Search This Blog

FCO Travel Advice

Bangladesh Travel Advice

AFRICA Travel Widget

Asia Travel Widget

Sunday, March 20, 2011

জীববৈচিত্র্যে কক্সবাজার

জীববৈচিত্র্যে কক্সবাজার

মোহাম্মদ ইব্রাহিম
নানা প্রজাতির মাছ আর জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এক জনপদের নাম কক্সবাজার। এখানকার জলে স্থলে সর্বত্র নানা জাতের মাছ, শামুক, ঝিনুক, পাখি আর কীটপতঙ্গ। পানির ওপর খেলা করে গাংচিলেরা। প্রকৃতি সেখানে মুহূর্তে মুহূর্তে রং বদলায়।
জেলেরা গভীর সমুদ্রে গিয়ে আহরণ করে নানা প্রজাতির মাছ। এগুলোর কিছু নাম পরিচিত, আর কিছু অপরিচিত। কোরাল, রূপচাঁদা, শাপলা, চিংড়ি, ছুরি, হাঙর, জেলিশিসসহ অসংখ্য প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, পরিবেশের ইকো সিস্টেমের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনেক মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া গভীর সমুদ্রে বড় বড় হাঙরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় অনেক মাছ উপকূলের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে সাগরে মাছের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। জেলের জালেও আর আগের মতো মাছ আসে না।
ফিশারিজ সংশ্লিষ্টরা জানান, পারস্পরিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় বঙ্গোপসাগর আগামীতে মত্স্যশূন্য হয়ে পড়তে পারে। কারণ এক সময় (১০-১৫ বছর আগে) ফিশারিঘাটে একেকটি নৌকায় ২০ থেকে ৩০ মণ নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ আসত। বর্তমানে একটি নৌকা কয়েক মাসেও ২০ থেকে ৩০ মণ মাছ ধরতে পারে না।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, সমুদ্রজুড়ে আধুনিক ফিশিং ট্রলারের অপ্রতিরোধ্য মত্স্য আহরণের কারণে সাগর মাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে। এসব বোট মালিক বেশিরভাগ প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই এরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। সমুদ্রসীমার ৪০ ফুট গভীর জলসীমার ভেতরে এসেও এসব ফিশিং বোট মাছ ধরছে। ফলে ছোট আকারের মাছগুলোও এসব ট্রলারের মাধ্যমে মেরে নিয়ে আসা হচ্ছে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের ফিশিং গ্রাউন্ডে ১৩০টির বেশি আধুনিক ফিশিং ট্রলার চলছে। বর্তমান সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে নামে-বেনামে আরও ২০টি ফিশিং ট্রলারের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, থাইল্যান্ডসহ বহু দেশ অত্যাধুনিক ফিশিং বোটে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করেছে। কারণ এক সময়ে থাইল্যান্ডের সমুদ্রসীমার ফিশিং জোনে যথেচ্ছ মত্স্য আহরণ করায় বর্তমানে থাইল্যান্ডের সমুদ্রসীমার ফিশিং গ্রাউন্ড প্রায় মত্স্যশূন্য হয়ে পড়েছে। আধুনিক ফিশিং বোট ব্যবহার করলে যে কোনো সময় আমাদের সমুদ্রসীমা মত্স্যশূন্য হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে মত্স্য আইনের সঠিক প্রয়োগ সব ফিশিং ট্রলারের ওপর কার্যকর প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম
Source: Daily Amardesh

বেড়িয়ে এলাম কক্সবাজার
-

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনের জেলা হচ্ছে কক্সবাজার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ সমারোহ এখানে। কয়েকদিন আগে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলাম। এই ভ্রমনে কক্সবাজার সম্পর্কে যা যা জানতে পেরেছি তা সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরছি।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/Coxsbazarseabeach.jpg

কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যাবস্হা খুব ভাল। সড়ক ও আকাশ পথে যাওয়া গেলেও রেল যোগাযোগ এখনও হয়নি। তবে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে তারপর বাসে যাওয়া যায়। তাছাড়া ঢাকা ও অন্যান্য জেলা থেকে সরাসরি বাসচলাচল করে। কক্সবাজারে রিক্সা-অটোরিক্সা সবই রয়েছে। পর্যটন এলাকা তাই তুলনামূলক ভাড়াটা একটু বেশীই। তবে চালকরা অত্যন্ত নম্র-ভদ্র, অতিথিকে যথাযথ সম্মান দিতে জানেন তাঁরা।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/CoxsbazarSunset.jpg

কক্সবাজারে থাকা-খাওয়ার সুব্যাবস্হাপনা রয়েছে। নিম্ন আয় থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সব ধরনের মানুষের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রেট এ আবাসিক থাকার ব্যাবস্হা। এখানে যা দেখলাম, বলতে গেলে সব হোটেলেই দরদাম করে ভাড়া ঠিক করা। কলাতলী রোডের বেশীরভাগ হোটেলের জানালা থেকেই সমুদ্র দেখা যায়।

কক্সবাজারে খাবারের দাম তুলনামূলক বেশ বেশী। প্রায় প্রতিটা আবাসিক হোটেলের সাথেই/গ্রাউন্ডে রয়েছে রেষ্টুরেন্ট। ব্যতিক্রমধর্মী কয়েকটি রেষ্টুরেন্ট রয়েছে কলাতলী মোড়ের কাছে। এগুলো উচু করে সমুদ্রের/বিচের উপর নির্মিত। এখানে বসে সমুদ্রের অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করার সাথে খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। সব রেষ্টুরেন্টে বলতে গেলে মুরগী-গরু-ইলিশ-চিংড়ি-রুঁপচাদা-লইট্যা কমন আইটেম। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ভাজি-ভর্তা ও শুটকির আইটেমতো রয়েছেই।

মার্কেট এলাকায় প্রধান ব্যবসা হচ্ছে বার্মিক কাপড়। শহরের মার্কেট এলাকায় রাস্তার দুধার দিয়ে রয়েছে সারিসারি বার্মিজ মার্কেট। এখানে বার্মিজ বিছানার চাদর. গায়ে দেবার চাদর, ড্রেস, তোয়ালে, শীতের পোশাক ছাড়াও পাওয়া যায় বার্মিজ খাবার, শোপিচ ও রুপ সৌন্দর্যের প্রসাধন। তবে এখানে অনেক দরদাম করে জিনিস কিনতে হয়।

দর্শনীয় স্হান:
কক্সবাজারের প্রধান আকর্ষন হচ্ছে সমুদ্র সৈকত। সবচেয়ে জাঁকজমক হচ্ছে লাবনী বিচ এলাকা। পরিস্কার ঝকঝকে পরিবেশ আর নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। বিচের তীর ঘেষে রয়েছে ইজিচেয়ারে শোবার ব্যাবস্হা। চা-কফি-ডাব-মুড়ি-বাদাম সবই পাওয়া যায় এখানে কিন্তু কোন কিছু নিচে ফেলা যাবে না। এছাড়া স্পীডবোট, বিচকার, ঘোড়ায় চড়ার ব্যাবস্হা এসব তো রয়েছেই। তবে বিচে সবচেয়ে বিরক্তিকর পেশাদার ফটোগ্রাফারদের উৎপাত।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/CoxsbazarSunseteasychair-Final.jpg

***
এছাড়া একটু দূরে ইনানী বিচের সৌন্দর্যও অবশ্যই প্রশংসনীয়। এখানে পানির মধ্যে রয়েছে বড় বড় সব পাথর। ভাটার সময় তাই উকি দেয়া পাথরই সৌন্দর্য ফুঁটিয়ে তোলে এখানকার। ইনানী বিচের লাল ডাবের স্বাদই অন্যরকম। ইনানী যাবার পথে দীর্ঘ সি-ড্রাইভ অবশ্যই মুগ্ধ করবে আপনাকে। রাস্তার একদিকে পাহাড় আর অন্যদিকে সুদীর্ঘ সমুদ্র সৈকত পুরোটা পথ সঙ্গ দিবে আপনাকে।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/Inani.jpg

