুম চাষের পাহাড়ে বা ঝিরির পানিতে স্নানরত এক-দুজন আদিবাসী ছাড়া কোনো মানুষও চোখে পড়ে না। রেমাক্রি খালে এসে মিশেছে ছোট-বড় অনেক ঝরনা। শীতল সেই ঝরনাগুলোর পানি শীতল এবং সুপেয়। ঝরনা আর ঝিরির পানিতে ভিজে শরীর সতেজ হচ্ছে, আবার আমরা হাঁটছি। এভাবে একটা জায়গায় পৌঁছালাম আমরা। যেখানে খাল আর হেঁটে পার হওয়া যাবে না। আমি আর সিফাত সাঁতার জানি না। কী হবে?
ঝিরির পাশে এক জুমচাষি কাজ করছিলেন। তাঁর হাতের দা নিয়ে আমাদের কিশোর গাইড তিনটা কলাগাছ কেটে আনল। কলাগাছের আঁশ দিয়েই বাঁধা হলো সেগুলো। সামনে বাঁশের একটা কঞ্চি গাঁথা হলো। আমি সেটা ধরে থাকব, মুসা ও দুই গাইড সাঁতরে ঠেলে খাল পার করবেন। প্রথমে আমি, পরে সিফাত—পার হলাম এভাবে। এরপর পথ আরও জটিল। কাঁদা, পাথরের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝোপঝাড়। আরও প্রায় আধাঘণ্টা হাঁটার পর শোনা গেলে পানির শব্দ। দেখা মিলল শুভ্র জলরাশির—নাফাখুম জলপ্রপাত।
প্রায় ১৫-২০ ফুট ওপর থেকে পানি পড়ছে নিচের রেমাক্রি খালে। তীব্র স্রোত তৈরি করে চলে যাচ্ছে সাঙ্গু নদীর দিকে। জলপ্রপাতের প্রস্থ ৪০ ফুটের কম না। দুদিকে বড় পাথরের দেয়াল। এমন জলপ্রপাত বাংলাদেশে, বিশ্বাসই যেন হতে চায় না। জলপ্রপাতের নিচে পাথুরে গুহাও আছে। সেই গুহা চলে গেছে পাহাড়ের অনেকটা ভেতরে। জলপ্রপাতের শুভ্র জলরাশির মধ্যে হঠাৎ নীল একটা আকৃতি চোখে পড়ল। দেখা গেল একজন আদিবাসী মারমা বাঁশের আগায় জাল বেঁধে মাছ ধরছেন। ওপর থেকে পানি পড়ার সময় সব মাছ লাফ দেয়। লাফ দিয়ে জালে এসে ধরা দেয় এসব মাছ।
বিষয়টা সরেজমিন বোঝার জন্য মুসা আর সিমু নাসের পাথুরে পাড় থেকে জলপ্রপাতের জলধারায় ডাইভ দেন। স্রোত তাঁদের আট থেকে ১০ ফুট ঠেলে নিয়ে যায়। একটা পাথর আঁকড়ে ধরে তাঁরা উঠে যান ওপারে। তারপর পাথুরে পাহাড় ধরে ধরে জলপ্রপাতের ভেতরে গুহার মুখে যান তাঁরা। এই গুহা নিয়ে নানান কিংবদন্তি আছে। গুহায় নাকি বিরাট কিছু মাছ আছে, সেগুলো ধরতে যারা গুহায় ঢোকে, তারা আর ফিরে আসে না।
দেড় ঘণ্টার মতো আমরা নাফাখুম দেখলাম, মুগ্ধ হলাম। আবার হাঁটতে হবে আট কিলোমিটার বন্ধুর পথ। দিনের আলো থাকতেই পৌঁছাতে হবে রেমাক্রি বাজারে। আদিবাসী মৎস্য শিকারির কাছ থেকে বেশ কিছু নলাজাতীয় মাছ কিনে শুরু হলো ফিরতি যাত্রা। রাতে খাওয়া হয় এই মাছ ভাজা আর পরদিন সকালে এই মাছের কাবাব।
ফেরার সময় বিরতিহীন হাঁটা। ঝিরঝির বৃষ্টি থাকলেও কোথাও থামা হয়নি। সন্ধ্যা নেমে এল আর আমরা ঝিরি থেকে উঠে গেলাম পাহাড়িপাড়ায়। নাফাখুমে শীতকালেও পানি থাকে, তবে পরিমাণে কম। শীতকালে যাওয়া-আসার পথের ঝুঁকিটাও অনেক কম।
গত ৬ আগস্ট সকালে আবার নৌকাযাত্রা। ফিরতি পথ মানে নেমে যাওয়া থানচির পথে। যে পথে যেতে সময় লেগেছিল ছয় ঘণ্টা, ফিরতে লাগল দেড় ঘণ্টা। সাঙ্গুর বাঁকগুলোয় ওঠার চেয়ে যে নামা আরও বিপজ্জনক, তা বোঝাও গেল। বিশেষ করে কেয়াপেজা জায়গাটা। নানা রকম পাথর এড়িয়ে যে নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে মাঝিরা নৌকা চালালেন, তা দেখার মতো।
দুই পাশের অপার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আমরা ফিরে এলাম থানচি। জেনে এলাম নাফাখুমের যে পানি, তার উৎস আরও দুই দিনের পথ। সেখানেও আছে জলপ্রপাত। এর চেয়েও বেশি উঁচু প্রায় ১০০ ফুট ওপর থেকে পড়ে বিপুল জলরাশি। তাজিনডং পেরিয়ে যেতে হয় সেখানে। বান্দরবানে রোমাঞ্চকর এ রকম দারুণ সুন্দর জায়গাগুলো নিয়ে আমরা তো গর্ব করতেই পারি, বেরিয়ে যেতে পারি অভিযানে।

যেভাবে যাবেন

বাসে ঢাকা থেকে বান্দরবান, ভাড়া ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। চান্দের গাড়ি বা ভাড়া করা ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়িতে থানচি। চান্দের গাড়ির ভাড়া জনপ্রতি ২০০ আর গাড়ি ভাড়া করলে তিন হাজার থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা। থানচি থেকে রেমাক্রি নৌকায় যাওয়া-আসা, ভাড়া চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
থাকা: থানচি, তিন্দু বা রেমাক্রি বাজারে কাঠের ঘরে থাকা যাবে। থাকার জন্য টাকা লাগবে না, তবে খাওয়ার জন্য প্রতি বেলায় জনপ্রতি লাগবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া গাইডের সহযোগিতায় আদিবাসী গ্রামেও থাকা যেতে পারে।

Source:

Prothom Alo


নাফাখুম...... বাংলাদেশের নায়েগ্রা!



নাফাখুম

মারমা ভাষায় 'খুম' মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম..... 'নাফাখুম'। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট....প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়... প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই। পানি প্রবাহের ভলিউমের দিক থেকে সম্ভবতঃ নাফাখুম-ই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। আমার দেশে এত সুন্দর একটা জলপ্রপাত....অথচ আমরা খুব কম জন-ই এই জলপ্রপাতটা সম্মন্ধে জানি!



নাফাখুম (আপস্ট্রীম থেকে তোলা)
নাফাখুমের পড়ন্ত জলের ধারার নীচে গিয়ে বসার সুযোগ রয়েছে। আমার-আপনার জন্য বিষয়টা বেশ রিস্কি হলেও পাহাড়ীরা জলপ্রপাতের পিছনে বসে অনায়াসে মাছ শিকার করে। এক ধরনের উড়ুক্কু মাছ (স্থানীয় ভাষায় মাছটির নাম নাতিং মাছ) উজান ঠেলে এসে নাফাখুমে বাধাপ্রাপ্ত হয়, লাফ দিয়ে এই প্রপাত-টা আর ক্রস করতে পারেনা....গিয়ে পড়ে জলপ্রপাতের ভিতরে ছোট্ট একটা গুহায়। অনায়াসে সেখান থেকে মাছ সংগ্রহ করে স্থানীয় পাহাড়ীরা।


রেমাক্রি বাজার (নদী থেকে তোলা)
রেমাক্রি বাজার থেকে দুইভাবে নাফাখুম-এ যাওয়া যায়। এক ঘন্টা উঁচু-নীচু পাহাড়ী পথ মাড়িয়ে(পাহাড় ডিঙিয়ে) তারপর রেমাক্রি খালের পাড় ধরে বাকিটা হেঁটে চলা। এই পথে গেলে নাফাখুমে পৌঁছাতে আপনার সময় লাগবে চার ঘন্টা। রেমাক্রি খাল ক্রস করতে হবে তিন বার, যার মধ্যে শেষবার আপনাকে সাঁতার পানি পেরুতে হবে। আপনি পাহাড় না ডিঙিয়ে গোটা পথই রেমাক্রি খালের পাশ দিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে নৌকা করে রেমাক্রি খালের মুখে (যেখানে রেমাক্রি খাল সাঙ্গুতে পড়েছে, রেমাক্রিখুম) যেতে হবে আপনাকে...তারপর খালের পাড় দিয়ে হাঁটা পথে নাফাখুম বরাবর। এই পথে আপনাকে চার বার খালটি ক্রস করতে হবে...তবে সময় লাগবে তিন ঘন্টা। আমি আপনাকে দ্বিতীয় পথেই যেতে পরামর্শ দেব...এতে আপনার সময় ও এনার্জী দু'টোই ব্যয় হবে কম। আর শীতের দিনে গেলে খাল ক্রস করার ঝামেলাই নেই.... গোটাটাই আপনি ঝিরিপথ দিয়ে হেঁটে যেতে পারবেন। তবে শীতকালে নাফাখুম-এর এই পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ হবেনা.... পানি প্রবাহ অনেক কমে যাবে তখন।

রেমাক্রিখুম-টাও খুব সুন্দর! রেমাক্রি বাজারের কাছেই এই 'রেমাক্রি খুম'। রেমাক্রি খাল যেখানে এসে সাঙ্গু নদীতে পড়েছে.... সেটাই রেমাক্রি খুম।


রেমাক্রিখুম
পাঁচ-ছয় ফুট উপর থেকে কয়েকটি ধাপে পানি পড়ছে এই জলপ্রপাতে। এ'টি অনেক চওড়া। এই জলপ্রপাতটিও আপনাকে মুগ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। তিন্দু থেকে রেমাক্রি যাবার পথেই চোখে পড়বে এই রেমাক্রিখুম।


রেমাক্রিখুম
সাম্প্রতিক সময়ে অনেক ব্লগার বান্দরবানের থানচি উপজেলার তিন্দু, বড়পাথর, রেমাক্রি ঘুরে এসেছেন... চমৎকার সব ছবিসহ অনেকে পোস্ট-ও দিয়েছেন। বিস্তারিত না গিয়ে আমি শুধু কিছু তথ্য শেয়ার করছি এখানে....


