Search This Blog

FCO Travel Advice

Bangladesh Travel Advice

AFRICA Travel Widget

Asia Travel Widget

Tuesday, April 27, 2010

বান্দরবান প্রকৃতির সৌন্দর্য্যে পর্যটন লীলাভূমি

বান্দরবান প্রকৃতির সৌন্দর্য্যে পর্যটন লীলাভূমি
বান্দরবান পার্বত্য পর্যটন নগরী হিসাবে কোন দেশ চেয়েই কমতি নেই বলা চলে। শৗত মৌসুমের বান্দরবান পার্বত্য জেলা পর্যটন নগরীতের হাজার হাজার দর্শনার্থীরা বান্দরবান প্রাকৃতি অনুভব করতে চলে আসেন।
এই জেলা আদিবাসীদের মধ্যে বসবাস করেন ১৩ টি নৃতাক্তিজাতির সহ বাঙ্গালীরা গোষ্ঠী ও জীবনচিত্র দেখে আমরা মুদ্ধ হই প্রতিনিয়ত। প্রাকৃতিকে কাছ থেকে দেখতে না পারায় কখনো কখনো অসহায় বোধ করি শহরবাসী।আমাদের অনেকেরই জানা নেই আমাদের দেশের প্রাকৃতিক রুপময়তার কথা।
একবার ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেই আসুন জীবনানন্দের রুপসী বাংলা নজরুলের বাংলাদেশ -বিশ্ব কবির সোনার বাংলা রুপের যে তা নেইকো শেষ ,এ ভুমি যে কি পরিমান রুপ রস ঐশ্বর্য্য আপন বুকে লূকিয়ে রেখেছে তা না দেখে কল্পনাই করা যায়না। এই রুপের কোন মানুষ যদি স্বাদ গ্রহন করতে চান তবে চলে আসুন বান্দরবান পার্বত্য জেলা শহরের।
প্রাকৃতির নি:স্বগের চিরসবুজ শৈল শ্রেনীর পাদদেশে গড়ে ওঠা অর্পূব লীলাভ’মি বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রকৃতি রুপ আর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বান্দরবান প্রকৃতিপ্রেমিক পর্যটনপিপাসুদেরও অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে । বান্দরবান পার্বত্য জেলা আদিবাসীদের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত স্থান হিসাবে সুযোগ পাওয়া যায়।
এখানে বিভিন্ন আদিবাসীরা বসবাস করে থাকেন-মারমা, ম্রো খুমী, লুসাই, বম, পাংখো, চাক,খীসা, ত্রিপুরা, চাকমা, টঞ্চগ্যা। এদের মধ্যে নিজস্ব সংস্কৃতি ও সামাজিক রীতি নীতিমালা নিজ সাংস্কৃতিক নিয়ে জীবন যাত্রা। তাই বান্দরবান পার্বত্য জেলা আদিবাসীদের মধ্যে মারমা আদিবাসীরা সংখ্যা দিক দিয়ে বেশি বলা চলে।
বাংলাদেশের যে কয়েকটি স্থান পর্যটকদের স্থান হিসাবে আকৃষ্ট করে তাদের মধ্যে নি:সন্দেহে বান্দরবান অন্যতম। শহরের কোলাহল, যানজট, যান্ত্রিক নগরী থেকে একটু স্বস্তি পেতে পারেন বান্দরবান এলাকায় বেড়ানো।

বান্দরবান জেলা নাম করণ করা হয়েছি অতীতে এই জেলা ছিল বানর ও জীবন বিচিত্র ভরপুর। এতে বানর ছিলেনঅন্যতম/ভরপুর তা কারনে বান্দরবান নাম করণ করা হয়। বর্তমানে বান্দরবান পার্বত্য জেলা ৭টি উপজেলা নিয়ে গঠিত।
কিভাবে যাবেন:
বান্দরবান পার্বত্য জেলা বন্দর নগরী চট্রগ্রাম থেকে ৯২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শহর। পূরবী-পূর্বানী ও মাইক্রোবাস যোগের যাওয়া যায় জন প্রতি ৭৫ টাকা ভাড়ায়।
চট্রগ্রাম থেকে বান্দরবান ২ ঘন্টা মধ্যে বান্দরবান শহরের গাড়ী/বাস টি শহরের পৌছানো ব্যবস্থা করে দিবেন। এখানে সবুজ বনানী ঘেড়া বান্দরবানের হোটেল মোটেল গুলোর অতিথেয়তায় সত্যিই মুদ্ধ হবেন আপনি। মধ্যম মান থেকে উচচ মানের এ সব অতিথিশালায় নন এসি /এসি রুমে রাত্রি যাপনের সুযোগ থাকছে বিভিন্ন হোটেল গুলোতে।