***
ইনানী বিচে যাবার পথেই দেখা মেলে হিমছড়ির। এখানে রয়েছে মনোমুগ্ধকর এক ঝর্না। সিড়ি বেয়ে অনেক উঁচু পাহাড়ে উঠে কক্সবাজারের ভিউ দেখার সুযোগ রয়েছে এখানে। সিড়ি দিয়ে উঠতে প্রথম দিকে মনে হয় এতো অল্প, পরে যেন ওঠার পথ আর শেষ হতে চায় না। অবশেষে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে বিমোহিত হয়ে যেতে হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে। এছাড়াও এখানে ছোট মার্কেট ও সুন্দর করে সাজানো বিচ রয়েছে যা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষন।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/Himchorifalls-.jpg

***
এই পথেই রয়েছে সামুদ্রিক জীব-জন্তুর মিউজিয়াম। বেশ কিছু কমন-আনকমন জীবিত-মৃত প্রানী রয়েছে তাদের সংরক্ষনে। মিউজিয়ামটা সম্প্রসারনের কাজ চলছে।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/Animelmuseum.jpg

বন্যপ্রানীদের নির্বিঘ্নে চলাফেলার মুক্ত পরিবেশ রয়েছে সাফারী পার্কে। সেখানে আমার যাওয়া হয়নি।

***
কক্সবাজারের মহেশখালী বেশ সুন্দর একটা জায়গা। এখানে খুঁজে পাওয়া যায় অন্যরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। তবে এখানকার রিক্সাচালকেরা ধান্দাবাজ। ভাড়া মিটাতে গেলে বলে আপনি খুশি হয়ে যা দিবেন তাই মাথা পেতে নেবো, কোন অসুবিধা নাই। অথচ শেষে বিপদে ফেলবে অনেক টাকা ভাড়া চেয়ে। আমার কাছে ১০০০/= চেয়েছিল আমি ৫০০/= দিয়ে তারপরও না মানায় স্হানীয় লোকদের কাছে বিচার দিয়েছিলাম এবং বিচারে রায় হলো যে, আমি যা ভাড়া দিয়েছি প্রকৃত ভাড়া তার চেয়ে অনেক অনেক কম। একদম মাঠে শুকানো তরতাজা শুটকি পাওয়া যায় এখানে। শুটকির ফিল্ড ছাড়াও এখানে রয়েছে লবনের ফিল্ড। এখানকার মিষ্টি পান অতি বিখ্যাত।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/Moheshlhali.jpg

***
কক্সবাজারে বেড়াতে গেছে অথচ টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে বেড়াতে যাননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে আমি টেকনাফ বেড়াতে গেলেও সামুদ্রিক সিগন্যাল না থাকায় সেন্টমার্টিনে যাওয়া হয়নি। টার্মিনাল থেকে সারাদিনই টেকনাফ-কক্সবাজার যাওয়া-আসার বাস রয়েছে। অনেকে মাইক্রোবাস সার্ভিসেও যাতায়াত করেন। টেকনাফ যেন প্রাকৃতিক রুপ-সৌন্দর্যের পুরোটায় কেড়ে নিয়েছে। এখানকার সমুদ্র সৈকত সম্পূর্ন নীলাভ। এতো সুন্দর তা ভাষায় প্রকাশ করে বলা যায় না। টেকনাফের আরেক সৌন্দর্য নাফ নদীতে। এখানে গেলে সুইজারল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ডের দেখা প্রাকৃতিক ছবিগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। এখানে আরও রয়েছে মনোমুগ্ধকর এক ঝর্না আর উঁচু পাহাড়ের সাথে রয়েছে বন্যপ্রানীদের অবাধ বিচরন। এই পাহাড়ে রয়েছে বন্য হাতীও।

http://i1230.photobucket.com/albums/ee492/Shanto_Balok/Teknafbeach.jpg

আপনিও বেড়িয়ে আসুন কক্সবাজার, ভাল লাগবে সেটা আমি নিশ্চিত।

সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন শান্ত বালক (১১-১২-২০১০ ২১:৫১)

Source: http://forum.projanmo.com

No comments:

Post a Comment