নীলগিরি
১. বান্দরবান শহর থেকে থানচি উপজেলা (বান্দরবান জেলার সর্বদক্ষিণের উপজেলা) সদরের দূরত্ব ৮২ কিঃমিঃ। রিজার্ভ চাঁদের গাড়ীতে বান্দরবান থেকে থানচি যেতে সময় লাগবে ৩ ঘন্টা, ভাড়া নেবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। পথে চিম্বুক আর নীলগিরিতে নেমে কিছু ছবি তোলার ইচ্ছে থাকলে সময় কিছুটা বেশী লেগে যেতে পারে।

তিন্দু (সাঙ্গুর পাড়ে)


তীব্র স্রোত ঠেলে উজানে যাবার চেষ্টা
২. বর্ষায় ইঞ্জিনবোটে থানচি থেকে তিন্দু যেতে সময় লাগবে আড়াই ঘন্টা। তিন্দু থেকে রেমাক্রি যেতে লাগবে আরও আড়াই ঘন্টা। এই পাঁচ ঘন্টার নৌ-পথে আপনি উজান ঠেলে উপরের দিকে উঠতে থাকবেন আর ভার্টিকেল ডিষ্টেন্স কভার করবেন প্রায় ৫০ মিটার । শীতের সময় ইঞ্জিন বোট চলার মত নদীতে যথেষ্ট গভীরতা থাকেনা...তখন ঠ্যালা নৌকাই একমাত্র বাহন। বর্ষা মৌসুমে তিন দিনের জন্য ইঞ্জিনবোটের ভাড়া পড়বে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর শীত মৌসুমে ঠ্যালা-নৌকার ভাড়া পড়বে প্রতি দিনের জন্য ১০০০ টাকা।

সাঙ্গু নদীর উজানে হঠাৎ এরকম স্টেপ-ডাউন পাবেন প্রচুর
৩. থানচি থেকে যত উজানে যাবেন (দক্ষিণে).... নদীর স্লোপ তত বাড়তে থাকবে। গোটা নদীপথেই একটা জেন্টেল স্লোপ-তো আছেই...তার উপরে মাঝে মাঝেই আছে ১ ফুট থেকে ১ মিটার পর্যন্ত খাড়া স্টেপ-আপ। আমি রেমাক্রি ছাড়িয়েও ছোট মওদক পর্যন্ত গেছি। কিন্তু তিন্দু থেকে রেমাক্রি পর্যন্ত নদীপথ-টুকুই বেশী খরস্রোতা ও একটু ঝুঁকিপূর্ণ।


যখন আমরা বড়পাথর অতিক্রম করছি
৪. ঢালু পাহাড়ী নদী খরস্রোতা হওয়াই স্বভাবিক... বর্ষায় সাঙ্গুও সেইরকম খরস্রোতা। তবে ভয় পাবার কিছু নেই। নৌকার মাঝিরা যথেষ্ট স্কীল বলেই মনে হলো। দু' একটা দূর্ঘটনার গল্প হয়তো শুনবেন.... কিন্তু আমি ভয়ের কিছু দেখিনি, বরং ফেরার সময় রাফটিং-এর একটা মজা উপভোগ করেছি। থাকা-খাওয়ার কিছুটা অসুবিধা মেনে নিলে এমনকি এ্যডভেঞ্চার প্রিয় মেয়েরাও অনায়াসে রেমাক্রি পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারবেন।


চমৎকার সুস্বাদু চাঁপা কলা
৫. থানচি থেকে নৌকায় উঠার সময় মাত্র ১০০ টাকায় এইরকম এক কাঁদি চাঁপা কলা নৌকায় তুলে নিলে.... পথে বেশ কাজে লাগবে।
৬. হাতি পোকার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য এন্টি মসক্যুইটো ক্রীম নিতে ভুলবেন না।


রেমাক্রি রেস্ট হাউজের বারান্দায়... ধুম ঘুম!
৭. রেমাক্রি পর্যন্ত যদি যান... তবে এইভাবে ঘুমিয়ে সময় না কাটিয়ে একটু কষ্ট করে 'নাফাখুম' দেখে আসতে ভুলবেন না। হাতে সময় থাকলে ব্যাটকেভ বা বাঁদূর গুহা-টাও দেখে আ কোন সময়সতে পারেন, যদিও আমরা ব্যাটকেভ দেখে আসার সময় করতে পারিনি।
৮. আর্মি বা বিডিআর-এর রেফারেন্স থাকলে তিন্দু ও রেমাক্রিতে বিডিআর-এর আতিথেয়তা পেতে কষ্ট হবেনা.... আর বিডিআর-এর আতিথেয়তা পেলে থাকা-খাওয়ার সম্ভাব্য সর্বোত্তম ব্যবস্থা-টা সহজেই মিলে যাবে। সাথে উপরি পাবেন নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা...যদিও নিরাপত্তা জনিত কোন অসুবিধা আমার চোখে পড়েনি।
৯. বিডিআর ক্যাম্পে থাকার ব্যবস্থা না করতে পারলেও কোন অসুবিধা নেই। নিশ্চিন্ত মনে বছরের যে কোন সময় ৪ থেকে ৬ জনের গ্রুপ নিয়ে চলে যান তিন্দু, রেমাক্রি। মারমাদের বাঁশ-কাঠের বাড়ীতে অনায়াসে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে আপনাদের। মারমাদের প্রায় প্রতিটি বাড়ীতেই খুব অল্প টাকায় এমন থাকা-খাওয়ার সুবিধে রয়েছে। তিনবেলা খাওয়ার খরচ পরবে জনপ্রতি ২০০ টাকা, আর থাকা ফ্রি। তবে যে বাড়ীতে ফ্রি থাকবেন... খেতে হবে তাঁর দাওয়ায় বসেই।
১০. থানচি পর্যন্ত আপনার টেলিটক মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাবেন। তিন্দু গিয়ে আপনার মোবাইলে নেটওয়ার্ক না থাকলেও আপনি একেবারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবেন না। মারমাদের দোকান থেকে বাঁশের উপর এ্যন্টেনা লাগানো সেট থেকে চাইলে বাইরের পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। কিন্তু রেমাক্রি পৌঁছালে আপনি একেবারেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন।
তাহলে একবার সুযোগ করে ঘুরে আসুন তিন্দু, বড়পাথর, রেমাক্রি, নাফাখুম.... উপভোগ করে আসুন ভিন্ন এক থ্রিলিং প্রকৃতি। স্যাটিসফেকশন গ্যারান্টেড!



সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০১

By নীল ভোমরা

ঘুরে আসুন সুন্দরবনে:

ঘুরে আসুন সুন্দরবনে:

সুন্দরবনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন রহস্য ও রোমাঞ্চঘেরা। একদিকে অ্যাডভেঞ্চার অন্যদিকে ভয় ও শিহরণ। জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ। প্রকৃতির অকৃপণ হাতের সৃষ্টি। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, সাপ, বানর, মাছসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী পৃথিবী বিখ্যাত।

পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের আকর্ষণ তাই দুর্নিবার। পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম হতে পারে সুন্দরবন। আর তাই ভোটিংয়ে বার বার সুন্দরবনের নাম চলে আসছে শীর্ষ তালিকায়।

কী আছে সুন্দরবনে?
কী নেই সুন্দরবনে? জগদ্বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বনমোরগ, শূকর, হরেক রকম বানর, অজগর, বহু প্রজাতির পাখি, অপরূপ লতাগুল্ম ও বৃক্ষরাজি নদীতে নানা প্রজাতির মাছ রয়েছে। গাছের মধ্যে সুন্দরী, কেওড়া, গরান, বাইন, গেওয়া, পশুর, গোলপাতা, হেতাল, কাঁকড়া, ঝানা, সিংড়া, খলসা ইত্যাদি।

নদীতে নানা প্রজাতির মাঝে কুমির ও ভয়াল অজগরসহ প্রায় ৩৩ প্রজাতির সরীসৃপ বাস করে সুন্দরবনে। এছাড়াও শীতকালে অসংখ্য অতিথি পাখির আগমন ঘটে সুন্দরবন অঞ্চলে। প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া সুন্দরবনের এই অপরূপ সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। সুন্দরবনে সুন্দরী গাছের প্রাচুর্য থেকে বা এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে এর নামকরণ করা হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।

সুন্দরবন মানুষের দেওয়া নাম। বাংলাদেশের দক্ষিণসীমায় অবস্থিত সমুদ্রকূলবর্তী জঙ্গলাকীর্ণ ভূভাগই সুন্দরবন। সুন্দরবনের নরখাদক নামের বইতে বলা হয়েছে প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে গাঙ্গেয় বদ্বীপে এ বনের সৃষ্টি। নিকোলাসপাই মেন্টা নামের বিখ্যাত একজন পর্যটকের ভ্রমণ কাহিনীতেও এ বনের নাম উল্লেখ রয়েছে

সুন্দরবনের সীমা ও অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে খুলনা-বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার সাতটি থানা এলাকায় সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার। বঙ্গোপসাগরের তীরে ৮৯ ডিগ্রি থেকে ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ ও ২১.০৩ ডিগ্রি হতে ২২.৩০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশের মাঝে সুন্দরবন অবস্থিত

এর মধ্যে বন প্রায় ৪০১৬.৮৫ বর্গ কিলোমিটার, নদী খাল ও অন্যান্য চ্যানেল ১৭৫৬ বর্গ কিলোমিটার। সুন্দরবনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে রায়মঙ্গল, হাড়িয়াডাঙ্গা ও কালিন্দি নদী। উত্তরে বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা, পূর্বে ধলেশ্বর ও হরিণঘাটা নদী, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলা।

সুন্দরবনের আকর্ষণ
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। ক্যামেরার সাহায্যে বন্যজন্তুর ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ ছাড়াও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর দর্শন সহজলভ্য। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচ্য।

জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালদের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার সুযোগ পেতে পারেন অনায়াসেই। রাতে সুন্দরবনের শান্ত স্নিগ্ধ রূপ আর নদী সমুদ্রের সৌন্দর্য অপরূপ। এসব ছাড়াও সুন্দরবনের আশপাশে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন আকর্ষক স্থানসমূহ।

হিরণ পয়েন্ট
হিরণ পয়েন্ট পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম স্থান। ভাগ্যে থাকলে এখান থেকে বাঘ, হরিণ ও নানাজাতের পশুপাখি দর্শনের সুযোগ পেতে পারেন। এখানে বানর, কুমির ছাড়াও নানা প্রজাতির পাখি দেখতে পারবেন। প্রকৃতির নানা সৌন্দর্য যেন ছড়িয়ে রয়েছে এর আশপাশে।

কটকা-কচিখালি
কচিখালি এলাকার সংলগ্ন সমুদ্র তীরবর্তী অংশের তৃণভূমি জাতীয় বনভূমি ১২০ বর্গমাইল এলাকায় কটকা-কচিখালি অভয়ারণ্য অবস্থিত। এই বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে প্রায় সারা বছর বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী নির্ভয়ে বিচরণ করে। এখানে বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রয়েছে।

দুবলার চর
এটি একটি নয়নাভিরাম দ্বীপ। এখানে চিত্রল হরিণের দল ঝাঁকে ঝাঁকে চরতে দেখা যায়। এই দ্বীপকে দুবলার ট্যাকও বলা হয়। দুবলার মাটি খুঁড়লে মিষ্টি পানি পাওয়া যায়। দুবলার চর কটকা কিংবা হিরণ পয়েন্টের চেয়ে আরও মনোরম জায়গা।

কার্তিক মাসে এখানে মেলা বসে। এখানে এ সময় প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। এই মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা দেবতা নীলকমল ও গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করে থাকে।

অভয়ারণ্য
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রতিবছর সুন্দরবনের অনেক দুষ্প্রাপ্য প্রাণী সম্পদের বিলুপ্তির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার গাছ ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি ঘটেছে। বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ বংশবিস্তার ও নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে বনের নির্দিষ্ট কিছু অংশকে সরকার অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বর্তমানে সুন্দরবনে এরূপ তিনটি অভয়ারণ্য রয়েছে।

এগুলো হলো কটকা রুচিখালি অভয়ারণ্য, নীলকমল অভয়ারণ্য ও পশ্চিম অভয়ারণ্য। নীলকমল অভয়ারণ্য হিরণ পয়েন্ট ও নীলকমল এলাকায় পর্যটকদের খুবই আকর্ষণীয় স্থান। ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ এ এলাকায় বিচরণ করে। ১১০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে এটি বিস্তৃত। মংলা বন্দর থেকে এখনে যেতে ৬/৭ ঘণ্টা সময় লাগে।