এখানে রয়েছে পর্যটন মোটেল, শেঘলা পর্যটন, হোটেল রয়েল, জেলা পরিষদ রেষ্ট হাউজ,হোটেল পূরবী, হোটেল পূর্বাণী, হোটেল গ্রীন হিল, হোটেল মাষ্টার , হোটেল থ্রী ষ্টার ,হোঠেল ফর ষ্টার, মিলন চড়ি, সাকুরা হিল সাইড রিসোর্স সহ অন্যতম। এছাড়া রয়েছে বান্দরবানে অন্যতম পর্যটন ষ্পট নীলগিরি যার অবস্থিত রুমা উপজেলা ৩৫৫ নং সেপ্রু মৌজা।
সেখানে প্রকৃতির অপারুপ লীলা ভ’মিতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা এবং যাতায়াত ব্যবস্থা পূর্বের চেয়ে সহজ ও জীপ যোগের আরামদায়ক হওয়ার কারনে এ শহরে একবার ভ্রমনবার বার পাহাড় এর দর্শন পেতে সাধ জাগবে আপনার।

চট্রগ্রাম থেকে বান্দরবান আসার পথে চোকে পড়বে মেঘলা, হলিডে ইন সহ বিভিন্ন ষ্পট গুলো। বান্দরবান শহর থেকে ৩( তিন) কিলোমিটার দূরে মেঘনা অবস্থিত।

যার চার পাশে পাহাড় বিশিষ্ট যার বাধঁ কেন্দ্র করে ঝলন্ত সেতু নিমার্ণ করা হয়েছে । বর্মমানে জেলা প্রশাসন তত্বাবধানের জেলা পরিচালিত হয়ে আসছেন। মেঘনা যার আয়তনে ৩০ একর এলাকায় বিস্থিত অবস্থান।
পাশে রয়েছেন জেলা পরিষদ ভবন ও পর্যটন মোটেল গুলোতে রাত্রি যাপন করতে পারেন আপনিও। নীলগিরি যাওয়া পথে চিম্বুক পর্যটন যেখানে কুয়াশার চাদরে শীত কালে ঢাকা থাকে প্রতিনিয়ত বলা। আকাশের সেই সারি সাি মেঘ খন্ড কার মন না চায় ধরতে। চিম্বুকের পাহাড়ের চুড়া থেকে মেঘের পরশ পাওয়ার অনুভ’তি সত্যি আপনাকে বিমোহিত করবে।
চিম্বুক পাহাড় থেকে কক্সবাজার সহ সু নীল জলরাশি। পাহাড়ের পাহাড়ের ম্রো আদিবাসীদের জীবন ধারা দেখতে পারেন। প্রান্তিক লেক বান্দরবান শহরের পাশে হলুদিয়া নামক স্থানে ২০০ একর জায়গার পাহাড়ের ঘেড়া প্রান্তিক লেক ও ন্যাচারাল পার্ক সহ আর্কষনীয় স্থান রয়েছে সেখানে নীলাচল বান্দরবান শহরের যৌথ খামার এলাকায় টাইগার হিলে অবস্থিত যার শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে।
জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে পরিচালিত এ পর্যটন কেন্দ্রটি অত্যন্ত মেনামুগ্ধকরা ও আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে পরিচিত লাভ করছে দিন দিন। যেখান থেকে বান্দরবান শহর কে দেখতে পারেন।রুমা জলপ্রপাত রুমা উপজেলা থেকে ৬ কিলোমিটার দুুরে সু-উচচ পাহাড় থেকে শঙ্গ নদীতে পতিত হয় সারা বছরে ধরে পানি।
স্বর্ণ মন্দির বান্দরবান শহরের পাশে বালাঘাটা আদুরের অবস্থিত। সেখানে বৌদ্ধ ধর্ম লম্বীদের জন্য স্বর্ণ মন্দির বিখ্যাত হয়ে পড়ে আছেন।
তাই বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রাকৃতিক- পরিবেশ রক্ষা সহ উপযোগী পর্যটন নগরীতে পরিণত করা সম্ভাবনা অন্যতম লক্ষ্য হয়ে দারিয়েছে।
রেডটাইমস বিডি ডটকম/ প্রতিনিধি/ ই এইচ/ আই এইচ
বান্দরবান, ৭ এপ্রিল, রেডটাইমস বিডি ডটকম:

Tuesday, April 6, 2010

বৈসাবিতে স্বাগতম

বৈসাবিতে স্বাগতম



আপনি কি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী বন্ধুর আমন্ত্রণ পেয়েছেন? আসবেন না আদিবাসীদের বৈসাবিতে? সময় ও সুযোগ হলে চলে চলে আসুন রাঙামাটি, বান্দরবান অথবা খাগড়াছড়িতে। বাংলা বছরের শেষ দিনটি সবার জন্য সব আদিবাসীর বাড়ির দুয়ার থাকে খোলা। সারা দিন চলে আপ্যায়ন ও খানাপিনা। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে, গ্রাম থেকে গ্রামে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ, শোনা যাবে ‘হে হে হু হু হু রেং’ (আনন্দ ধ্বনি)।
পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। তবে উৎসবটির নাম সম্প্রদায়ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হলেও সবার উদ্যাপন রীতি ও সময় এক। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, বৃহত্তর বাঙালি সংস্কৃতির সান্নিধ্যে এসে চৈত্র সংক্রান্তির আদলে আদিবাসীরা এ উৎসবকে নিজস্ব আঙ্গিকে ধারণ করেছে।
চৈত্র মাস শুরু হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবুজ পাহাড়ের গাছগাছালিতে বসে একটি পাখি মধুর সুরে ডাকে বি-ঝু, বিঝু, বিঝু। এই পাখির ডাক শুনে আদিবাসীরা উৎসবের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। অবশ্য এ উৎসবকে চাকমারা বিঝু নামে ডাকলেও বিভিন্ন সম্প্রদায় বিভিন্ন নামে অভিহিত করে থাকে। তবে সব সম্প্রদায়ের উৎসব উদ্যাপনের রীতি প্রায় একই। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিনে চলে উৎসব।