কেওড়াসুটি নামক স্থানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রয়েছে। সুন্দরবনের পশ্চিমে ২৪৬ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে পশ্চিম অভয়ারণ্যটির স্থান নির্দিষ্ট রয়েছে। এখানে ভালোমানের কোনো বিশ্রামাগার না থাকায় শীতকালে তেমন লোক সমাগম হয় না। ফলে এই সমুদ্রতটে অসংখ্য বন্যপ্রাণী নির্ভয়ে বিচরণ করে।

কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সরাসরি খুলনা দূরপাল্লার পরিবহন বাসে। এরপর মংলা বন্দর বা খুলনা নতুন বাজার লঞ্চঘাট থেকে সুন্দরবন যাওয়া যায়। সুন্দরবন যেতে প্রাইভেট মোটর, লঞ্চ, স্পিড বোট, নৌবা বা মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যান ভাড়া করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
ঢাকা থেকে প্লেনে যশোর, সেখান থেকে সরাসরি খুলনা কিংবা সদরঘাট থেকে গাজী ও শাহীন বেলায়েত নামক রকেটে খুলনা যাতায়াত করা হয়। বাসে ঢাকা থেকে খুলনায় যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি আধুনিক ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন বাস চালু আছে।

কোথায় থাকবেন
হিরণ পয়েন্টে মংলাপোর্ট কর্তৃপক্ষের আরামদায়ক ত্রিতল বিশিষ্ট রেস্টহাউস রয়েছে যেখানে ৮ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। অগ্রিম প্রদান সাপেক্ষে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এছাড়া ট্যুর অপারেটর নিজেদের উদ্যোগেই থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন।

পানীয় জল
খুলনা ও এর দক্ষিণাঞ্চলের সব পানি লবণাক্ত। তাই পূর্বেই পর্যাপ্ত সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখা জরুরি।

প্রবেশাধিকার
সুন্দরবনে ভ্রমণ করতে হলে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার বাগেরহাট বা ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার খুলনা বরাবরে দরখাস্ত করে অনুমতি নিতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করতে হয়।

ক্যামেরা ও ট্যুরিস্ট ফি
স্টিল ক্যামেরা (দেশী) ২০ টাকা, বিদেশীদের জন্য ৬০ টাকা প্রতিদিন। ভিডিও ক্যামেরা (অভ্যন্তরীণ) ১০০ টাকা, বিদেশীদের জন্য ২০০ টাকা প্রতিদিন। প্রফেশনাল ফটোগ্রাফির জন্য নিউজ ও টিভি মিডিয়া স্টিল (অভ্যন্তরীণ) ২০০ টাকা বিদেশীদের জন্য ৭০০ টাকা প্রতিদিন। ক্যামেরা ক্রু (অভ্যন্তরীণ) ৫০ টাকা বিদেশীদের জন্য ৭০০ টাকা প্রতিদিন।

যা নেবেন
ট্রাউজার, টি-শার্ট, শর্টস, ক্যানভাস সু, প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্পিলার তোয়ালে, টুথপেস্ট, ব্রাশ, শেভিং ক্রিম, সানস্ক্রিম, বাইনোকুলার, ক্যামেরা, ফিল্ম, টর্চ, ব্যাটারি, হ্যাট অথবা ক্যাপ। কোনো আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।

প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ-৭৬১৮৩০, ৭৬১০৫৬ রকেট স্টিমার রিজার্ভেশন (ঢাকা)- ৯৫৫৯৭৭৯ রকেট স্টিমার রিজার্ভেশন (খুলনা)- ৭২১৫৩২, ৭২৫৯৭৮ ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (খুলনা)-৭২০৬৬৫ বিমান বুকিং অফিস খুলনা-৭৩১০২০ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ-০৪১ ৭২০৪৪৪ সদর হাসপাতাল-০৪১ ৭২৩৪৩৩ হোটেল রয়েল-০৪১ ৭২১৬৩৮-৯, ০১৭১৮৬৭৯৯০০ পর্যটন মোটেল মংলা-০৪৬৬২, ৭৫১০০ হোটেল ক্যাসেল সালাম-০৪১ ৭৩০৭২৫, ০১৭১১৩৯৭৬০৭।

খরচ
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সরাসরি খুলনায় পৌঁছে প্রথমে মংলা। এরপর বোটে কিংবা ভাড়া করা লঞ্চে সুন্দরবন যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে ২ দিন ২ রাতের ভ্রমণে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গেলে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় ঘুরে আসা যায়। বেশ কয়েকটি ট্যুর অপারেটর সুন্দরবন ভ্রমণের ওপর প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজন করে থাকে। জেনে নিন ট্যুর অপারেটরদের কিছু তথ্য।

দ্য বেঙ্গল ট্যুরস
ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা ৪ রাত ৪ দিনের প্যাকেজ ট্যুরের খরচ নেবে ৯ হাজার টাকা, ফোন : ৮৬২৮৫৭৭। দ্য গাইড ট্যুরস লিমিটেড ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা তিন রাত ৪ দিনের জন্য নেবে ১০ হাজার টাকা, ফোন : ৯৮৮৬৯৮৩।

রিভার অ্যান্ড গ্রিন ট্যুরস
ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা ৪ রাত ৩ দিনের প্যাকেজ ট্যুর খরচ নেবে ৮ হাজার ৫০০ টাকা।

অবকাশ পর্যটন লিমিটেড
ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা ৪ রাত ৪ দিনের প্যাকেজ ট্যুরের খরচ নেবে জনপ্রতি ৮ হাজার ৫০০ টাকা। ভ্রমণের পূর্বে ভালোমতো জেনে যেকোনো ট্যুর অপারেটরকে বুকিং দিন। এবার শীত মৌসুমে বেরিয়ে পড়ুন পৃথিবীর অন্যতম দর্শনীয় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন দর্শনে।
Source: amaderbook.yolasite.com

Thursday, December 30, 2010

মাধবপুর থেকে মাধবকুণ্ড

মাধবপুর থেকে মাধবকুণ্ড

মাধবপুর থেকে মাধবকুণ্ড

মাধবপুর হ্রদে পৌঁছে বিস্ময়ে চোখ স্থির হয়ে যায়। এ যে নীল পদ্ম! একজন কবিতা আওড়ানো শুরু করলেন, ‘বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টি নীল পদ্ম…।’ গাইড শুধরে দিলেন এটা ঠিক ‘নীল পদ্ম’ নয়, ‘নীল শাপলা’। দলের সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ক্যামেরার ফ্রেমে স্মৃতি ধরে রাখতে। আমাদের গাইড জানালেন, ‘দেশে নীল শাপলা মাধবপুর ছাড়া অন্য কোথাও খুব একটা দেখা যায় না। এই নীল শাপলা দেখতে প্রতিদিন অনেক পর্যটক ভিড় জমায়।’ চারপাশে চা-বাগানের মধ্যে মাধবপুর যেন একটুকরো স্বর্গ। টলটলে লেকের পানি, চারপাশে চা-গাছ, বুনোফুল, নাম না জানা পাখির ডাক—সব মিলিয়ে উদাস করা সব মুহূর্ত।
ঈদের ছুটিতে আমাদের গন্তব্য ছিল শ্রীমঙ্গল—বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে জোগাড় করা হলো দর্শনীয় স্থানগুলোর ঠিকানা। কিন্তু এর অনেকগুলোরই অবস্থান শ্রীমঙ্গলের বাইরে। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত পড়েছে বড়লেখা উপজেলায়। মাধবপুর হ্রদ কমলগঞ্জে। লাউয়াছড়া বন শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ মিলিয়ে। আর পাখিদের অভয়ারণ্য ‘বাইক্কা বিল’ পড়েছে শ্রীমঙ্গলে। সবাই নিশ্চিত করলেন, শ্রীমঙ্গলে আস্তানা গাঁড়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
শ্রীমঙ্গলজুড়ে বাগানের পর বাগান চা-গাছের সারি। শ্রীমঙ্গল পৌঁছে সহজেই আবহাওয়ার বদলটা টের পাওয়া গেল। কিছুটা বিশ্রামের পর ঠিক করা হলো তিন দিনের ‘মহাপরিকল্পনা’। ঠিক হলো, প্রথম দিনই যাব মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে। দ্বিতীয় দিন লাউয়াছড়া বন, মাগুরছড়া পুঞ্জি ও মাধবপুর লেক। আর তৃতীয় দিন বাইক্কা বিল ও সিতেশ বাবুর মিনি চিড়িয়াখানায়। তিন দিনের জন্য একটা গাড়ি রিজার্ভ করা হলো।
শ্রীমঙ্গলে আমরা ছিলাম চা-গবেষণাকেন্দ্রের রেস্ট হাউসে। প্রথম দিন আমাদের চোখ মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের দিকে। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মাধবকুণ্ডের দূরত্ব ৯৩ কিলোমিটার। সময় লাগল ঘণ্টা দুয়েক। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমরা পৌঁছালাম মাধবকুণ্ডে। স্রোতস্বিনী জলের কলকল ধ্বনি শোনা যাচ্ছে কিছুটা দূর থেকেই। প্রায় ২০০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে তীব্রবেগে সশব্দে নেমে আসছে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের ধারা। জলতরঙ্গের আরও কাছে এগিয়ে যাই। নিরাপত্তারক্ষীর ‘না’। কাছে যেতে মানা—দুর্ঘটনা ঠেকাতে বেষ্টনী দিয়ে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সময় গড়িয়ে যায়। জলপ্রপাতের সঙ্গে মেশে বিকেলের আলোর খেলা। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই রওনা দিই শ্রীমঙ্গলের পথে।
পরদিনের জন্যও গাড়ি ঠিকঠাক। গন্তব্য লাউয়াছড়া। শ্রীমঙ্গল থেকে লাউয়াছড়ার দূরত্ব মাত্র আট কিলোমিটার। সময় লাগল মিনিট বিশেক। এবার লাউয়াছড়ায় সবুজের অরণ্যে হারিয়ে যাওয়ার সুখ। এত প্রাণবৈচিত্র্যে ভরা বন বাংলাদেশের আর কোথাও চোখে পড়ে না। এ বনের আয়তন এক হাজার ২৫০ হেক্টর। সারা দিন ঘুরেও শেষ করা যায় না। তবে এক ঘণ্টায় সংক্ষেপে কীভাবে ঘুরে আসা যাবে, তারও একটা রুট আছে। লাউয়াছড়া বনে চোখে পড়বে বানর, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, বনবিড়াল, কাঠবিড়ালিসহ নানা প্রজাতির প্রাণী। কখনো কখনো দেখা মেলে মায়াহরিণ আর শজারুর।
লাউয়াছাড়া উদ্যান থেকে এবার আমরা আদিবাসী খাসি (খাসিয়া) অধ্যুষিত মাগুরছড়া পুঞ্জিতে গেলাম। মাতৃতান্ত্রিক খাসি পরিবারের মেয়েরাই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। খাসিপল্লিতে দেখা গেল, খাসি মেয়েরা অসম্ভব দ্রুততায় পান সাজিয়ে সাজিয়ে পালা করছে। পাইকার ব্যবসায়ীরা ঘরে ঘরে এসে পান কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখান থেকে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধের দূরত্ব ১২ কিলোমিটারের মতো। মুক্তিযুদ্ধের এই বীর যোদ্ধাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিরে আসতে আসতেই দুপুর গড়িয়ে বিকেল।
তৃতীয় দিন আমাদের গন্তব্য ‘বাইক্কা বিল’। শ্রীমঙ্গল থেকে বাইক্কা বিলের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। হাইল হাওরের অন্তর্ভুক্ত বাইক্কা বিল পাখির অভয়ারণ্য। নানা প্রজাতির হাজারও পাখি রয়েছে এখানে। ছোট্ট নৌকায় বিল পরিদর্শনের সময় কোলে এসে বসবে কত যে পাখি! ওরাও জেনে গেছে, এরা শিকারি নন, পর্যটক। সারা দিনই এখানে কাটাতে ইচ্ছা করবে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে, তাই ফিরতে হয়।
আমাদের রেস্ট হাউসের চারপাশে চা-বাগান। বিকেলে সিতেশ বাবুর মিনি চিড়িয়াখানায় একটু ঢুঁ দিয়ে আমরা চলে যাই ‘নীলকণ্ঠ চায়ের দোকানে’। এখানে নানা রঙের চা পাওয়া যায়। দুই, তিন, চার থেকে সাত লেয়ার।
শ্রীমঙ্গলে এলাম আর মণিপুরি শাড়ি কেনা হবে না, তা কী হয়। নীলকণ্ঠ চায়ের দোকানের কাছেই মণিপুরি আদিবাসীদের বেশ কয়েকটি শোরুম রয়েছে। মণিপুরি শাড়ি, কামিজ, ওড়না, ফতুয়া কেনার ধুম পড়ে গেল পুরো দলে।
রাতে ফিরে ‘সমাপনী আড্ডা’। ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল। মধ্যরাত এগিয়ে আসে। রাতের ট্রেনের স্লিপিং বার্থে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পরদিন সকালে পৌঁছালাম ঢাকায়। ঢাকা তখনো ফাঁকা। এবং সুন্দর।

কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন
ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে শ্রীমঙ্গলে (মৌলভীবাজার) আধাঘণ্টা পর পর বাস রয়েছে। নন-এসির মধ্যে শ্যামলী পরিবহন ও হানিফ পরিবহন। এ ছাড়া টিআর ট্রাভেলসের এসি বাস রয়েছে। বাসে ঢাকা থেকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌঁছাতে সময় লাগবে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টার মতো।
ট্রেনে যাওয়ারও পথ রয়েছে। উপবন এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস। তবে সময় একটু বেশি লাগবে। ছয় থেকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা। ঈদের মৌসুমে ট্রেনের টিকিট অবশ্যই আগাম কেটে রাখা উচিত।
শ্রীমঙ্গলে থাকার অনেক ধরনের ভালো বন্দোবস্ত রয়েছে। চা-গবেষণা ইনস্টিটিউটের রেস্ট হাউস, টি-রিসোর্ট। টি-রিসোর্টে একটি বাংলো পুরোটাই ভাড়া নিতে হয়। শ্রীমঙ্গল শহরে মানসম্পন্ন অনেক হোটেল রয়েছে। টি-টাউন রেস্ট হাউস, সন্ধ্যা হোটেল, এলাহী প্লাজা, হোটেল তাজমহল, হোটেল বিরতি, হোটেল রহমানিয়া উল্লেখযোগ্য। ভাড়াও নাগালের মধ্যেই। এ ছাড়া দলের সদস্যসংখ্যা বেশি হলে তিন-চার দিনের জন্য বাড়িও ভাড়া নিতে পারেন। এ ছাড়া কমলগঞ্জেও রয়েছে হিড বাংলাদেশ নামের একটা উন্নয়ন সংস্থার রেস্ট হাউস। ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গল যাওয়ার আগে হোটেল বা বাংলোর বুকিং নিশ্চিত করে যাওয়া উচিত।

ফিরোজ জামান চৌধুরী
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২৪, ২০১০

পর্যটকের পদভারে মুখরিত মাধবকুণ্ড

০০০ বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা

বড়লেখার মাধবকুণ্ডে ইংরেজি নববর্ষের দ্বিতীয় দিনেও হাজার হাজার পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সৌন্দর্য পিপাসুরা মাধবকুণ্ডে জড়ো হতে থাকেন। বেলা যত বাড়তে থাকে পর্যটকদের ভিড় ও জনসমুদ্রে রূপ নেয়। পিকনিক স্পট ও ইকোপার্ক মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের নিচে পর্যটকদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না।

বড়লেখা-কুলাউড়ার সহকারী পুলিশ সুপার আহাদুজ্জামান ইত্তেফাককে জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পুলিশ বিশেষ নজরদারি করায় পর্যটকরা কম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পর্যটকরা জানান, দেশের একমাত্র জলপ্রপাত মাধবকুণ্ডকে যে রকম সাজিয়ে তোলা দরকার সে রকম হচ্ছে না। নতুন সাজে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তুললে শুধু নতুন বছরের এক দিন নয়, প্রতিদিনই দেশ-বিদেশ থেকে হাজারও পর্যটকের পদভারে মুখরিত হবে।
Source: Daily Ittefaq, 6th january, 2011

Sunday, December 26, 2010

সাগরকন্যা কুয়াকাটায়

সাগরকন্যা কুয়াকাটায়এক দশক ধরে সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেছে। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখা যায় আর সেই স্থানটি হলো বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত পর্যটনকেন্দ্র সাগরকন্যা কুয়াকাটা।
সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক কুয়াকাটায় আসেন। ঢাকা থেকে দৌলতদিয়া হয়ে কুয়াকাটার দূরত্ব ৩৮০ কি. মি., মাওয়া হয়ে এলে এর দূরত্ব ১০০ কি. মি. কমে যায়। তবে সড়ক ও নৌপথ উভয় পথই ব্যবহার করা যায় কুয়াকাটা আসতে। খুলনা-যশোর থেকে বিআরটিসি এবং ঢাকা থেকে সৌদিয়া পরিবহন, দ্রুতি পরিবহন, খানজাহান আলী পরিবহন, অনন্ত পরিবহন, সুগন্ধা পরিবহন, মেঘনা পরিবহন, সাকুরা পরিবহন, ডিসকভারী পরিবহন, সুরভী পরিবহনের দূরপাল্লার বাসগুলো সায়েদাবাদ কিংবা গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এছাড়া ও রেন্ট-এ কারেও এখানে আসা যায়। তবে বরিশালের পর সড়কপথে কুয়াকাটা পেঁৗছতে দবদবিয়া, লেবুখালী, কলাপাড়া, হাজীপুর ও মহিপুর এ ৫টি ফেরি পার হতে হবে। যেসব পর্যটক ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আসতে চান তারা ঢাকা সদরঘাট থেকে এমবি আঁচল ৬, পারাবত, সুন্দরবন, দ্বীপরাজ, সুরভী, কীর্তন খোলা, সৈকত, পিন্স অব বরিশালে চড়ে ভোর ৫টার মধ্যে বরিশাল, পটুয়াখালী কিংবা কলাপাড়ায় নামতে পারেন। প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য প্রতি কেবিন ভাড়া ৫ থেকে ৬০০ টাকা, ২য় শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য জনপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ভাড়া। লঞ্চযোগে আসতে হলে পর্যটকরা বরিশাল, পটুয়াখালী ও কলাপাড়া নেমে বাসে কুয়াকাটা আসতে পারেন। অন্যদিকে গাড়িযোগে কুয়াকাটা আসতে চাইলে গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে কুয়াকাটাগামী গাড়িতে উঠতে পারেন। ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা। কুয়াকাটায় পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে পর্যটন হলিডে হোমস্ মোটেল। এছাড়া জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, সওজ ডাক বাংলো এবং এলজিইডি'র বাংলো রয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠেছে প্রায় ৫০টি আবাসিক হোটেল। এর মধ্যে মানসম্মত হোটেলগুলো হচ্ছে_ কুয়াকাটা ইন্টারন্যাশনাল, স্কাই প্যালেস, নীলাঞ্জনা, সী-ভিউ, গোল্ডেন প্যালেস, বীসভেলী, গ্রেভার ইন, সাগরকন্যা, বনানী প্যালেস ও আনন্দবাড়ি এসব হোটেলে ননএসি ৪০০-৬০০ টাকা ভাড়া। এসি ভিআইপি রুম পাওয়া যায় ১ হাজার ২০০, ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় । এসব রুম পর্যটকরা ফোন দিয়ে অগ্রিম বুকিং নিতে পারেন। কুয়াকাটায় দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখতে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গাইড নিতে পারেন। মানসম্মত খাবারের জন্য কুয়াকাটা ইন্টারন্যাশনাল, স্কাই প্যালেস এবং নীলাঞ্জনা হোটেলেও খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া খাবারঘর-৫, রাজধানী হোটেল, আপ্যায়ন হোটেল, খেপুপাড়া হোটেলসহ বেশকটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর বাইরে অনেকগুলো খাবার হোটেল রয়েছে। যেমন রুচিতা হোটেল, বরিশাল হোটেল, হোটেল মহিপুর, হোটেল কুয়াকাটা ইত্যাদি। এসব হোটেলে কম খরচে উন্নতমানের খাবার পাওয়া যায়। সমুদ্র ভ্রমণে স্পিডবোট ও ছোট ছোট জাহাজ রয়েছে এ কুয়াকাটায়। এসব স্পিডবোট, জাহাজ ও ট্রলারে চড়ে সুন্দরবনের পূর্বাংশ ট্যাংরাগিরির ফাতরার বন, সোনার চর, হাসের চর, কটকা ও গঙ্গামতি লেক ইত্যাদি স্থানে ভ্রমণ করা যায়। সুন্দরবন এবং গভীর সমুদ্রে এসব নৌযান দিয়ে ভ্রমণ করা যায়। জনপ্রতি ১০০-৫০০ টাকা নেওয়া হয়। সমুদ্র সৈকতে রয়েছে অসংখ্য মোটরসাইকেল ও ভ্যান। এ মোটরসাইকেলে চড়ে সমুদ্রের ১৮ কি. মি. সি-বীচ, মিস্ত্রিপাড়ার বৌদ্ধ বিহার, মশ্বিপাড়া সৎসংঘের আশ্রম, কুয়াকাটা ইকোপার্ক, শুঁটকিপল্লী, গঙ্গামতির ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ও বিভিন্ন রাখাইনপাড়া ঘুরে দেখা যায়। এজন্য মোটরসাইকেলে জনপ্রতি ১০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ভ্যানে ৪ জনে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা দিতে হয়।
উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া

Thursday, December 23, 2010

Escapade at Coral Blue Resort, COX'S BAZAR

A new beginning:
Places for an adventure have become increasingly rare. Sometimes our minds and bodies require that break, that true escape to get away from the urban chaos, secluded enough to promise peace and relaxation.

If you have an image in your mind of deep, emerald waters and waves, a unique tent resort replacing concrete walls, pure breeze, adventurous scuba diving in the water kingdom, leisurely dinghy rides, psychedelic starry nights complemented by no electricity, earth stove cooked food and a complete organic atmosphere to delight all your idle senses, then Coral Blue Resort at the farthest end of St Martin's Island is the answer.

Recreation and relaxation:
So, elevate your spirits and celebrate the breathtaking surroundings of this beautiful establishment. Upon reaching the 10 acres land resort, one would be greeted with the signature menu green coconut water and fresh seasonal fruits.

The breakfast, lunch and dinner menus are equally gorgeous whether you order fresh fish deshi style curry, barbequed proteins or colourful vegetables, because they all are either cooked on clay stoves using firewood or deliciously grilled.

Once that happens, all the earthly juice, coal aroma or firewood flavour seeps in to the tender meaty portions ready to melt in your mouth and captivate your taste buds; one serving is certainly not enough.

Then sit, relax and enjoy the dishes in their garden dining experience with the view of nature, the tents in front and the majestic sea on your right. Kudos to the Chief Chef Khalil as the stoves alone could never do the magic.

Once you had the first set of meals, the deep emerald waters and evocative waves will lure you for a dive unforgettable. Unlike other sea beaches in the country, here, you will find clear water, fish playing and corals placed as if a reef lounge has been set for you to bask in the splendid sunlight.

During the night, the whole resort is often illuminated with fire torches and local musicians are asked to play gigs from their hearts on the centre stage. The whole place suddenly springs to a tuneful life and looks like a gleaming entity of peace and passion.