বৈচিত্র্যময় তিন দিন
আদিবাসীদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসবের যেমন ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে, তেমনি উৎসবের তিনটি দিনের নামও আলাদা। ত্রিপুরারা উৎসবের প্রথম দিনকে হারি বৈসুক, দ্বিতীয় দিনকে বিসুমা ও তৃতীয় দিনকে বিসিকাতাল, একইভাবে মারমারা সাংগ্রাই আকনিয়াহ্, সাংগ্রাই আক্রাইনিহ্ ও লাছাইংতার এবং চাকমারা ফুলবিঝু, মূলবিঝু ও গোজ্যেপোজ্যে দিন বলে। উৎসব উদ্যাপনের সময় একই হলেও বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় বর্মী পঞ্জিকা অনুসারে দুই দিন পর উৎসব শুরু করে। অবশ্য রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির মারমারা চাকমা এবং ত্রিপুরাদের সঙ্গেই উৎসব উদ্যাপন করে।
উৎসবের প্রথম দিন ঘরবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। এ দিন পাহাড়ি ছড়া, ঝরনা বা নদীতে ফুল ভাসিয়ে দিয়ে ‘মা গঙ্গা’কে পূজা করে গোসল করা হয়। এ ছাড়াও পাড়ার যুবক-যুবতীরা নদী থেকে পানি তুলে প্রবীণদের গোসল করিয়ে আশীর্বাদ নেন। অনেক এলাকায় দল বেঁধে বৌদ্ধ মূর্তিগুলোকেও গোসল করানো হয়। এর পর সারা দিন প্রস্তুতি চলে পরবর্তী দিন বা উৎসবের মূল দিনের খানাপিনা আয়োজনের।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রত্যেক বাড়িতে নানা মুখরোচক খাবারের আয়োজন করা হয়। তবে ২০ থেকে ২৫ বা তারও বেশি আনাজপাতি দিয়ে তৈরি ‘পাজন’ এবং পানীয় পরিবেশন করা হয়। নানা বয়সী লোকজন সারা দিন দল বেঁধে ‘হে হু হু হু’ রেং (আনন্দ ধ্বনি) দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। চাকমাদের একটা কথা প্রচলন আছে, যে ব্যক্তি কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে বিঝু খাবে না সে পরবর্তী জনমে শূকর হয়ে জন্মাবে।
তৃতীয় দিনে দল বেধেঁ মন্দিরে গিয়ে নতুন বছরের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানাদি পালন করা হয়। এ দিন অনেকে পাড়ার বয়স্ক মুরব্বিদের বাড়িতে ডেকে ভালো কিছু খাবার দেন। আর অনেকে উৎসবের তিন দিন মন্দির, বাড়ির আঙিনা, নদীর ঘাট, সবুজ গাছের নিচে এবং গোয়াল ঘরে বিভিন্ন দেব-দেবীর উদ্দেশে মোমবাতি জ্বালান।
তবে উৎসবে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাদের কিছু বিশেষ আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান থাকে। এর মধ্যে চাকমাদের ‘বিঝু নৃত্য’, ত্রিপুরাদের ‘গরাইয়া নৃত্য’ ও মারমাদের ‘পানি খেলা’ রয়েছে। তবে একমাত্র মারমাদের পানি খেলা ছাড়া অন্যান্য সম্প্রদায় আর তেমনভাবে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে না। অনেক সময় কিছু এলাকায় বিশেষভাবে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার এবং পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়ও বর্ষবিদায় এবং বরণ উৎসব পালন করে থাকে। তারা এ উৎসবকে ‘মাহা সাংগ্রেং’ বলে অভিহিত করে। এ ছাড়াও ভারতের আসাম, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওসসহ বেশ কয়েকটি দেশে একই সময় অর্থাৎ ইংরেজি মাস এপ্রিলের ১৩-১৪ তারিখে উৎসবটি পালন করা হয় বলে বিভিন্ন গবেষকের লেখায় জানা যায়। এ উৎসব আসামে ‘বিহু’, মিয়ানমারে ‘ছিংগায়ান’ এবং থাইল্যান্ডে ‘সংক্রান’ নামে পরিচিত। কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য বাদ দিলে উৎসবটি সব দেশে পালনের রীতি একই বলে জানা যায়।
বৈসাবিকে উপলক্ষ করে এ সময়টা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘুরে আসতে পারেন। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কটা দিন ভালোই লাগবে।

হরি কিশোর চাকমা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ০৬, ২০১০