How to reach:
There is now a Saint Martin's Bus Service leaving from Kakrail which will take you straight to Teknaf dock yard, from where the bigger ferries and trawlers leave for the coral island. Take another 30 minutes trawler ride to the resort and before that make sure your route is well organised and booking maintained with the resort's friendly operations manager K M Kabiruzzaman Kakon.

The man behind the shades:
Reazuddin Mosharaf, Managing Director of Windmill Ltd started this resort concern in 2007 to set a unique, tent resort trend in the hospitality sector of the country. The idea became tremendously successful and widely applauded by travel and adventure loving people. The resort now consists of 12 tents that can accommodate two large beds for four individuals in each tent.

The memory remains:
Everyone leaving the resort expresses a sense of peaceful satisfaction. Most of them mellow down and smile more than before. For myself, I was reminiscing about the instance when I was relaxing in the caring lap of a big coral while a smaller coral in the front became my footrest the feeling was such as if I'm the king of a fictional cult of Disney Animation while the whole sea community was busy building the world as a better place.

Contacts: K M Kabiruzzaman Kakon # 01717-000-044.
By Faizul Khan Tanim
Photos resort: Din Muhammad Shibly,
Photos birds: Zamiruddin Faisal
Photo snorkel: Khan Mohd. Eman

Lonely hills, deadly hunters, Bandarban, BD

Lonely hills, deadly hunters

Early morning clouds press in at Thindu, about six hours' boat ride from the last outpost inhabited by Bangalees at Thanchi. The hills and the jungle are the perfect habitat for wildlife. The clouds also signify thriving evergreen rainforest. As forests vanish, so will the cloud formation, left. Photo courtesy: Sanjida Jui, A man proudly displays his kill at Thindu, right. Courtesy : Bipesh Raj

In the gathering darkness of the fast-falling evening in the valley, a man appears with a monkey in one hand and a strange gun in the other.

As he climbs up the slope from the Sangu river and steps into the Tindu market square, people gather around him, appreciative of his prize. A single bullet had pierced the rhesus monkey's chest and come out his neck. Blood still drips down its ruddy coat.

The man displays the monkey for us to take snaps. His gun is primitive it is hard to believe that it can actually kill anything. A normal water pipe tied to a heavy stump of wood carved in the fashion of the stock of a shotgun. It is front-loaded you just thrust the gunpowder inside and put in a lead ball.

Tindu is a six-hour boat ride from Thanchi, the last outpost of Bandarban where any Bangalee people live. After that is wilderness just a fast-flowing river flushing through hills. Here, only hill people live; mainly Marmas.

Huge boulders block the river's way at bends, and the water roils. On the undulating hills, the real trees tall and straight are few. Most have been replaced by shrubs or slash-and-burn cultivation.

Through such landscapes we row another three hours to reach Remacri, a Marma neighbourhood further upstream. In the evening, a group of hunters appear with a barking deer. The villagers gather around, appreciating the kill.

In this harsh land, life is difficult but certainly not so desperate as to force these hunters to turn to wild animals. Both had chickens and pigs at home. One has a shop in the market. Still, they hunt regularly.

The Remacri man laughed when we asked him why he hunts when he does not have any shortage of protein sources. After all, life is harsh in these remote hills.

“My father did it. I do it too,” he said in broken Bangla.

Although rations have arrived and farming has taken a timid root, tradition and instincts persist. The laws prohibiting hunting make no sense in these villages. People just laugh when told a law makes it punishable to kill wildlife.

At Remacri, they said they kill one or two deer every day once the Jhum harvest is over. Monkeys, pheasants and red jungle fowl are hunted regularly. There is no check or balance. No one has any idea what the animal population is of deer, monkeys or anything for that matter. No one knows if any population is at a harvestable level.

But signs suggested the numbers are few. All along this nine-hour journey, we sighted only a single pair of cotton pigmy goose. They surely were new to this place to have escaped the eyes of the Marmas. There were a lot of wagtails and a few river lapwings, too. But they are not worth eating. We walked 22 kilometres to and around Nafakhum, yet found no hoof prints of deer or signs of monkeys.

Only at Tindu did we hear a deer at dusk, its call lonely and mysterious, as mists swirled around the hills in a mystical way. And at Remacri, we heard some holook gibbons calling from the mountains on the other side of the river.

Not all hope is lost for the wildlife in this wilderness. Dr Reza Khan, a long-time visitor to these forests and a nature lover, feels the introduction of eco-tourism holds promise. Offers to sight gibbons, deer and other wildlife for tourists would mean extra income for the hill people. They can be compensated for capping hunting sustainably.

“An effort to stop hunting was very successful at Kaeng Krachan National Park in Thailand where hunting by the ethnic groups was sending many species to extinction,” says Ronald Halder, a wildlife photographer. “Then an NGO took initiative to convince the hunters to build hides for photographers to snap wildlife. Now hunting has topped there and the ethnic people make more money by helping photographers.”

At Remacri, this also seems possible. Already, tourists are pouring in and bottled water has arrived. Some Marma offer stays at their shanties for Tk 50 a night and food at Tk 80 a meal. Boats are also available at Tk 2,500 a day.

But these are not organised efforts with any links to conservation. And without this, it would be a miracle if the gibbons lived to see many more dawns.

Wednesday, December 22, 2010

বেড়ানো : বিজয়ের মাসে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় জায়গা

বেড়ানো : বিজয়ের মাসে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় জায়গা

রাজীব পাল রনী
ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এ মাসেই অর্জিত হয় আমাদের বিজয় এবং স্বাধীনতা। প্রতি বছর এই মাসটি আমাদের মাঝে উজ্জীবিত করে তোলে স্বাধীনতার চেতনা। নতুন প্রজন্মের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তেমন জানেন না। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অনেকটা রূপকথার মতো। তাই এই ডিসেম্বর মাসে আপনার সন্তানকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলোতে। এই ডিসেম্বরে নতুন প্রজন্মের সন্তানদের নিয়ে যেতে পারেন জাদুঘর, বধ্যভূমি, স্মৃতিসৌধ অথবা মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যের কাছে ইতিহাস জানানোর জন্য। তাহলে হয়তো তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র কিছুটা হলেও ফুটে উঠবে। তাই বিজয়ের মাসে বেড়িয়ে আসতে পারেন নিচের জায়গাগুলোতে—
জাতীয় স্মৃতিসৌধ : ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সাভারে নির্মাণ করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধের উচ্চতা ১৫০ ফুট। সাতটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজাকৃতি সমন্বয়ে স্মৃতিসৌধ গঠিত হলেও স্তম্ভগুলোর উচ্চতা ও ভূমির ক্ষেত্রফলে রয়েছে ভিন্নতা। সৌধের স্তম্ভগুলো মাঝখান থেকে মোড়ানো এবং ধারাবাহিকভাবে সাজানো। স্থাপত্যটি পুরোপুরি কনক্রিটের তৈরি। স্মৃতিসৌধের দিকে তাকালেই যেন দৃশ্যমান হয়ে ওঠে ১৯৭১ সালে আমাদের বিজয়ের গৌরবগাথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দেশের জন্য অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেয়া লাখো শহীদের মুখ। স্মৃতিসৌধের পুরো কমপ্লেক্সটি ৩৪ হেক্টরজুড়ে (৮৪ একর) বিস্তৃত। স্তম্ভটির সামনে বেশক’টি গণকবর ও একটি প্রতিফলন সৃষ্টিকারী জলাশয় আছে। এই স্মৃতিস্তম্ভের চারদিক ঘিরে রয়েছে সুন্দর গাছপালা, বাগান ও নির্মল বায়ু। পাখির কলকাকলিতে মুখর এই এলাকা অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত থাকে সবসময়। আপনার সন্তানদের নিয়ে গিয়ে বেড়ানোর পাশাপাশি জানাতে পারেন অতীত ইতিহাসের কথা।
রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ : ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয় যখন অবশ্যম্ভাবী, ঠিক তখন এদেশের গুণীজন ও বুদ্ধিজীবীদের হাত-পা-চোখ বেঁধে গভীর রাতে রায়েরবাজার ইটখোলার সামনে এনে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। ১৮ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত লাশ আবিষ্কৃত হয়। অবশেষে দুই যুগেরও বেশি সময় পর ১৯৯৬ সালে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু হয় ও শেষ হয় ১৯৯৯ সালে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে বেড়িবাঁধের ভেতরে নির্মিত হয়। এ সৌধের স্থপতি ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ ও জামি-আল-শফি। তাদের নকশা অনুযায়ী প্রায় সাড়ে ৩ একর জমির ওপর সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ দৃষ্টিনন্দন সৌধটি গড়ে ওঠে। সৌধটির প্রবেশপথ থেকে পুরোটাতেই লাল ইট ব্যবহার করা হয়। সামনের দিকটি কৃষ্ণচূড়া ও বট গাছ দিয়ে সুশোভিত অত্যন্ত নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত। এ স্মৃতিসৌধের পেছন দিক দিয়ে বয়ে গেছে বুড়িগঙ্গা নদী। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এখানে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। খোলা থাকে সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর : রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অবস্থিত। এ জাদুঘর ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ উদ্বোধন হয়। বাঙালির অতীত ঐতিহ্য ও স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাসকে ৬টি গ্যালারির মাধ্যমে এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে। জাদুঘরের প্রবেশমুখেই জ্বলছে ‘শিখা অম্লান’। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত অসংখ্য দুর্লভ ছবি। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, জামা-কাপড়, বধ্যভূমি থেকে ৭০টি মাথার খুলিসহ ৫ হাজার ৩৯২টি হাড় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে, যা স্মরণ করিয়ে দেবে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতাকে। এই জাদুঘরে কিনতে পাওয়া যাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কিত বই, গানের সিডি এবং ভিডিও চিত্র। শীতকালীন সময়সূচি (অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে। রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ। টিকিটের মূল্য ৫ টাকা।
জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ : মিরপুর ১০ নং সেকশনের জুটপট্টিতে জল্লাদখানা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম বড় বধ্যভূমি। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ‘জল্লাদখানা’ নামে পরিচিত ওয়াসার এই পরিত্যক্ত পাম্প হাউসে খনন চালিয়ে ৭০টি মাথার খুলি, ৫ হাজার ৩৯২টি অস্থিখণ্ড এবং শহীদদের ব্যবহৃত নানা সামগ্রী পাওয়া যায়। জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে বর্তমানে দেয়াল ঘেঁষে কাচে ঘেরা পাত্রে রাখা আছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার বধ্যভূমির পবিত্র মাটি। দক্ষিণের দেয়ালে পস্তরফলকে লেখা রয়েছে বিভিন্ন জায়গার নাম, যেখানে গণমানুষেরা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছে জীবন। পূর্বপাশে রয়েছে টেরাকোটা ইট ও লোহার সমন্বয়ে তৈরি শিল্পী রফিকুন নবী ও মুনিরুজ্জামানের যৌথভাবে করা একটি ভাস্কর্য। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। প্রবেশে কোনো টিকিট লাগে না।
বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর : ঢাকার বিজয় সরণির এই জাদুঘরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ পউন্ডার গান, রাশিয়ার তৈরি ১৯৭১ সালে যুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর কাছ থেকে উদ্ধার ট্যাঙ্ক পিটি-৭৬, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ১৭ পাউডার ট্যাঙ্কবিধ্বংসী গান, অষ্টাদশ শতাব্দীর কামান, ব্যারেল ১০০ সিসি ট্যাঙ্ক গান, ১৯৬৭ সালে জার্মানিতে তৈরি কামান ১০৫/৫২ সিএম ক্রুপগান যা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে দ্বিতীয় তলায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন জায়গার দলিলপত্র রয়েছে। রয়েছে সামরিক বাহিনীর ব্যাজ, অস্ত্র, পোশাক। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর কাছে ৯১ হাজার ৫৪৯ সৈন্য আত্মসমর্পণের পর স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক দলিলের প্রতিলিপি। এ জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত। জাদুঘরে প্রবেশের জন্য টিকিট লাগে না। সামরিক জাদুঘর শীতকালে সকাল ১০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ও গ্রীষ্মকালে সকাল ১০.৩০ থেকে বিকাল ৬.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে। বুধবার সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়াও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকে জাদুঘর।
জতীয় জাদুঘর : জাতীয় জাদুঘর রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত। এ জাদুঘরের তিন তলায় মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারিতে আছে যুদ্ধ-পূর্ব ও যুদ্ধ সময়ের বিভিন্ন স্মারক, তাজউদ্দীনের ভাষণ, গণহত্যার ছবি, সেক্টর কমান্ডারদের ছবি, পোস্টার, মুক্তিযোদ্ধাদের জিনিসপত্র, খেতাবপ্রাপ্তদের তালিকা, বুদ্ধিজীবী ও বীরশ্রেষ্ঠ ডাকটিকিট ইত্যাদি। শনিবার থেকে বুধবার প্রতিদিন সকাল ১০.৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৫.৩০ মিনিট (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) ও ৯.৩০ মিনিট থেকে ৪.৩০ মিনিট (অক্টোবর থেকে মার্চ) এর্ব শুক্রবার বিকাল ৩.৩০ মিনিট থেকে ৭.৩০ মিনিট পর্যন্ত জাদুঘর দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকে। প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।
অন্যান্য জাদুঘর : ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু সংগ্রহশালা, বিডিআর সদর দফতরে বাংলাদেশ রাইফেলস জাদুঘর, ঢাকার কুর্মিটোলাস্থ বিজয় নিকেতন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ইত্যাদি নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে নিয়ে যেতে হবে এসব জায়গায়।
ছবি : লেখক

বেড়ানো : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দেশের বাইরে চেনা পরিবেশ

বেড়ানো : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দেশের বাইরে চেনা পরিবেশ

লিয়াকত হোসেন খোকন
বর্ধমানের দর্শনীয় স্থান হলো—বিজয় তোরণ, শের আফগানের সমাধি, খাজা আবুল কাশেমের স্মৃতিসৌধ, হাওয়া মহল, শিবমন্দির প্রভৃতি।
আসানসোলের কাছেই চুরুলিয়া। এখানের অজয়ের তীরে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভূমি। তার স্মরণে চুরুলিয়ায় স্থাপিত হয়েছে নজরুল একাডেমি। নজরুলের জন্মবার্ষিকীতে প্রতি বছর এখানে ৭ দিন ধরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বীরভূম জেলায় রয়েছে শান্তিনিকেতন। এখানের মূল আকর্ষণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ জীবনের আবাস ‘উত্তরায়ণ’। শান্তিনিকেতনের জন্মদিন ৭ পৌষ। তখন এখানে উত্সব হয় জাঁকালো—মেলা বসে, আতশবাজি পোড়ে আকাশকে রাঙিয়ে দিয়ে, এরই নাম পৌষ মেলা। ওই সময় বাউলেরাও আসে গ্রাম-গঞ্জ থেকে—তান ধরে, গান গায় তিন দিন তিন রাত মেলার আসরে। আর ঋতুরাজ বসন্তে শান্তিনিকেতনের আরেক আকর্ষণীয় উত্সব—‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’—এটি বসন্তোত্সব বা হোলির সূচনা।
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী হলো কলকাতা। কলকাতার দর্শনীয় স্থান হলো—টিপু সুলতানের মসজিদ, কালীঘাটের কালীমন্দির, পরেশনাথ মন্দির, নাখোদা মসজিদ, আর্মেনিয়ান চার্চ, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, শহীদ মিনার, ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম, ভাসমান জাদুঘর, ফোর্ট উইলিয়াম, বিড়লা মন্দির, রাজভবন, রবীন্দ্র সরোবর, জুওলজিক্যাল গার্ডেন, জোড়া সাঁকোর ঠাকুরবাড়ি, হাইকোর্ট, ময়দান, রবীন্দ্র সেতু, বিদ্যাসাগর সেতু, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বিধান শিশু উদ্যান, দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির, বেলুড় মঠ, আদ্যাপীঠ, বন বিভাগ, নিক্কো পার্ক, বড় বাজার, আকাশ বাণী, বিবাদী বাগ, রাইটার্স বিল্ডিংস, রিজার্ভ ব্যাংক, পোস্টাল মিউজিয়াম, জাতীয় গ্রন্থাগার, নেতাজী মিউজিয়াম, এমপি বিড়লা প্ল্যানেটিরিয়াম, বালিগঞ্জ প্রমথেশ বড়ুয়া সরণি, ঠনঠনিয়া কালীমন্দির, কারবালা মসজিদ, মদন মোহন মন্দির প্রভৃতি আরও কত কী!
প্রাচীনতম মসজিদটি ধর্মতলায় টিপু সুলতানের মসজিদ। মহাত্মা গান্ধী রোড থেকে চিত্পুর ধরে দক্ষিণমুখী ৫ মিনিটের পথে জাকারিয়া স্ট্রিট সংযোগে নাখোদা মসজিদ। এটি কলকাতার বৃহত্তম মসজিদ। আগ্রার সিকান্দ্রাতে তৈরি আকবরের সমাধির আদলে ইন্দো-শৈলীতে লাল বেলে পাথরে রূপ পেয়েছে নাখোদা মসজিদটিতে। একত্রে ১০ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ পড়তে পারেন। পাশেই রয়েছে সিঁদুরিয়া পট্টিতে হাফিজ জালাল উদ্দিনের মসজিদ। আর সুন্দর কারুকার্যময় মানিকতলায় কারবালা মসজিদটিও কিন্তু কম আকর্ষণীয় নয়।
ছবির মতো সাজানো শহর কোচবিহার। অসংখ্য দীঘি-জলাশয় কোচবিহারের বৈশিষ্ট্য। তা ছাড়া এখানে রয়েছে রাজপ্রাসাদ আর মন্দির। কোচবিহার শহরের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় রাজপ্রাসাদের কথা। রোমের সেন্ট পিটার্স চার্চের আদলে গড়া এই রাজপ্রাসাদ তৈরি করেছিলেন রাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ সিংহ। এখানে হাতির মূর্তি-সংবলিত তোরণদ্বারের কারুকাজ কতই না অপূর্ব। প্রাসাদের প্রবেশ পথে রয়েছে ভুটানের রাজাকে যুদ্ধে হারানোর স্মারক দুটি কামান। শীর্ষ গম্বুজের নিচে প্রাসাদের দরবার হলও কম আকর্ষণীয় নয়। রাজপ্রাসাদের সংগ্রহশালায় রয়েছে বিপুল ছবির সম্ভার আর প্রত্নসামগ্রী। রাজপ্রাসাদ দেখে এবার যেতে হবে মদন মোহন মন্দির। মন্দিরের সামনে বৈরাগি দীঘি। বাংলার চিরন্তন চারচালা শৈলীর মন্দির। সোনা আর অষ্টধাতুর তৈরি আসল মদন মোহন বিগ্রহ চুরি গেছে প্রায় ২০ বছর আগে।
রাত যাপন করার জন্য কোচবিহারে রয়েছে ইলোরা হোটেল, রয়্যাল প্যালেস, কোচবিহার হোটেল, ময়ূর হোটেল প্রভৃতি।
জয়ন্তী এক আদর্শ স্থান। কী নেই সেখানে! নদী, পাহাড়, জঙ্গল আর পাখি ছাড়া জয়ন্তীর আরেকটি বড় আকর্ষণ হলো এখানকার স্থানীয় মানুষ। তারা অকপট, আন্তরিক এবং অতিথিবত্সল। জয়ন্তী এমনই এক বিশেষ জায়গা, যেখানে প্রকৃতির সান্নিধ্যে অনাবিল শান্তি আর নিরিবিলিতে কাটানো যায় কয়েকটা দিন। বন্যপ্রাণী অধ্যুষিত গভীর জঙ্গল যাদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে, তারা জয়ন্তী থেকে বক্সা টাইগার রিজার্ভের অন্দরমহলে যেতে পারেন। জয়ন্তী যেতে হলে প্রথমে আলিপুর দুয়ারে আসতে হবে। কোচবিহার হতে সড়ক পথে বাসে আলিপুর দুয়ার যাওয়া যায়। আলিপুর দুয়ার থেকে সড়ক পথে জয়ন্তীর দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার।
আলিপুর দুয়ারে রাত যাপন করার জন্য রয়েছে হোটেল মা সন্তোষী, হোটেল চিত্রা, হোটেল এলিট, কাঞ্চনজঙ্গা লজ, হোটেল রাজলক্ষ্মী। তবে জয়ন্তীতে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি বেসরকারি লজ রয়েছে।
জলঢাকা ও মূর্তি নদীর মধ্যবর্তী সমতলে গরুমারার বিস্তার। উঁচু বনাঞ্চলে শাল, বহেড়া, জাম, ওদাল, চিকরাশি আর নিচু বনাঞ্চলে শিমুল, শিরীষ আর খয়ের গাছের দেখা মেলে। গরুমারায় রয়েছে—হাতি, গাউর, শূকর, সম্বর, কাঁকর, লেপার্ড, ভল্লুক প্রভৃতি বন্যপ্রাণী। এছাড়া গরুমারা বিখ্যাত একশৃঙ্গী গ নে দ্বিশয্যার ঘর রয়েছে, ভাড়া ১,১০০ টাকা। গরুমারা ইকো ভিলেজ রয়েছে, এখানেও থাকা যায়। এখানে গিয়ে আদিবাসীদের নাচ-গানও দেখা যাবে।
বহরমপুর জেলার মুর্শিদাবাদ ঐতিহাসিক শহর। বাংলা বিহার উড়িষ্যার রাজধানী ছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলার আমলে। মুর্শিদাবাদে আকর্ষণীয় যা যা দেখবেন—হাজার দুয়ারি, কাটরা মসজিদ, ঘড়িঘর, ইমামপাড়া, ফুটি মসজিদ, জগেশঠের বাড়ি, কাঠপোলা বাগান, নন্দীপুর রাজবাড়ী, নন্দীপুর আখড়া, নিমক হারাম দেউড়ি, জাফরাগঞ্জ সমাধি, কালো মসজিদ, মোতিঝিল, সিরাজউদ্দৌলার সমাধি, খোশবাগ, রোশনাইবাগ, হীরাঝিল ইত্যাদি।
কৃষ্ণনগরের কাছেই নবদ্বীপ। গৌর গঙ্গার দেশ বলা হয় নবদ্বীপকে। জানা যায়, ভাগীরথীর পাড়ে নবদ্বীপে ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দের দোল পূর্ণিমায় স্ত্রী চৈতন্যদেবের জন্ম। নবদ্বীপে আছে মন্দিরের ছড়াছড়ি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—মহাপ্রভুর বিগ্রহ মন্দির, বুড়ো শিব, হরিসভা, নিত্যানন্দ প্রভুর মন্দির প্রভৃতি। নবদ্বীপের আরেক আকর্ষণ তার রাস উত্সব। নবদ্বীপ ও শান্তিপুরের রাস মেলা সে তো বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গ। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের রাসে মূর্তি পূজায় বৈচিত্র্য আছে নবদ্বীপে।
মালদহ জেলার আকর্ষণ গৌড় আর পান্ডুয়া। গৌড়ে রয়েছে—পিয়াসবারি, রামকেলি, বারো দুয়ারি, বড় সোনামসজিদ, ফিরোজ মিনার, চিকা মসজিদ, দাতন মসজিদ, লুকোচুরি গেট, লোটন মসজিদ। পূরাণে মেলে সূর্যবংশীয় রাজা মান্ধাতার দৌহিত্র গৌড় এই ভূখ ের রাজা ছিলেন। তার নাম থেকেই স্থানের নাম হয়েছে গৌড়। পান্ডুয়ার দ্রষ্টব্য হলো বড়দরগা, সালামী দরওয়াজা, একলাখী মসজিদ, কুতুবশাহী মসজিদ প্রভৃতি।
জলপাইগুড়ি জেলার আকর্ষণ জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। ১১৪ বর্গ কিমি জুড়ে ১৯৪১ সালে গড়ে উঠেছে এই অভয়ারণ্য। এখানের গহীন অরণ্যের মাঝ থেকে বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী তোরসা। একশৃঙ্গী গ ার, হাতি, সম্বর, চিতাবাঘ রয়েছে এখানের অরণ্যে।
৭১০০ ফুট উঁচুতে দার্জিলিংয়ের অবস্থান। রূপসী দার্জিলিংয়ের তুলনা হয় না। মেঘেরা এখানে কানে কানে কথা কয়। ঘরেতেও হানা দেয় জানালা খোলা পেলে। এখানে সামনেই চিরহরিত্ বর্ণ ঘন পল্লব বিটপীম িত পর্বতরাজি বেষ্টিত দিগন্ত কাঞ্চনজঙ্গা। সারা বছরই বরফে মোড়া দূর থেকে দেখেই এর রূপে পাগলপারা হয়ে ওঠেন ট্যুরিস্টরা।
বাঁকুড়ার আকর্ষণ বিষ্ণুপুর। ১৪ শতকে উনবিংশ মল্লরাজ জগত্মল্ল এখানে এসে রাজধানী গড়েন। সেই মল্লরাজদের ঐতিহাসিক কীর্তিকলাপ, ললিতকলা, টেরাকোঠায় সমৃদ্ধ প্রাচীন বাংলার মন্দির স্থাপত্য পর্যটন মানচিত্রে বিষ্ণুপুরকে আজ অনন্য করে তুলেছে। এখানের পোড়ামাটির ভাস্কর্যের শৈল্পিক আকর্ষণ অনবদ্য। মন্দিরের খিলানগুলিও শিল্পকর্মে সমৃদ্ধ। উল্লেখযোগ্য মন্দির হলো জোড়বাংলা, রাধে শ্যাম মন্দির, শ্রীমন্দির, রাধা লাল জিউর মন্দির প্রভৃতি।
পুরুলিয়া জেলায় রয়েছে অযোধ্যা পাহাড়। বাঁকুড়া থেকে ট্রেনে কিংবা বাসে পুরুলিয়ায় গিয়ে অযোধ্যা পাহাড়ে যাওয়া যায়। সবুজে ছাওয়া-নিথর নিস্তব্ধ অযোধ্যা পাহাড়। শাল-শিরীষ সেগুনে ছাওয়া অরণ্য ভূমি ঋতুভেদে রং বদলায় অযোধ্যায় পাহাড়ে। এখানের পাহাড় ঢালে আদিবাসীদের বাস । পাহাড়ি অরণ্যে হাতি, হরিণ, বন মোরগের দেখা মেলে। মেদিনীপুর জেলার দক্ষিণে রয়েছে সমুদ্রসৈকত দীঘা।

Monday, December 20, 2010

ঢাকার কাছে পিকনিকেঃ

ঢাকার কাছে পিকনিকেঃ

০০লেখা ও আলোকচিত্র মুস্তাফিজ মামুন ০০

বনভোজনের মৌসুম। দলে দলে বনভোজনে বেরিয়ে পড়ার সময় এটা। দেশের বিভিন্ন জায়গাতে রয়েছে বেশকিছু বনভোজন কেন্দ্র। ঢাকার কাছের এ রকম কিছু জায়গা নিয়ে কড়চার এবারের বেড়ানো।

ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
চত্ত্বর গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। পৃথিবীর অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের আদলে ৬,৪৭৭ হেক্টর জমিতে ১৯৭৩ সালে এ উদ্যান সরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। এছাড়াও নানারকম গাছ-গাছালিতে পরিপূর্ণ এ উদ্যান। জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বেশকয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র, ১৩টি কটেজ ও ৬টি রেস্ট হাউস রয়েছে। উদ্যানে প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৬ টাকা। এছাড়া পিকনিক স্পট ব্যবহার করতে হলে, বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় (০২-৮৮১৪৭০০) থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হবে।

সফিপুর আনসার একাডেমি
জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় অবস্থিত আনসার-ভিডিপি একাডেমির বিশাল চত্বর বেড়ানোর জন্য একটি উপযুক্ত যায়গা। অনুমতি সাপেক্ষে বনভোজন করারও ব্যবস্থা আছে এখানে । (০২-৭২১৪৯৫১-৯)

নুহাশপলস্নী
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বাগানবাড়ি ও শুটিং স্পট। প্রায় ৯০ বিঘা জায়গা নিয়ে এই নন্দন কাননে আছে একটি ছোট আকারের চিড়িয়াখানা, শান বাঁধানো ঘাটসহ একটি বিশাল পুকুর, দৃষ্টিনন্দন কটেজ, ট্রি হাউস বা গাছবাড়িসহ আরো অনেক আয়োজন। নুহাশ পলস্নীর ভেতরের বিশেষ আকর্ষণ হলো_এর ঔষধি গাছের বাগান। এত সমৃদ্ধ ঔষধি বাগান এদেশে বিরল। সবমিলিয়ে নুহাশপলস্নী একটি ছবির মতো সাজানো-গোছানো এক প্রান্তর, যেখানে গেলে ভালো লাগবে সবার। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই তিনমাস বনভোজনের অনুমতি মেলে নুহাশপলস্নীতে। যোগাযোগ :০১৭১২০৬০৯৭১

রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট রিসোর্ট
গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত আরেকটি রিসোর্ট ও বনভোজন কেন্দ্র রাঙ্গামাটি। এখানে আছে বনভোজন কেন্দ্র, লেকে মাছ ধরা ও বেড়ানোর ব্যবস্থা এবং কটেজে অবকাশ যাপনের ব্যবস্থা। (০১৮১১৪১৪০৭৪)।

আফরিন পার্ক রিসোর্ট
জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর-ময়মনসিংহ সড়কের পাশেই আফরিন পার্ক রিসোর্ট। নানান গাছ-গাছালিতে ঘেরা এ পার্কে আছে বিশাল শান বাঁধানো পুকুর, লেকে নৌকায় বেড়ানোর ব্যবস্থাসহ অবকাশ যাপনের জন্য রিসোর্ট (০১৮১৯২৫৩৩৩৯)।

উৎসব পিকনিক স্পট
ঢাকা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের হোতাপাড়ার কাছেই এ বনভোজন কেন্দ্রটি। উৎসব পিকনিক স্পটে আছে খোলা চত্বর, কয়েকটি কটেজ ও ট্রি হাউজ। ঢাকার ফুলবাড়িয়া থেকে শ্রাবণ পরিবহনে এসে নামতে হবে হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে। ভাড়া ৩৫ টাকা। সেখান থেকে রিকশায় দশ টাকা ভাড়া উৎসব পিকনিক স্পট পর্যন্ত। যোগাযোগ :০১৭১৩০৪৪৫৯১।

পুষ্পদাম পিকনিক স্পট
ঢাকা থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার বাঘের বাজারে পুষ্পদাম অবস্থিত। এখানে বিশাল পরিসরে রয়েছে দেশি-বিদেশি বাহারি গাছের সমাহার। প্রবেশপথেই রয়েছে বিশাল দেবদারু গাছের সারি। এ পথ পেরিয়ে একটু ভেতরে ঢুকলেই রয়েছে ফুলে ফুলে ঘেরা কয়েকটি কটেজ। এখানে রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ, কৃত্রিম লেক, ঝরনা ও সুইমিংপুল। পর্যাপ্ত রান্নাঘর, টয়লেট ছাড়াও এখানে আছে একই সাথে এক হাজার লোকের খাবারের জায়গা। যোগাযোগ :০১৮১৯২১৬১৫৭।

রাসেল পার্ক
ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রূপগঞ্জে রয়েছে মনোমুগ্ধকর এ পিকনিক স্পট। প্রায় ৩০ বিঘার মতো জায়গা জুড়ে এখানে রয়েছে সবুজের সমারোহ। রাসেল পার্কে রয়েছে তিনটি পিকনিক স্পট। এছাড়াও রাসেল পার্কের ভেতরেই রয়েছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা। নানারকম পশুপাখি রয়েছে এ চিড়িয়াখানায়। যোগাযোগ :০১৭১৫৪৬০৬৪।

সোনার গাঁও
ঢাকার কাছেই আরেক আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট হলো সোনার গাঁও। এখানকার লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বিশাল চত্বরে রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পট। এখানে বনভোজনের পাশাপাশি দেখে আসতে পারেন বাংলার ঐতিহাসিক নানান স্মৃতি। এখানকার লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন যাদুঘর, ঐতিহাসিক পানাম নগর , গোয়ালদী মসজিদ, গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের মাজার ছাড়াও আরো অনেক ঐতিহাসিক জায়গা দেখে আসতে পারেন।


পন্ড গার্ডেন
নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঞ্চনে বেসরকারি একটি পর্যটনকেন্দ্র পন্ড গার্ডেন। প্রায় পঁচিশ বিঘা জায়গা জুড়ে শিশুপার্ক, অবকাশকেন্দ্র ছাড়াও এখানে আছে নানান আেয়াজন। ০১৭২৭৩৯১১৯৮।

ফ্যান্টাসি কিংডম
আশুলিয়ার জামগড়ায় গড়ে উঠেছে বিশ্বের আধুনিক সব রাইড নিয়ে বিনোদনকেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম। পাশেই হেরিটেজ পার্কে আছে ঐতিহ্যের পরিপূর্ণ ভাণ্ডার। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর অনেকগুলোই চোখে পড়বে এখানে। এগুলো মূল স্থাপনার অবিকল আদলেই তৈরি করা হয়েছে হেরিটেজ পার্কে। এ জায়গা দুটিতে বনভোজন করার জন্য রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। যোগাযোগ :৭৭০১৯৪৪-৪৯।

নন্দন পার্ক
সাভারের অদূরে চন্দ্রার বাড়ই পাড়ায় রয়েছে নন্দন পার্ক। এখানকার ড্রাই জোন ও ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে মজাদার সব রাইড উপভোগের পাশাপাশি বনভোজন করারও ব্যবস্থা আছে। বনভোজনের জন্য বিভিন্নরকম প্যাকেজও আছে নন্দন পার্কে। যোগাযোগ :৯৮৯০২৮৩।

ইনানী হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র

ইনানী হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র

০০উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা , Daily Ittefaq

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি পাহাড় ঘেষা বিসতৃর্ণ সমুদ্র সৈকত মাঝখানে সারি বেঁধে গড়ে উঠা ঝাউবিথির সবুজ বেষ্টনী, বালুচরে জেগে উঠা পাথরের স্তূপ, যেখানে ঢেউয়ের নীল জলরাশি আচড়ে পড়ে। ইনানী বীচের অপার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য শতপ্রতিকূলতা উপেক্ষা করে প্রতিদিন ছুটে আসছে অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটক। পর্যটন খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ইনানীকে সেভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে না। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ কক্সবাজার সড়ক হয়ে ইনানী অথবা কক্সবাজার কলাতলী হয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক পথে মাত্র ৩০মিনিটের রাস্তা ইনানী। ইনানীকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট বা পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও স্বাধীনতার ৩৪ বছরে অবহেলিত ইনানীর কিঞ্চিত উন্নয়ন হয়নি। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ২০০২ সালে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ৪ জন সৈকত পুলিশ দিয়ে চলছে ইনানীর আইন শৃংখলা রক্ষার কার্যক্রম। অথচ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য ইনানীর অদূরে মোঃ শফির বিলে সুউচ্চ পাহাড়ের পাদদেশে কালের সাক্ষী হয়ে যুগ যুগ ধরে স্মৃতি বহন করে আসছে কানা রাজার গুহা।

জানা গেছে, ১৭৮৪খ্রীষ্টাব্দে মগ সর্দার কানা রাজা বঙ্গোপসাগরে চলাচল রত জাহাজে লুটতরাজ চালানোর জন্য সুড়ঙ্গ ব্যবহার করত। কক্সবাজার উপকূলে পর্তুগীজ জলদসু্যদের আগমণের পর কিছু সংখ্যক জলদসু্য নিয়ে কানা রাজা এ গুহায় আশ্রয় নিয়ে দসু্যতা অব্যাহত রাখেন। প্রাচীন কালের স্মৃতি বিজড়িত কানা রাজার গুহা সংস্কার করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ানো যেত। এই ছাড়া ইনানীর পাটুয়ার টেক সমুদ্র সৈকতে প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টির পাথুরে বীচ, প্রবাল এবং পাথরে আচড়ে পড়ছে সমুদ্রে নীল জলরাশি। এখানে দাড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। সমুদ্র সৈকতে গিয়ে প্রকৃতির নৈসর্গিক দৃশ্য একবার যারা উপভোগ করেছে তারা এ দৃশ্য দেখার জন্য বারবার ইনানীতে ছুটে আসেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে শোনা যাচ্ছিল ইনানীর সৈকতে ৫শত একর জায়গার উপর গড়ে উঠবে এক্সক্লুসিভ টুরিস্ট জোন। যা শুধুমাত্র পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত থাকবে। অথচ বিগত ৩৪ বছেরেও উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের মুখ দেখছে না।

সমপ্রতি বেসরকারিভাবে ইনানীতে পর্যটকদের আবাসন সুবিধা গড়ে উঠছে। তন্মধ্যে ইনানী বীচ রিসোর্ট, প্যাবেল স্টোন, রেডিয়েন্ট রিসোর্ট অন্যতম। বাণিজ্যিকভাবে সোনার পাড়া ইনানী, পাটুয়ারটেক, মোঃ শফির বিল, চেপটখালী, মনখালী, সমুদ্র উপকূলে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে পর্যটন রিসোর্ট গড়ে তোলার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গ্রীন ডেল্টা হাউজিং এন্ড ডেভেলপার, কোরাল রিপ, এলিট হাউজিং, মিশন গ্রুপ, এমিকাস, সায়মন বসতি ডেভেলপারসহ বহু হাউজিং কোম্পানী ব্যক্তি মালিকানায় শত শত বিঘা জমি ক্রয় করে পর্যটন রিসোর্টসহ বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তারা এসব স্থাপনা অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলে পর্যটন বিকাশে বাধা হয়ে দাড়াবে বলে পরিবেশবাদী সচেতন মহল মনে করেন।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ বিন ইকরাম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ইনানীতে একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। জেলা প্রশাসক গিয়াস উদ্দিন আহমদ বলেন, পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য ইনানীতে জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পর্যটকদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হবে। এ জন্য কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৫শত একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। উক্ত এলাকায় বেসরকারিভাবে কোন প্রকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Sunday, December 19, 2010

mermaid eco resort: a taste of idyll, COX'SBAZAR

The setting is one just out of a Garcia Marquez book; the clay clad walls flanked by creepers and the green shrubs growing in wild abandon, a wind beaten path fringed by coconut trees serving as a canopy, leading you to a place of magic.

The Mermaid Eco Resort is located beside the Rezu Khal along the Marine Drive about sixteen kilometres from downtown Cox's Bazaar. What sets this resort apart is that it has set a great example by keeping all of its buildings environmentally friendly; the raw materials used to build the resort are mostly bamboo, thatch, mud and wood. This is particularly important in a place like Cox's Bazaar, a place of unbridled natural splendour that we can ill afford to contaminate with urban and industrial wastes.

Bangladesh has a wealth of natural beauty, and it is imperative that we utilise the tourism potential of such sites. In this respect Cox's Bazaar has been streets ahead of the rest, and a recent and glowing landmark on that path is the Mermaid Eco Resort, Cox's Bazaar.

Officially inaugurated in September 2009 and a sister concern of Mermaid Café, the resort accommodates about 70 people at a time and provides facilities that will keep guests immersed in the beauty and splendour of Cox's Bazaar.

You are drawn in by the mermaid motifs in coloured chalk adorning the walls, the lone frog hopping, the flutter of butterflies keeping you company while you indulge in a shower.

Luxury two-storied or even duplex bungalows with wide windows or beautiful lofts carpeted with mats made out of straws or coconut leaves, spacious beds, long verandas facing the blue sea, instantly relaxes your tired urban mind. You just toss your body on the hammock; swing to the rhythm, close your eyes while the sea sings you a lullaby. Your worn out self, willingly gives in to the loveliness around you.

Walks on the beach studded with seashells and pebbles, taking mud baths, riding the country boat, are equal parts pleasure and leisure.

The return to simpler times seems to be the theme of this resort. Contemporary amenities and facilities married with unspoiled nature is what you get at Mermaid Eco Resort in Cox's Bazar. And its owners, the adventurous and romantic duo Bristi and Shohag, with their infectious happy smile and awesome hospitality allow you to tuck away your worries and enjoy nature at its best - untainted and natural.

The bungalows are equipped with modern hygienic western toilets and verandas overlooking the sea, the lake or the lush green hill range. The villas also have the same facilities but are topped up with a better view and a private sitting space.

“I loved the back-to-nature feel of it,” said a Dhaka-based guest at the resort. “They have struck up a lovely balance; the rooms are beautifully kept and you have all the amenities, while at the same time you are always connected to nature.”

This reconnecting with nature is best exemplified in the bathrooms. They are fitted with the common western amenities but look up, and you will see a green canopy of coconut leaves.

“The al fresco feel of the bathrooms really drives home the realisation that you have left the city behind and come to a more organic place,” the guest continued on her extolment of the resort's virtues. “Even the coconuts on the menu are from the coconut trees all over the resort. They don't even give you a straw; it's completely organic.

“The bungalows don't have air conditioning, but that is something I got used to pretty fast. It would not feel as natural or organic with air conditioning in the room because you would have to close all the windows, and that is not the point of coming here. This resort is about bonding with our natural environment and I think they have done an excellent job in accomplishing that,” she concluded.

The Mermaid Café in Cox's Bazaar was merely the prelude to the wonderful story that you unravel at the Mermaid Eco Resort. If you are looking for a quiet time out with just a good read for company, this all-out deshi resort should be on top of your picks.

Guests can choose from a range of Standard Bungalows (Tk 2500/night), Deluxe Bungalows (Tk.3000/night), Premium Deluxe Bungalows (Tk 3500/night), Supreme Deluxe Bungalows (Tk 4000/night) and Villas (Tk 5000/night).

The resort also facilitates its guests with a well-kept Crafts Shop, Restaurant, Movie Nights, Herbal Spa, boat rides, Car/Motorbike/Bicycle rentals, Laundry Service, wave surfing facilities and a Tour Desk. There are also special tours, which take the tourists to a nearby sand dune island where special security is arranged for a comfortable and fun sea bathing experience.

As a tourist spot, as well as a getaway spot, Mermaid Eco Resort at Cox's Bazaar is hard to beat. No matter what your inclination, you will be satisfied with the natural beauty and the various attractions on offer at the resort. So if you want to get away from the madness of city life, don't look overseas for a quality holiday experience; go south and visit this gem in our very own Cox's Bazaar.

If you want to sample a piece of this organic haven, call 01841416464 or e-mail reservation@mermaidecoresort.com.

By Raffat Binte Rashid and STS
Photo courtesy: Mermaid Eco Resort

পর্যটকের ঢল নেমেছে পাহাড় কন্যা বান্দরবানে

পর্যটকের ঢল নেমেছে পাহাড় কন্যা বান্দরবানে

০০ বান্দরবান সংবাদদাতা

পর্যটকের ঢল নেমেছিল পাহাড়কন্যা বান্দরবানে। টানা তিনদিনের ছুটিতে প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেতে বান্দরবানে ছুটে আসে পর্যটকরা। পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো। কোথাও তীল ধারণের ঠাঁই নেই। হোটেল-মোটেল, রেস্টহাউস এবং গেস্টহাউসগুলোতেও সীট না পেয়ে পর্যটকরা রাস্তায় রাস্তা্য় ঘুরে বেড়ায়। গভীর রাতেও পর্যটকদের সাঙ্গু বীজ, বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বসে সময় কাটাতে দেখা গেছে। রুমা এবং থানছি উপজেলায় পর্যটকরা হোটেল-মোটেলে সীট না পেয়ে পাহাড়ী গ্রামগুলোতে আদিবাসীদের মাচাংঘরগুলোকে থাকার বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বেছে নেয়।

প্রতিবছর শীতের শুরুতে বান্দরবানে পর্যটকদের আগমন ঘটে। পর্যটনের অফুরন্ত সম্ভাবনাময় বান্দরবানে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সমপ্রতি যুক্ত হয়েছে ক্যাবলকার। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মেঘলা পর্যটন কমপ্ল্ল্লেস্নক্সে আরো রয়েছে একই লেকের উপর দু'টি ঝুলন্ত সেতু, মিনি সাফারী পার্ক এবং চিড়িয়াখানা। এছাড়াও পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের টাওয়ারে উঠে পাহাড়ের সমুদ্র দেখছে পর্যটকরা। পাহাড়ের সাথে আকাশ মিতালী গড়েছে নীলাচলে। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা নীলাচলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রয়েছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড় এবং সেনা নিয়ন্ত্রিত স্বপ্নীল নীলগিরি পর্যটন স্পট। যেখানে অনায়াসে মেঘের ছোয়া পাওয়া যায়। অসংখ্য পাহাড়ের মাঝখানে নির্মিত নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র যেন মেঘে ভাসছে। মুহূর্তে মেঘ এসে এখানে ছুঁয়ে যাচ্ছে কটেজগুলো। জেলা শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নীলগিরি স্পটটি স্বাস্থ্যকর স্থানও। শহরের অদূরে অবস্থিত শৈলপ্রপাতের স্বচ্ছ ঠান্ডা পানিতে গা ভাসায় পর্যটকরা। পাথরের ফাঁকে ফাঁকে ঝর্ণার স্বচ্ছ পানি বয়ে চলেছে অবিরাম ধারায়। পাশে বসেই আদিবাসী তরুণীরা কোমর তাঁতে তৈরি কাপড় বিক্রি করছে। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটক লীজা ও তানিয়া জানান, অপরূপ সৌন্দর্যে গড়া বান্দরবান। পাহাড়, প্রাকৃতিক লেক, অজস্র ছোট-বড় ঝর্না, ঝুলন্ত সেতু, ক্যাবলকার এবং দেশের সবের্াচ্চ পর্বতচূড়া সাকাহাফংসহ অসংখ্য পাহাড়। সত্যিই অসাধারণ বান্দরবান জেলা। কিন্তু ভাঙ্গা সড়ক আর অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সৌন্দর্যকে অনেকাংশে মস্নান করে দিচ্ছে। অন্যদিকে বালাঘাটায় নির্মিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান নামে পরিচিত বৌদ্ধ ধাতু স্বর্ণজাদি জেলায় পর্যটনের ক্ষেত্রে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এখানে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক।
Source: Daily Ittefaq, 19-12-2010

Related Links:

পর্যটন শিল্পে নতুন সংযোজন : বান্দরবানের মেঘলায় কেবল কার উদ্বোধন